ফিলিস্তিনে হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন

‘পশ্চিমা রাষ্ট্রের মদদে ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি যুদ্ধাপরাধ, নারী ও শিশু হত্যা’র প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করেছে ‘বাংলাদেশ স্ট্যান্ডস উইথ প্যালেস্টাইন’। বুধবার (৬ ডিসেম্বর) কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন কর্মসূচি পালন করে সংগঠনটি। কর্মসূচিতে লেখক, শিক্ষক, সাংবাদিক, শিল্পী, রাজনৈতিক সংগঠক, নারী অধিকারকর্মী, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাসহ শহীদ মিনারে উপস্থিত নারী ও শিশুরা অংশগ্রহণ করেন। 

সমাবেশে অংশগ্রহণকারীরা বলেন, ‘আমরা গাজায় গণহত্যার প্রতিবাদে আজ ফিলিস্তিনি নারী ও শিশুদের সঙ্গে সংহতি জানাতে দাঁড়িয়েছি। ফিলিস্তিনের মানুষের অসীম সাহস দেখে সারা বিশ্ব তাদের শ্রদ্ধা জানাচ্ছে, আমরাও তার অংশীদার।’

কর্মসূচিতে উপস্থিত গার্মেন্টর্স শ্রমিক ঐক্য ফোরামের সভাপ্রধান মোশরেফা মিশু বলেন, ‘ফিলিস্তিনের জনগণের সংগ্রাম দীর্ঘ কিন্তু তা কোনও দিন বৃথা যাবে না, বাংলাদেশের বিবেকবান জনগণ তাদের স্বাধীনতা-মুক্তির সংগ্রামে সবসময়ে সোচ্চার ছিল এবং থাকবে। একই সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং অন্যান্য পশ্চিমা রাষ্ট্র যারা ইসরায়েলি যুদ্ধাপরাধকে শুধু সমর্থনই না, প্রত্যক্ষভাবে সহযোগিতা করছে; আমরা তাদের ধিক্কার জানাই এবং বিচার চাই।’

লেখক ও নৃবিজ্ঞানী রেহনুমা আহমেদ বলেন, ‘ফিলিস্তিনের সঙ্গে আমরা নাড়ির টান অনুভব করি। কারণ বাংলাদেশেও গণহত্যা হয়েছিল। সেই গণহত্যার বিরুদ্ধে লড়াই করে আমরা দেশ স্বাধীন করেছি। ফিলিস্তিন এখনও পরাধীন কিন্তু যেভাবে সমগ্র বিশ্বের মানুষ আজ গণহত্যার প্রতিবাদ-প্রতিরোধে নেমেছে, আমাদের বিশ্বাস এবার একটা ফয়সালা হবেই হবে।’ ফিলিস্তিন স্বাধীন হবে এবং যুদ্ধাপরাধের জন্য শুধু ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুই নয়, ইসরায়েলের গণহত্যার মদদদাতা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, মার্কিন যুক্তরাজ্য, এবং ইইউর বেশির ভাগ দেশের নেতাদেরও বিচার হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

এসময় তিনি বলেন, ‘গত সপ্তাহে বিশ্বের ১ নম্বর যুদ্ধাপরাধী যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জার মারা গেছেন, তার আর বিচার হলো না। কিন্তু আমরা হতাশ নই। ইসরায়েলের বিরুদ্ধে জাতিনিধনের অভিযোগ, গণহত্যার অভিযোগ বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সরবে উঠছে, এমনটা এর আগে ঘটেনি, আর তাই আমরা আশাবাদী। তবে ফিলিস্তিনের নিরস্ত্র মানুষের বিশেষ করে নারী ও শিশুদের যেই দাম চুকোতে হচ্ছে, সেটা দেখলে আমাদের কলিজা ছিঁড়ে যায়।’

তিনি আরও বলেন, ‘গণতন্ত্রকামী মানুষ হিসেবে আমরা একইসঙ্গে লজ্জা বোধ করি যে, আমাদের সরকার ইসরায়েলের মতো হীন দেশ থেকে থার্ড পার্টির মাধ্যমে নজরদারি ও আড়িপাতার যন্ত্র কিনেছে, আর এদেশের সিকিউরিটি ফোর্সেসের কজন অফিসার ইসরায়েলিদের কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়েছে।’