ফ্যাসিবাদী শাসন প্রতিরোধে সাংস্কৃতিক আন্দোলন জোরদার করতে হবে: বিশিষ্ট ব্যক্তিরা

দেশে চলমান ফ্যাসিবাদী শাসন প্রতিরোধে সাংস্কৃতিক আন্দোলনকে আরও জোরদার করা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন বিশিষ্ট ব্যক্তিরা।

সোমবার (২৫ মার্চ) গণহত্যা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তারা। রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে মুক্তির মঞ্চ।

জনগণের ক্ষমতা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সাংস্কৃতিক আন্দোলন জোরদার করার আহ্বান জানিয়ে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে ২৫ মার্চ ১৯৭১ পাকিস্তানি সৈন্যবাহিনীর হাতে নিহত শহীদদের স্মরণ করে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

সংগঠনের আহ্বায়ক হেমন্ত দাষের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল সম্পাদক ফয়জুল হাকিম ও বাংলাদেশ লেখক শিবির সাধারণ সম্পাদক কাজী ইকবাল।

আলোচনা সভায় ফয়জুল হাকিম বলেন, ২০১৭ সালের ১১ মার্চ জাতীয় সংসদে ২৫ মার্চকে গণহত্যা দিবস হিসেবে রাষ্ট্রীয়ভাবে পালন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বাস্তবে এদেশের শাসক শ্রেণি, সরকার ২৫ মার্চকে স্মরণ করতে ভয় পায়। কেননা পাকিস্তানি সৈন্যবাহিনীর এই হামলার সংবাদ পূর্বে জানা থাকা সত্ত্বেও আওয়ামী লীগ নেতারা সাধারণ জনগণকে বা সংগঠনকে তা অবহিত করেননি বা নির্দেশনা দেননি। অথচ তারা নিজেরা শহর থেকে সরে গিয়েছিলেন।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার ৫২ বছর হয়ে গেলেও এদেশে জনগণের ক্ষমতা প্রতিষ্ঠা হয়নি। দেশে আজ শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী ফ্যাসিবাদী শাসন দীর্ঘায়িত করা হয়েছে। সাম্রাজ্যবাদী ভারত নিজ স্বার্থ হাসিলে বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদী শাসনে মদদ যুগিয়ে যাচ্ছে। একে রুখে দাঁড়াতে দেশে সাংস্কৃতিক আন্দোলন জোরদার করতে হবে।

কাজী ইকবাল বলেন, ২৫ মার্চ দিবাগত রাতে পাকিস্তানি সৈন্যবাহিনীর অন্যতম টার্গেট ছিল হিন্দু সম্প্রদায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হল, শাঁখারি বাজার এলাকায় নির্বিচার হত্যাকাণ্ড এর বড় দৃষ্টান্ত।

তিনি বলেন, পাকিস্তানি সৈন্যবাহিনীর এই যুদ্ধাপরাধের, জেনোসাইডের কোনও বিচার হয়নি। এই খুনিদের স্বাধীনতা পরবর্তী সরকার ক্ষমা করে দিয়েছিল।

তিনি আরও বলেন, পাকিস্তান রাষ্ট্রের নিপীড়নের চরিত্র বাংলাদেশ বহন করে চলেছে। সরকার দেশে বিরোধী দল ও মতকে নির্মমভাবে দমন করতে গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যা জারি রেখে চলেছে।

সভাপতির বক্তব্যে হেমন্ত দাষ সরকারি পদক আর টাকার থলির দিকে না তাকিয়ে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াই জোরদার করতে সংস্কৃতি কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, সাংস্কৃতিক আন্দোলনের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।