ব্লগার নাজিম হত্যা: ৮ বছরেও শুরু হয়নি বিচার

২০১৬ সালের ৬ এপ্রিল রাতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস শেষে পুরান ঢাকার গেন্ডারিয়ায় মেসে ফিরছিলেন ব্লগার নাজিমুদ্দিন। ফেরার পথে লক্ষ্মীবাজারের একরামপুর মোড়ে তাকে কুপিয়ে এবং গুলি করে হত্যা করে জঙ্গিরা। ঘটনার পরদিন সূত্রাপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. নুরুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। ওই ঘটনার ৮ বছর পার হলেও মামলাটির আনুষ্ঠানিকভাবে বিচারকার্য শুরু হয়নি। কবে নাগাদ শুরু হতে পারে, তাও নির্দিষ্ট করে বলতে পারছে না রাষ্ট্রপক্ষ। তবে তারা বলছেন, খুব শিগগিরই মামলার বিচারকার্য আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হবে এবং দোষীরা দৃষ্টান্তমূলক সাজা পাবে।

বর্তমানে মামলাটি ঢাকার সন্ত্রাস বিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মজিবুর রহমানের আদালতে অভিযোগ গঠন শুনানি পর্যায়ে রয়েছে। সর্বশেষ গত বছরের ২৫ মার্চ মামলাটি অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য ধার্য ছিল। কিন্তু ওইদিন এই মামলায় গ্রেফতার হয়ে কারাগারে থাকা চার আসামিকে নিরাপত্তাজনিত কারণে আদালতে হাজির করা হয়নি। এজন্য আদালত অভিযোগ গঠন শুনানির তারিখ পিছিয়ে আগামী ১৫ মে ধার্য করেছেন।

এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী গোলাম ছারোয়ার খান জাকির বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, বর্তমানে ব্লগার নাজিমুদ্দিন হত্যা মামলাটি অভিযোগ গঠন শুনানি পর্যায়ে রয়েছে। মামলাটি তদন্ত করে অভিযোগপত্র দাখিল করতে অনেকটা সময় চলে গেছে। এর মাঝে আবার করোনাভাইরাসের কারণে আদালত বন্ধ ছিল। এছাড়াও মামলার অপর ৫ আসামি পলাতক রয়েছে। আসামি পলাতক থাকলে আদালত কিছু প্রসিডিওর ফলো করতে হয়। এছাড়াও কারাগারে থাকা আসামিদের আদালতে হাজির করতে পর্যাপ্ত পুলিশ সদস্য না পাওয়ায় কয়েক দফায় তাদের আদালতে হাজির করতে পারেনি কারাকর্তৃপক্ষ। এজন্য মামলার অভিযোগ গঠন শুনানি হচ্ছে না।

তিনি বলেন, ‘আশা করছি, আগামী তারিখে আসামিদের আদালতে হাজির করা হবে এবং আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন হবে। এরপর সাক্ষী হাজির করে মামলাটির বিচার দ্রুত শেষ করার চেষ্টা করবো।’

আসামিদের পক্ষের আইনজীবী নজরুল ইসলাম বলেন, আদালতের উচিত মামলাটা এগিয়ে নেওয়া। অনেক দিন তো হয়ে গেছে। আসামিরাও হয়রানির শিকার হচ্ছে। বাদীপক্ষও বিচারের অপেক্ষায় আছে। আমরা চায়, মামলাটি দ্রুত শেষ হয়ে যাক। দোষীদের শাস্তি হোক এবং নিরপরাধ ব্যক্তি মুক্তি পাক।

মামলার আসামিরা হলেন, মেজর জিয়া, আনসার আল ইসলামের সামরিক শাখার প্রধান চাকরিচ্যুত মেজর সৈয়দ জিয়াউল হক জিয়া,আকরাম হোসেন, মো. ওয়ালিউল্লাহ ওরফে ওলি ওরফে তাহেব ওরফে তাহসিন, সাব্বিরুল হক চৌধুরী ওরফে আকাশ ওরফে কনিক, মাওলানা জুনেদ আহাম্মেদ ওরফে সাব্বির ওরফে জুনায়েদ ওরফে তাহের, রশিদুন নবী ভূইয়া ওরফে টিপু ওরফে রাসেল ওরফে রফিক ওরফে রায়হান, মোজাম্মেল হুসাইন ওরফে সায়মন, মো. আরাফাত রহমান ও মো. শেখ আব্দুল্লাহ। আসামিদের মধ্যে প্রথম পাঁচ জন পলাতক রয়েছেন। শেষের চার জন কারাগারে রয়েছে।

২০২০ সালের ২০ আগস্ট মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট বহিষ্কৃত মেজর সৈয়দ মো. জিয়াউল হক জিয়াসহ ৯ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।