হোলি উৎসবে আবিরের রঙে মুখর পুরান ঢাকা

দোল পূর্ণিমা উপলক্ষে হোলি উৎসবে মেতে উঠেছেন পুরান ঢাকার সনাতন ধর্মালম্বীরা। পরিবারের সদস্য, বন্ধু-বান্ধব ও প্রতিবেশীদের আবির মাখিয়ে উদযাপন করা হচ্ছে হোলি উৎসব।

এবার রোজার কারণে উপস্থিতি কম, ছবি: প্রতিবেদক

সোমবার (২৫ মার্চ) পুরান ঢাকার স্বামীবাগ, লক্ষ্মীবাজার, তাঁতিবাজার, গোপিবাগ, শাঁখারীবাজার এলাকা ঘুরে দেখা যায়— সনাতন ধর্মালম্বী শিশু থেকে বৃদ্ধ সব বয়সী মানুষ মেতেছেন আবির খেলায়। বাড়ির কত্রীরা থালায় করে আবির ও ফুল নিয়ে মন্দিরে যাচ্ছেন ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে আবির মাখিয়ে ও পূজা দিতে। আর হোলির আনন্দ সবচেয়ে বেশি ছুঁয়েছে শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের। দৌঁড়ঝাপ আর আবির মাখানোতে ব্যস্ত থাকতে দেখা গেছে তাদের।

হোলি উৎসবে নারীরা, ছবি: নাসিরুল ইসলামস্বামীবাগে কথা হয় শ্রীময়ী তৃষা হালদারের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘ডালা সাজিয়ে এখন মন্দিরে যাচ্ছি কৃষ্ণ ভগবানের পায়ে সোপর্দ করবো, তারপর তাকে রঙ লাগিয়ে রঙ খেলা শুরু করবো। যখন বিয়ে হয়নি তখন এ দায়িত্ব মায়ের ছিল, বিয়ের পর থেকে রীতি অনুযায়ী বাড়ির গৃহকর্ত্রী হিসেবে আমি পূজা দিই। তারপর ঠাকুরকে দেওয়া রঙ দিয়ে রঙ খেলা শুরু করি।’

হোলি ছাড়াও সনাতম ধর্মাবলম্বীদের যেকোনও ধর্মীয় আয়োজনে সবচেয়ে বেশি উৎসব মুখর থাকে পুরান ঢাকায় শাঁখারীবাজার। হোলিতেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। প্রতিবছরের মতো এবারও উৎসবের রঙে রেঙেছে শাঁখারী

রঙের খেলা, ছবি: নাসিরুল ইসলামবাজার। ঢাকার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এসে শাঁখারীবাজারে উৎসবে যোগ দিয়েছেন তরুণ-তরুণীরা। এসেছেন বিদেশিরাও। তবে এবছর পবিত্র রমজান মাস থাকায় উৎসবে মানুষের উপস্থিতি ছিল কম।

হোলি উৎসব, ছবি: নাসিরুল ইসলামরাজধানীর উত্তরা থেকে বন্ধুদের সঙ্গে এসেছেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রাত্রী বিশ্বাস। তিনি বলেন, ‘প্রতিবছরই হোলিতে পুরান ঢাকা আসি। ঢাকার যেকোনও জায়গা থেকে এখানে শাঁখারীবাজারে হোলিতে আলাদা একটা উন্মাদনা থাকে। এ কারণে আমি ছোটো থেকেই এখানে আসি হোলির দিনে। আগে বাবা-মাও আসতেন, তাদের বয়স হয়েছে। এখন তাই বন্ধুদের সঙ্গে আসি। খুব আনন্দ হচ্ছে।’

যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসা স্ট্রেলা (বাঁয়ে) বলেন, ‘এখানে সবাই রঙ মাখছে, আমিও মেখেছি। আমি খুব উপভোগ করছি’, ছবি: প্রতিবেদকযুক্তরাষ্ট্র থেকে আসা স্ট্রেলা বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশ দেখতে এসেছি। এরমধ্যে হোলি পড়ে যাওয়ায় এখানে এসেছি। সবাই বলেছে শাঁখারীবাজারে সবচেয়ে ভালো হোলি হয়। এখানে সবাই রঙ মাখছে, আমিও মেখেছি। আমি খুব উপভোগ করছি এটা।’

শাঁখারীবাজারের বাসিন্দা সুমন মালাকার বলেন, ‘প্রতিবছর সারা ঢাকা থেকে লোক আসে শাঁখারীবাজারে হোলি খেলতে। সব ধর্মের মানুষ আসে এখানে। ফলে এটি একটি সর্বজনীন উৎসবে পরিণত হয়েছে এবার। তবে এবার রোজার কারণে উপস্থিতি কম।’