প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক আবু বকর সিদ্দিক আর নেই

কবি, গল্পকার ও রাজনীতিবিদ বিদিশা সিদ্দিকের বাবা প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক আবু বকর সিদ্দিক মারা গেছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। বৃহস্পতিবার (২৮ ডিসেম্বর) ভোর পৌনে ৬টার দিকে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তার মৃত্যুর বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানিয়েছেন বিদিশা।

এর আগে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় আবু বকর সিদ্দিককে খুলনা সিটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বুধবার (২৭ সেম্বর) রাতে তাকে হাসপাতালের আইসিইউতে (নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে) স্থানান্তর করা হয়। ৯০ বছর বয়সী কবি আবু বকর সিদ্দিক দীর্ঘদিন ধরেই বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছেন।

আবুবকর সিদ্দিক একজন বাংলাদেশি কবি, কথাসাহিত্যিক, ছড়াকার, ঔপন্যাসিক, ছটগল্পকার ও সমালোচক। সাহিত্যে অবদানের জন্য আবুবকর সিদ্দিক ভূষিত হয়েছেন বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার (১৯৮৮), বাংলাদেশ কথাশিল্পী সংসদ পুরস্কার, বঙ্গভাষা সংস্কৃতি প্রচার সমিতি পুরস্কার (কলকাতা) আরও অনেক পুরস্কারে।

তার প্রকাশিত বইয়ের মধ্যে রয়েছে ২০টি অধিক কাব্যগ্রন্থ, চারটি উপন্যাস, ১৫টি গল্পগ্রন্থ ও একটি ছড়া গ্রন্থ।

তিনি ১৯৩৪ সালের ১৯ আগস্ট মামারবাড়ি বাগেরহাট সদরের গোটাপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তারা বাবা মতিয়র রহমান পাটোয়ারী ছিলেন সরকারি চাকুরে। মা মতিবিবি গৃহিণী। বাবার চাকরি সূত্রে ১৯৩৫ সাল থেকে তিনি হুগলি শহরে এবং ১৯৪৩ সাল থেকে বর্ধমানে বসবাস করেন। ১৯৪৬ সালে পঞ্চম শ্রেণিতে থাকাকালীন তার প্রথম কবিতা আবদুস সাত্তার সম্পাদিত বর্ধমানের কথা পত্রিকায় ছাপা হয়।

তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগে থেকে ১৯৫৮ সালে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করে শিক্ষকতাকেই পেশা হিসেবে বেছে নেন। তিনি পর্যায়ক্রমে চাখার ফজলুল হক কলেজ, দৌলতপুর বিএল কলেজ, কুষ্টিয়া কলেজ, বাগেরহাট পিসি কলেজ এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেন।

১৯৯৪ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন। এরপর কুইন্স ইউনিভার্সিটি ও ঢাকার নটর ডেম কলেজে অধ্যাপনা করেন।

তার প্রকাশিত কবিতা ধবল দুধের স্বরগ্রাম (১৯৬৯), বিনিদ্র কালের ভেলা (১৯৭৬), হে লোকসভ্যতা (১৯৮৪), মানুষ তোমার বিক্ষত দিন (১৯৮৬)সহ ১৮টি কাব্যগ্রন্থ আছে। আছে হট্টমালা (২০০১) নামে একটি ছড়া গ্রন্থ।