রমজানে ডিম-মুরগির দাম কমাতে ‘চাঁদাবাজি’ বন্ধের দাবি

রমজান মাসে ডিম ও মুরগির দাম স্বাভাবিক রাখতে পরিবহনের সময় রাস্তায় পুলিশের হয়রানি ও চাঁদাবাজি বন্ধের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন।

মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান সংগঠনের সভাপতি মো. সুমন হাওলাদার।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মো. সুমন হাওলাদার বলেন, ‘করপোরেট গ্রুপগুলো ডিম-মুরগি, পোল্ট্রি ফিড, মুরগির বাচ্চা পরিবহনে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) থেকে গাড়ির অনুমোদন পায়। কিন্তু প্রান্তিক খামারিদের অনুমোদন দেওয়া হয় না। এ জন্য ট্রাফিক বিভাগ, হাইওয়ে পুলিশ, থানার চেকপোস্ট, সারা দেশের কিছু অসাধু পুলিশ কর্মকর্তাকে মাসিক চাঁদা দিয়ে চলতে হয়। স্থানীয় চাঁদাবাজদের কবলে পড়তে হয় আমাদের। মাসিক চাঁদা দিয়েও গাড়িগুলো দিনের বেলা চলাচল করতে পারে না। এতে পরিবহনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়। আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয় প্রান্তিক খামারিদের। এতে ডিম ও মুরগি পরিবহন খরচ বাড়ায় দামও বেড়ে যায়।’

রমজানের আগে ডিম ও মুরগির দাম বাড়ার পেছনে কারণ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘করপোরেট সিন্ডিকেটের যোগসাজসে প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের পক্ষ থেকে প্রান্তিক খামারিদের কাছে মুরগির বাচ্চা আমদানি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। প্রান্তিক খামারিদের মতামত না নিয়ে শুধু করপোরেট সিন্ডিকেটকে সুবিধা দিয়ে ২৮ থেকে ৩০ টাকা উৎপাদন খরচের মুরগীর বাচ্চার দাম নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে ৪৯ থেকে ৫২ টাকা। এ জন্য ডিম ও মুরগির দাম বাড়ছে।’

তিনি অভিযোগ করেন, ‘মুরগির বাচ্চার উৎপাদন কমিয়ে দিয়ে করপোরেট গ্রুপগুলো তাদের চাহিদা মতো নিজস্ব খামারে বাচ্চা তুলেছে এবং কন্টাক্ট খামারিদের বাচ্চা দিয়েছে। অবশিষ্ট বাছাই করা নিম্ন মানের বাচ্চা অতিরিক্ত দামে তাদের পরিবেশকের মাধ্যমে প্রান্তিক খামারিদের কাছে ৭০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রয় করছে। যার খেসারত দিতে হচ্ছে ভোক্তা ও প্রান্তিক খামারিদের।’

মুরগির দাম কেন বাড়ছে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বলেন, ‘মুরগির বাচ্চার কৃত্তিম সংকট তৈরি করে প্রান্তিক খামারিদের উৎপাদন থেকে সরিয়ে দেওয়ার কারণে দাম বাড়ছে।’

রমজানের আগে দাম বাড়বে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘মুরগির সংকটের কারণে এবার আংশিকভাবে রমজানের আগে দাম বাড়বে। ৪ থেকে ৫ রমজানে মুরগির বাচ্চা এলে দাম কমে যাবে। যখন প্রান্তিক খামারি মুরগি উৎপাদন করে তখন দাম কমে আসে।’

রমজানে বাজার স্থিতিশীল রাখতে প্রান্তিক খামারিদের দাবি কী জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সারা দেশে যত চাঁদাবাজি ও পুলিশি হয়রানি হয় সেগুলো বন্ধ করতে হবে। একইসঙ্গে দিনেরবেলা প্রান্তিক খামারিদের মুরগি ও ডিমের গাড়িগুলো যাতে চলাচল করতে পারে সে ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।’

সংবাদ সম্মেলনে আরও ছিলেন– বাংলাদেশ পোল্ট্রি এসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি বাপ্পী কুমার দে, সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খন্দকার, পোল্ট্রি উদ্যোক্তা কাউসার আহমেদ, কন্ট্রাক্ট খামারি ইকবাল হোসেন প্রমুখ।