বিশ্ব ক্যানসার দিবস

তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন জরুরি

সারা বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে রবিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশেও পালিত হচ্ছে বিশ্ব ক্যানসার দিবস। এবারের ক্যানসার দিবসের প্রতিপাদ্য ‘ক্লোজ দ্য কেয়ার গ্যাপ’। ২০২২, ২০২৩ ও ২০২৪—এই তিন বছরের জন্য ক্যানসার সচেতনতা প্রসারে এই ভাবনাকেই বেছে নিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

বিশ্ব ক্যানসার দিবস পালন শুরু হয়েছিল ২০০০ সালে। ফ্রান্সের প্যারিসে ‘ওয়ার্ল্ড সামিট অ্যাগেইনস্ট ক্যানসার’-এর মঞ্চ থেকে এ প্রচেষ্টা শুরু হয়।

জানা গেছে, তামাক ক্যানসার সৃষ্টির অন্যতম প্রধান কারণ। তামাকের ধোঁয়ায় প্রায় সাত হাজার রাসায়নিক পদার্থ রয়েছে, যার মধ্যে ৭০টি ক্যানসার সৃষ্টিকারী। এগুলো ফুসফুস, শ্বাসতন্ত্র ও মুখের ক্যানসারসহ অন্তত ১২ ধরনের ক্যানসার সৃষ্টি করে। পরোক্ষ ধূমপানেও ক্যানসার হতে পারে।

দেশের বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান মনে করে, কেবল শক্তিশালী তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন গ্রহণ ও বাস্তবায়নের মাধ্যমেই তামাক ব্যবহারজনিত ক্যানসার প্রতিরোধ করা সম্ভব।

বিশ্ব ক্যানসার দিবস উপলক্ষে দেওয়া এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান প্রজ্ঞার (প্রগতির জন্য জ্ঞান) নির্বাহী পরিচালক এ বি এম জুবায়ের বলেছেন, খসড়া তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন দ্রুত চূড়ান্ত করতে হবে। এটি যত বিলম্বিত হবে, ক্যানসারসহ তামাক ব্যবহারজনিত বিভিন্ন রোগে মানুষের মৃত্যু ততই বাড়তে থাকবে।

প্রজ্ঞা জানিয়েছে, দ্য ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সি ফর রিসার্চ অন ক্যানসারের (আইএআরসি) হিসাব অনুযায়ী, ২০২২ সালেই বিশ্বে দুই কোটি নতুন ক্যানসার রোগী শনাক্ত হয়েছে এবং ৯৭ লাখ মানুষ মারা গেছে, যার মধ্যে ফুসফুস ক্যানসারে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ধূমপানকে ফুসফুস ক্যানসারের প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। সংস্থাটির মতে, তামাক ব্যবহার পরিহারসহ অন্য কিছু পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে ক্যানসারে মৃত্যুঝুঁকি ৩০ শতাংশ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত প্রতিরোধ করা সম্ভব।

আইএআরসির তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে ২০২২ সালে ক্যানসারে মৃত্যু হয়েছে ১ লাখ ১৬ হাজার ৫৯৮ জনের। তামাক ব্যবহারের উচ্চ প্রবণতা এই মৃত্যু পরিস্থিতিকে আরও উদ্বেগজনক করে তুলছে।

গ্লোবাল অ্যাডাল্ট টোব্যাকো সার্ভে ২০১৭ অনুযায়ী, বাংলাদেশে ৩ কোটি ৭৮ লাখ (৩৫ দশমিক ৩ শতাংশ) প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ তামাক ব্যবহার করেন। কর্মক্ষেত্রে পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হয় ৮১ লাখ মানুষ। গণপরিবহনে যাতায়াতের সময় পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হন আড়াই কোটি প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ। তামাক ব্যবহারজনিত অসুখে দেশে বছরে ১ লাখ ৬১ হাজার মানুষ মারা যায়।