আজ পহেলা আষাঢ়। রাজধানীর আবহাওয়াও সকাল থেকেই বলছে যেন বৃষ্টি নামবে যেকোনও সময়। আজি ঝরো ঝরো মুখর বাদরদিনে...জানি নে, জানি নে...কিছুতে কেন যে মন লাগে না…। রবীন্দ্রনাথের এই গান যেন আরও মধুর করে তোলে এই ঋতুকে।
মৌসুমি বায়ু আরও আগেই বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় বিচ্ছিন্নভাবে থেমে থেমে গত কিছুদিন ধরেই বৃষ্টি শুরু হয়েছে। সন্ধ্যায় কিছু কিছু এলাকায় পাওয়া যাচ্ছে কদম ফুলের সুগন্ধ। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের কারণে বাংলাদেশে এখন আর ছয় ঋতুর সবগুলো আর আগের মতো আলাদাভাবে বোঝা যায় না। তবে শীত, গ্রীষ্ম আর বর্ষা এখনও আমাদের দেশে ভালোভাবেই আছে। গত বছরও প্রায় সেপ্টেম্বর, অক্টোবর মাস পর্যন্ত বর্ষার মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে বৃষ্টি হয়েছিল।
বর্ষায় শুধু কদমই ফোটে না, বেলি, বকুল, জুঁই, দোলনচাঁপা, গন্ধরাজ, হাসনাহেনাসহ প্রায় সব সাদা ফুলের ঘ্রাণে ভরে ওঠে চারপাশ। বৃষ্টির এই সময়ে গরমের তাপদাহ কমে আসায় স্বস্তির নিশ্বাস ফেলে সবাই। তবে এতে ভোগান্তিও হয়, যখন শহরে রাস্তাঘাট পানিতে ডুবে যায়। নদনদীতে এখনই পানি বাড়তে শুরু করেছে।
আবহাওয়া অধিদফতর জানায়, মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর মোটামুটি সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি অবস্থায় রয়েছে।
শুক্রবার (১৪ জুন) সন্ধ্যায় ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়, রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায়, চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায়, ঢাকা ও রাজশাহী বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং খুলনা ও বরিশাল বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণ হতে পারে।
এদিকে, আজ শনিবার (১৫ জুন) সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরসমূহের জন্য আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়, রংপুর, বগুড়া, ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, কুমিল্লা এবং সিলেট অঞ্চলের ওপর দিয়ে পশ্চিম বা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে দমকা অথবা ঝোড়োহাওয়াসহ অস্থায়ীভাবে বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরসমূহকে ১ নম্বর সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
অন্যদিকে, বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানায়, ব্রহ্মপুত্র-যমুনা ও গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানি স্থিতিশীল আছে, যা আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। তবে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সকল প্রধান নদীগুলোর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে।
আবহাওয়া সংস্থাসমূহের তথ্যানুযায়ী, আগামী ২৪ হতে ৭২ ঘণ্টায় দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং তৎসংলগ্ন উজানে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। ফলে আগামী ৭২ ঘণ্টায় দেশের উত্তরাঞ্চলের তিস্তা, ধরলা দুধকুমার, এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলে প্রধান নদীগুলোর পানি সমতল সময় বিশেষে দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে।