কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের কর্মকর্তাসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

কাজ না করেই প্রায় চার কোটি ৭৫ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের একজন প্রকল্প পরিচালকসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়, ঢাকা-১ এ মামলাটি দায়ের করেন দুদকের উপ-পরিচালক নূর আলম সিদ্দিকী। আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ধারাসহ দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনে মামলা দায়ের করা হয়। মামলার তদন্তকালে ঘটনার সঙ্গে অন্য কারোর সম্পৃক্ততা পাওয়া গেলে তাদেরও আইনের আওতায় আনা হবে।

দুদকের উপ-পরিচালক ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আকতারুল ইসলাম জানান, আসামিরা উদ্ভিদ সংগনিরোধ ল্যাবরেটরিকে আন্তর্জাতিক মানের ল্যাবরেটরিতে রূপান্তর প্রকল্পের ৩০ হাজার ৬১৭ বর্গফুটের ছয় তলা ভবনের নির্মাণকাজের পাইলিংয়ের কাজ শুরুর পরই সিভিল ওয়ার্কের ১৯ কোটি টাকার মধ্যে ৪ কোটি ৭৫ লাখ ১৪ হাজার ৯৬৭ টাকা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স মাল্টিবীজ ইন্টারন্যাশনালের মাধ্যমে ক্ষমতার অপব্যবহার করে তুলে নিয়ে আত্মসাৎ করেন। যা প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার পর নেওয়ার কথা ছিল। 

মামলায় যাদের আসামিরা হলেন—প্রকল্প পরিচালক এস, এম খালিদ সাইফুল্লাহ, উপ-প্রকল্প পরিচালক অনন্ত সরকার, মাল্টিবীজ ইন্টারন্যাশনাল নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী মো. ইকবাল হোসেন, শহিদুল্লাহ অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস লিমিটেডের সিনিয়র ইঞ্জিনিয়ার মুনির উদ্দিন আহমেদ ও সিনিয়র ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুজ্জামান এবং কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন, পরিকল্পনা প্রকল্প বাস্তবায়ন ও আইসিটি উইংয়ের সহকারী যান্ত্রিক প্রকৌশলী মো. গোলাম কবীর।

মামলার এজাহারে আরও বলা হয়, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের ঢাকার শ্যামপুরের ‘কেন্দ্রীয় প্যাকিং হাউজে স্থাপিত উদ্ভিদ সংগনিরোধ ল্যাবরেটরিকে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ল্যাবরেটরিতে রূপান্তর প্রকল্পের (১ম সংশোধিত)’ আওতায় ‘বিদ্যমান পান শোধনাগার সম্প্রসারণ ৬ তলা ফাউন্ডেশনে ৫ তলা বিশিষ্ট অফিসার কাম স্টাফ ডরমেটরি নির্মাণ করার উদ্যোগ নেয় সরকার। আসামিরা এ প্রকল্পে কাজ না করে জাল- জালিয়াতির মাধ্যমে বিল উত্তোলন করে আত্মসাৎ করা হয়েছে মর্মে দুর্নীতি দমন কমিশন একটি অভিযোগ পায়। গত ১৫ জুলাই দুদকের প্রধান কার্যালয়ের এনফোর্সমেন্ট ইউনিট থেকে অভিযান চালানো হয়। এনফোর্সমেন্ট টিম প্রথমে শ্যামপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের কেন্দ্রীয় প্যাকিং হাউজ সরেজমিনে পরিদর্শন করে। তারা ঘটনাস্থলের স্থিরচিত্র ও ভিডিও ধারণ এবং অভিযোগ সংশ্লিষ্টদের বক্তব্য গ্রহণ করেন। পরে রাজধানীর খামারবাড়ির প্রকল্প পরিচালকের কার্যালয় থেকে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট রেকর্ডপত্র জব্দ ও সংগ্রহ করে।

এসব কাগজপত্র পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আসামিরা প্রতারণার মাধ্যমে পরস্পর যোগসাজশে কাজ বুঝে পেয়েছেন মর্মে প্রকল্প পরিচালক এস এম খালিদ সাইফুল্লাহ দুটি বিল পাস করে ৪ কোটি ৭৫ লাখ ১৪ হাজার ৯৬৭ টাকা আত্মসাৎ করেন।