হাতির ওপর নির্যাতন বন্ধে জয়া আহসান ও পিএডব্লিউ’র রিট

বন্দি হাতির সার্কাস, হাতির পিঠে ভ্রমণ, বিয়েবাড়িতে শোভাবর্ধন, বাণিজ্যিক ও রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানের র‌্যালিতে বিজ্ঞাপনের মতো বা বিনোদন কাজে হাতি ব্যবহার করা এবং এই ব্যবহারের জন্য হাতিকে বাধ্য করতে নির্যাতনের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ বন্ধ করতে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়েছে।

রবিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) অভিনেত্রী জয়া আহসান এবং প্রাণী অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন পিপল ফর অ্যানিম্যাল ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন (পিএডব্লিউ) এই রিট দায়ের করে। আবেদনকারীদের পক্ষে প্রতিনিধিত্ব করছেন পিপল ফর অ্যানিম্যাল ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারপারসন স্থপতি রাকিবুল হক এমিল। রিটকারীদের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সাকিব মাহবুব জনস্বার্থে এই রিটটি আদালতে শুনানির জন্য দাখিল করেন।

রিটকারীরা জানিয়েছেন, বাংলাদেশের ক্যাপ্টিভ হাতিকে অমানুষিক নির্যাতনের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ বন্ধে, তাদের দিয়ে বিনোদন কাজে ব্যবহার এবং হাতি দিয়ে চাঁদাবাজি বন্ধের দাবিতে সংগঠনটি বেশ কয়েক বছর ধরে নানা ধরনের কর্মসূচি দিয়ে আসছে। এর মাঝে দুবার বনভবন ঘেরাও করে প্রাণী অধিকারকর্মীরা। এ সময় বন বিভাগের পক্ষ থেকে নানা ধরনের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও পরবর্তী সময়ে তাদের কোনও ফলপ্রসূ ভূমিকা লক্ষ করা যায়নি। নির্যাতিত হাতিদের বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে দফায় দফায় চিঠি দেওয়া হলেও কোন উপযুক্ত জবাব আসেনি বিভাগটির পক্ষ থেকে।

তারা আরও জানান, নির্যাতনের শিকার বাধ্য হাতিরা প্রায়শই নিজের ভিতরের ক্ষোভ ও যন্ত্রণার বহিঃপ্রকাশ ঘটায়। ফলশ্রুতিতে লোকালয়ে তাণ্ডব ঘটিয়ে বিভিন্ন সময় অনেকেরই প্রাণহানি ঘটিয়েছে। কিছু অসৎ ব্যক্তির অনৈতিক ব্যবসা ও বেআইনি চাঁদা বাণিজ্যকে প্রশ্রয় দিতে গিয়ে জনগণের জানমালের এই ক্ষতি গ্রহণযোগ্য নয়।

তারা বলেন, আইইউসিএন’র লাল তালিকাভুক্ত প্রাণী হিসেবে এশিয়ান হাতি বর্তমানে মহাবিপদাপন্ন হওয়া সত্ত্বেও এই হাতিকে বনবিভাগ কর্তৃক ব্যক্তিমালিকানায় সার্কাসের কাজে ব্যবহারের জন্য লাইসেন্স দেওয়ার বিষয়টি বর্তমানে প্রশ্নবিদ্ধ। এই সার্কাস ও চাঁদাবাজিতে বাধ্য করতে শৈশব থেকেই মা হাতির কাছ থেকে শাবককে ছাড়িয়ে নিয়ে নির্মম অত্যাচারের মধ্য দিয়ে প্রশিক্ষিত করা হয়। হাতির মাহুত চাঁদাবাজির সময় একটি ধাতব হুক হাতে নিয়ে বসে থাকে। যা দিয়ে সে হাতির শরীরের বিভিন্ন দুর্বল স্থানে আঘাত করে চাঁদাবাজিসহ মানুষের ওপর চড়াও হতে বাধ্য করে। এই প্রক্রিয়াটি বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন, ২০১২ এবং প্রাণিকল্যাণ আইন, ২০১৯ পরিপন্থি।