অধিকারের আদিলুর-এলানের রায়ে সন্তুষ্ট নয় রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষ

হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীদের সরিয়ে দেওয়ার অভিযানে মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানোর অভিযোগে তথ্য প্রযুক্তি আইনে করা মামলায় বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের সম্পাদক আদিলুর রহমান খান শুভ্র ও সংগঠনটির পরিচালক এ এস এম নাসির উদ্দিন এলানের দুই বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। একইসঙ্গে ১০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে ১ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তবে এ রায়ে রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষ কেউ সন্তুষ্ট নয়।

১০ বছর পর ঢাকার সাইবার টাইব্যুনালের বিচারক এ এম জুলফিকার হায়াত এ রায় ঘোষণা করেন।

এ রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে সাইবার ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম শামীম বলেন, ‘আমরা রায়ে সন্তুষ্ট না। এই মামলার রায়ে বেশি সাজা প্রত্যাশা করেছিলাম। রায় পর্যালোচনা শেষে সিদ্ধান্ত নেবো।’

রায়ের প্রতিক্রিয়ায় আসামিপক্ষের আইনজীবী রুহুল আমিন ভুইয়া বলেন, ‘এ মামলার রায়ে আমরা সংক্ষুব্ধ। আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করবো। আশা করি, সেখানে তারা খালাস পাবেন।’

উল্লেখ্য, ২০১৩ সালে ৫ মে মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজত ইসলাম সমাবেশ করে। পরে সমাবেশস্থলে রাত্রিযাপনের ঘোষণা দেন সংগঠনের নেতারা। তাদের সেখান থেকে সরিয়ে দিতে যৌথ অভিযান চালায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ওই অভিযানে ৬১ জন নিহত হয় বলে দাবি করেছিল অধিকার। তবে সরকারের ভাষ্য, সেই রাতের অভিযানে কেউ মারা যায়নি। শাপলা চত্বরে অভিযানের পর ২০১৩ সালের ১০ আগস্ট গুলশান থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছিলেন ডিবির তৎকালীন উপ-পরিদর্শক (এসআই) আশরাফুল ইসলাম।

তদন্ত শেষে ওই বছরের ৪ সেপ্টেম্বর ঢাকার আদালতে আদিলুর ও এলানের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়। এতে ৩২ জনকে সাক্ষী করা হয়। ওই বছরের ১১ সেপ্টেম্বর মামলাটি বিচারের জন্য অভিযোগ আমলে নেন ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনাল। এরপর ২০১৪ সালে দুই আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত।

মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়, আসামি আদিলুর ও এলান ৬১ জনের মৃত্যুর ‘বানোয়াট, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও মিথ্যা’ তথ্য দিয়ে প্রতিবেদন তৈরি ও প্রচার করে জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি করে আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নের অপচেষ্টা চালায়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সরকার ও রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি দেশে-বিদেশে চরমভাবে ক্ষুণ্ন করে।

আরও পড়ুন:

হেফাজতকাণ্ড: অধিকারের আদিলুর-এলানের ২ বছর কারাদণ্ড