অপেক্ষার অবসান, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের যুগে ঢাকা

অপেক্ষার অবসান ঘটলো। রাজধানীর সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থায় উন্মোচিত হলো নতুন দিগন্ত। সরকারের অন্যতম মেগা প্রকল্প ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) বিকাল ৩টা ৪২ মিনিটে কাওলা প্রান্তরে এই এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে উদ্বোধন ফলক উন্মোচন করেন তিনি। এরপর মোনাজাতে অংশ নেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কাওলা প্রান্তের টোল প্লাজায় গাড়ি প্রতি ৮০ টাকা করে টোল দিয়ে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের ফলক উন্মোচন মঞ্চে যান। সেখানে রাখা বোতাম চেপে উড়াল সড়কটির উদ্বোধন করেন তিনি। 

উদ্বোধন শেষে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নানা দিক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ব্রিফ করা হয়। এরপর গাড়িবহর নিয়ে প্রথম যাত্রী হিসেবে দেশের প্রথম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে দিয়ে পুরনো বাণিজ্যমেলার মাঠে সুধী সমাবেশস্থলের উদ্দেশে রওনা হন প্রধানমন্ত্রী।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধুর ছোট মেয়ে শেখ রেহানা, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সেতু সচিব মনজুর হোসেন এবং প্রকল্প পরিচালক এ এইচ এম এস আকতার প্রমুখ। 

ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে প্রধানমন্ত্রীর গাড়িবহর

পরে পুরনো বাণিজ্য মেলার মাঠে সুধী সমাবেশস্থলেও প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধনী ফলক উন্মোচন করেন এবং দোয়া ও মোনাজাতে অংশ নেন। এ সময় তার সঙ্গে বোন শেখ রেহানা, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম ও শেখ ফজলে নুর তাপস, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি রওশন আরা মান্নান উপস্থিত ছিলেন। বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের পেশ ইমাম মাওলানা হাফেজ মুহিবুল্লাহিল বাকী মোনাজাত পরিচালনা করেন। 

পুরাতন বাণিজ্য মেলার মাঠে সমাবেশস্থলে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের ফলক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

রবিবার (৩ সেপ্টেম্বর) ভোর ৬টা থেকে যানচলাচল শুরু হবে। বিমানবন্দর থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত মাত্র ১০ থেকে ১৫ মিনিটে যাতায়াত করা যাবে এই উড়াল সড়ক পথে। আশা করা হচ্ছে, নগর যোগাযোগ ব্যবস্থায় এটি দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ লাঘব করবে, স্বপ্ন পূরণ হবে দুর্ভোগহীন রাজপথের।

হযরত শাহজালাল বিমানবন্দর এলাকার কাওলা থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালী পর্যন্ত ১৯ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার দূরত্বের এই এক্সপ্রেসওয়ের আপাতত প্রথম অংশ কাওলা থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত যানচলাচল করবে।

ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের ফলক উন্মোচনের পর মোনাজাতে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

উদ্বোধন উপলক্ষে বিমানবন্দর কাওলা এলাকায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগমনকে ঘিরে নেওয়া হয় ব্যাপক প্রস্তুতি। উড়াল সড়কে ওড়ানো হয় রঙিন পতাকা। নিচের সড়কের পাশে লাগানো হয় বিভিন্ন ব্যানার। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ছিলেন সতর্ক অবস্থানে। 

এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েকে ঘিরে উৎসাহ উদ্দীপনা কাজ করছে স্থানীয় বাসিন্দা ও বিভিন্ন যানচালকদের মাঝে। কয়েকজনের কাছে জানতে চাইলে তারা জানান, রাজধানীতে যানজটের যে চিরচেনা রূপ তা ধীরে ধীরে বদলে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ সরকারের প্রচেষ্টায়। এই এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে পুরোপুরি চালু হলে উত্তর দক্ষিণের দূরত্ব ঘুছিয়ে এক সহজ যোগসূত্র তৈরি হবে বলে আশা তাদের।

ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে (ছবি: ফোকাস বাংলা)