ঢাকা ও রাঙামাটিতে দুদকের অভিযান, চার সরকারি দফতরে চিঠি

দুর্নীতিসহ নানা অনিয়মের অভিযোগে ঢাকা ওয়াসার মিরপুর জোন এবং রাঙামাটির লংগদুর সোনালী ব্যাংকে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সোমবার (১১ মার্চ) এ অভিযান চালানো হয়। একইদিন আরও চারটি সরকারি দফতরে অনিয়মের বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে চিঠি দিয়েছে দুদক।

দুদকের উপ-পরিচালক ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আকতারুল ইসলাম জানান, দুদকের এনফোর্সমেন্ট ইউনিট থেকে সোমবার ছয়টি অভিযোগের বিষয়ে দুটি অভিযান ও চারটি দফতরে চিঠি পাঠিয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘ঢাকা ওয়াসার মিরপুর মডস জোন ৪ ও ১০ এর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত রিডিং দেখিয়ে বিল প্রস্তুত করা, হয়রানির উদ্দেশ্যে পানি সরবরাহ বন্ধ রাখা এবং ঘুষের বিনিময়ে অবৈধ সংযোগ দেওয়ার অভিযোগ আসে দুদকে। অভিযোগ পেয়ে দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে একটি এনফোর্সমেন্ট অভিযান চালানো হয়। অভিযানের সময় দুদক টিমের সদস্যরা প্রথমে উপস্থিত সেবাগ্রহীতাদের সঙ্গে কথা বলে অভিযোগ সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করেন। একজন সুনির্দিষ্ট তথ্যপ্রমাণসহ ওই কার্যালয়ের এক আউটসোর্স ইন্সপেক্টরের বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ আনেন। দুদক টিমের উপস্থিতিতে তাৎক্ষণিকভাবে ওই সেবাপ্রার্থীর সমস্যার সমাধান করা হয়। এছাড়াও অভিযুক্ত আউটসোর্সিং ইন্সপেক্টরের নামে প্রশাসনিক পদক্ষেপের সুপারিশ করে আঞ্চলিক কার্যালয় থেকে ওয়াসার প্রধান কার্যালয়ে চিটি পাঠানো হয়েছে।’

অন্যান্য সেবাপ্রার্থীর অভিযোগ আমলে নিয়ে দ্রুত সমাধান করা হবে ও সেবার মানোন্নয়নে দৃষ্টিগ্রাহ্য পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে মডস জোন কর্তৃপক্ষ প্রতিশ্রুতি দেন। এছাড়াও অভিযানের সময় বিগত তিন মাসে যেসব গ্রাহকের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয় এবং যাদের নতুন সংযোগ দেওয়া হয়, সে তালিকা সংগ্রহ করা হয়েছে। সংগৃহীত তথ্যগুলো পর্যালোচনা করে দুদকের এনফোর্সমেন্ট টিম কমিশন বরাবর বিস্তারিত প্রতিবেদন জমা দেবে বলেও জানান দুদকের এই কর্মকর্তা।

মো. আকতারুল ইসলাম বলেন, ‘রাঙামাটির লংগদুতে সোনালী ব্যাংকের শাখার কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে স্থানীয় দরিদ্র মানুষের নামে ঋণ উত্তোলন করে আত্মসাতের অভিযোগ পায় দুদক। রাঙামাটির দুদক কার্যালয় থেকে একটি এনফোর্সমেন্ট টিম সেখানে অভিযান চালায়। অভিযানের সময় জানা গেছে, কৃষি, গ্রামীণ নারী ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর এক হাজার ৪৭টি লোন অ্যাকাউন্ট প্রাথমিকভাবে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ সন্দেহজনক ঋণ হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে। ওই তালিকা থেকে ২১৫ জনকে নোটিশ দেওয়া হয়। এর মধ্যে ৪৭টি নোটিশ ফেরত আসে। ওই ৪৭টি অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে অবৈধভাবে চার কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করা হয়েছে বলে রেকর্ডপত্র পর্যালোচনায় প্রাথমিকভাবে দেখা গেছে। দুদকের এনফোর্সমেন্ট টিম ওই ঋণ বিতরণের কাজে সোনালী ব্যাংকের লংগদু শাখার যে পাঁচ জন সাবেক ম্যানেজার ও তৎকালীন সময়ে কর্মরত কর্মকর্তা বা লোন অফিসারের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে তাদের তালিকা সংগ্রহ করে। সংগৃহীত রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা করে কমিশন বরাবর পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।