রাজধানীতে রাজনৈতিক সমাবেশ

আতঙ্কে দুর্ভোগে জনজীবন

রাজধানীতে আজ (শনিবার) একই দিনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপিসহ আরও কয়েকটি দলের পূর্বঘোষিত সমাবেশ ও রাজনৈতিক কর্মসূচি রয়েছে। বিএনপি সমাবেশ করবে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আর ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে।  জামায়েত ইসলামী সমাবেশ করার অনুমতি না পেলেও মতিঝিল শাপলা চত্বর এলাকায় সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে। এছাড়া একই সময়ে আরও কয়েকটি দলের রাজনৈতিক কর্মসূচি রয়েছে রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে।

রাজনৈতিক ওই সমাবেশগুলো ঘিরে কোনোরকম বিশৃঙ্খলা যেন না হয় সে জন্য বৃ্হস্পতিবার রাত থেকেই রাজধানীতে বিপুল পরিমাণ পুলিশ, র‍্যাব, আনসার, গোয়েন্দা সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে। এমন নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যে রাতে কাকরাইলে ককটেল বিস্ফোরণের মতো ঘটনা ঘটেছে।

শনিবার (২৮ অক্টোবর) সরকারি প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও অনেক বেসরকারি প্রতিষ্ঠান খোলা রয়েছে। বিশেষ কারণে যারা ঘর থেকে বের হচ্ছেন সমাবেশের কারণে তাদের পড়তে হচ্ছে ভোগান্তিতে, দুর্ভোগে। সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, রাজনৈতিক সমাবেশগুলো ঘিরে আজ সকাল থেকে ঢাকার বিভিন্ন ব্যস্ততম সড়ক ফাঁকা রয়েছে। বিশেষ করে পল্টন এলাকা, গুলিস্তান, বায়তুল মোকাররমের দিকে এবং মতিঝিলের দিকে গণপরিবহনের চলাচল একেবারেই কম। মতিঝিলের চাপলা চত্ত্বর এলাকায় সকাল থেকে কোনও গাড়ি দেখা যায়নি সমাবেশকেন্দ্রিক লোকজন ছাড়া। সাধারণ যাত্রী নেই বলে চলে। সমাবেশের জন্য কিছু সড়ক বন্ধ থাকায় ওসব এলাকায় চলাচল করা লোকজনের অনেকে পায়ে হেঁটে গন্তব্যে যাচ্ছেন। কেউ কেউ অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে রিকশা, সিএনজি, মোটরবাইকে চড়ছেন-এমন দৃশ্য দেখা গেছে।

পল্টন-মতিঝিল এলাকার বেশিরভাগ রাস্তাই এমন ফাঁকা

শাহীন ইসলাম পেশায় একজন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার। অফিসের কাজে সকালেই বাসা থেকে বের হন। বাসে চড়ে এয়ারপোর্ট থেকে কমলাপুর যাচ্ছিলেন, রামপুর এসে তাকে বহন করা বাসটি আর সামনে যাবে বলে জানিয়ে দেয়। তিনি বলেন, ‘এয়ারপোর্ট থেকে রামপুরা পর্যন্ত অল্প সময়ে চলে আসছি। পৌঁছে তো বিপদে পড়লাম। গাড়ি আর যাবে না। গাড়ি আটকিয়ে দিচ্ছে ট্রাফিক পুলিশ। পরে গাড়ি থেকে নেমে ২০ টাকার ভাড়া ১৮০ টাকা দিয়ে সিএনজি করে কমলাপুরে আসলাম।’

রাজধানীর সেগুনবাগিচা এলাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন জীবন আহমেদ। বাড্ডা থেকে প্রতিদিন সকালে বাসে চড়েই কাকরাইল মোড় আসেন। পরে বাকি পথ হেঁটে কিংবা রিকশায় অফিসে যান। সমাবেশকে ঘিরে গতকাল থেকেই তার মনে আতঙ্ক কাজ করছিল, কী হবে, গাড়ি না চললে কীভাবে অফিসে যাবেন। আর সেই আতঙ্ক নিয়েই অফিসের উদ্দেশ্য রওনা দেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের তো পেট বাঁচাতে হবে। মনের মধ্যে একটু ভয় কাজ করছিল আজ অফিসে যাবো কিনা। রাস্তায় তো গাড়ি নেই। মোটরসাইকেল ভাড়া নিয়ে এসেছি। কিছু পথ হেটেঁছি।’

এ প্রসঙ্গে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) রমনা ট্রাফিক বিভাগের উপ-কমিশনার মো. জয়নুল আবেদীন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘নয়াপল্টন এবং বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেট-দুটি এলাকায় একই সময়ে রাজনৈতিক সমাবেশ। এ কারণে এসব এলাকায় প্রচুর লোকজন জমায়েত হয়েছে। তবে এসব এলাকায় গাড়ির সংখ্যা আজ অনেক কম। ট্রাফিক বিভাগের পক্ষ থেকে যান চলাচলের কোনও নিষেধাজ্ঞা নেই।’