২৫তম জাতীয় চারুকলা প্রদর্শনী শুরু

বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে ও চারুকলা বিভাগের ব্যবস্থাপনায় ২৮ মে (রবিবার) থেকে সারা দেশের চারুশিল্পীদের অংশগ্রহণে শুরু হলো ২৫তম জাতীয় চারুকলা প্রদর্শনী। এদিন সন্ধ্যা ৬টায় একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে প্রদর্শনীর উদ্বোধন করা হয়।

এ প্রদর্শনী চলবে আগামী ১৫ জুলাই পর্যন্ত। প্রদর্শনীতে প্রতিটি মাধ্যমে একটি করে ১১টি শ্রেষ্ঠ পুরস্কারসহ ২০টি পুরস্কার দেওয়া হয়। জাতীয় চারুকলা প্রদর্শনী উদ্বোধন করেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন একাডেমির চারুকলা বিভাগের পরিচালক সৈয়দা মাহবুবা করিম।

২৫তম জাতীয় চারুকলা প্রদর্শনী ২০২৩ নীতিমালা অনুযায়ী, ২১ বছরের ঊর্ধ্বে সারা দেশ থেকে ১ হাজার ১৩৮ শিল্পীর ২ হাজার ৯১৪টি শিল্পকর্মের আবেদন জমা পড়ে। পর্যালোচনা শেষে নির্বাচকমণ্ডলী বিভিন্ন বিভাগ থেকে ২৬১ জন শিল্পীর ৩০১টি শিল্পকর্ম নির্বাচন করে ৬ এপ্রিল ফলাফল ঘোষণা করেন। নির্বাচিত এসব শিল্পকর্মের মধ্যে রয়েছে চিত্রকলা ৯৬টি, ছাপচিত্র ৩৯টি, আলোকচিত্র ২২টি, ভাস্কর্য ৬০টি, প্রাচ্যকলা ৪টি, মৃৎশিল্প ৬টি, কারুশিল্প ১০টি, গ্রাফিক ডিজাইন ৭টি, স্থাপনা শিল্প ৩৮টি, নিউ মিডিয়া আর্ট ১১টি, পারফরম্যান্স আর্ট ৩টি। শিল্পকর্ম নির্বাচন কমিটির সদস্যরা হলেন শিল্পী আহমেদ সামসুদ্দোহা, শিল্পী সাইদুল হক জুইস, শিল্পী কনকচাঁপা চাকমা, শিল্পী মোকলেসুর রহমান, শিল্পী মাহবুব জামাল শামীম ও আলোকচিত্রী মফিজুল ইসলাম।

২৫তম জাতীয় চারুকলা প্রদর্শনীতে প্রতিটি মাধ্যমে একটি করে ১১টি শ্রেষ্ঠ পুরস্কার দেওয়া হয়। আর সব মাধ্যম মিলিয়ে ‘বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি পুরস্কার’ শ্রেষ্ঠ পুরস্কার দেওয়া হয়।

উল্লখ্য, মাধ্যমভিত্তিক প্রতিটি শ্রেষ্ঠ পুরস্কারের জন্য এক লাখ টাকা এবং সব মাধ্যমে শ্রেষ্ঠ পুরস্কারের জন্য দুই লাখ টাকা এবং গোল্ড মেডেল, ক্রেস্ট ও সনদ দেওয়া হয়। এ ছাড়া পাঁচটি সম্মানসূচক পুরস্কার দেওয়া হয়, যার প্রতিটির মূল্যমান ৫০ হাজার টাকা এবং সঙ্গে স্পনসরশিপ। 

পুরস্কারপ্রাপ্ত শিল্পীরা হলেন—জেসমিন আকতার (গ্রান্ড পুরস্কার), জয়তু চাকমা (চিত্রকলা), সৈয়দ তারেক রহমান (ভাস্কর্য), সজীব কুমার দে (স্থাপনাশিল্প), নুসরাত জাহান (ছাপচিত্র), জিহাদ রাব্বি (গ্রাফিক ডিজাইন), ফারহানা ফেরদৌসী (কারুকলা), অসীম হালদার (মৃৎশিল্প), মো. আসাদুর জামান আসলাম মোল্লা (আলোকচিত্র), সুজন মাহাবুব (গ্রুপ পারফরম্যান্স আর্ট), আব্দুস সাত্তার (সম্মানসূচক পুরস্কার), নাঈমা আখতার (সম্মানসূচক পুরস্কার), রাউফুন নাহার রিতু (সম্মানসূচক পুরস্কার), মো. তরিকুল ইসলাম (সম্মানসূচক পুরস্কার), আশরাফুল হাসান (সম্মানসূচক পুরস্কার), ফারেহা জেবা (বেঙ্গল ফাউন্ডেশন পুরস্কার), অনুকুল চন্দ্র মজুমদার (শিল্পী কালিদাস কর্মকার পুরস্কার), মোহাম্মদ হাসানুর রহমান (শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক ফাউন্ডেশন পুরস্কার), তানভীর পারভেজ (ভাষাশহীদ গাজীউল হক পুরস্কার), গোবিন্দ পাল (শিল্পী কাজী আনোয়ার হোসেন পুরস্কার)।

শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালার ১, ২, ৩, ৪, ৫, ৬ ও ৭ নম্বর গ্যালারি প্রতিদিন বেলা ১১টা থেকে রাত ৮টা এবং শুক্রবার বিকাল ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।

অনুষ্ঠানে একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকীর সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি সচিব খলিল আহমদ, বরেণ্য শিল্পী হাশেম খান ও মনিরুল ইসলাম এবং একাডেমির সচিব সালাহউদ্দিন আহাম্মদ।

সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেন, জাতির পিতার জুলিও কুরি পুরস্কারপ্রাপ্তির আজ ৫০ বছর হলো। শিল্পকলা একাডেমির পক্ষ থেকে সেখানেও অসাধারণ একটি পরিবেশনা উপস্থাপন করা হয়। একাডেমির মহাপরিচালকের নেতৃত্বে দক্ষভাবে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি এগিয়ে চলেছে। জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে এই সংস্কৃতি ও চিত্রশিল্পীরাই রুখে দাঁড়াবে।