কাঠগড়ায় কাঁদলেন হাজী সেলিম

আইডিয়াল কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র খালিদ হাসান সাইফুল্লাহ হত্যা মামলার রিমান্ড শুনানির সময়ে আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে অঝোরে কাঁদলেন ঢাকা-৭ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য হাজী মোহাম্মদ সেলিম।

সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) দুপুর সাড়ে ৩টার কিছু আগে হাজী সেলিমকে আদালতে হাজির করা হয়। সিএমএম আদালতের হাজতখানায় তাকে রাখা হয়। বিকাল ৩টা ৪০ মিনিটের দিকে তাকে এজলাসে তোলা হয়। সেখানে গিয়ে অঝোরে কাঁদতে থাকেন হাজী সেলিম। বার বার তাকে চোখ মুছছে দেখা গেছে।

এর আগে মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা লালবাগ থানার সাব-ইন্সপেক্টর আক্কাস মিয়া হাজী সেলিমের ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আক্তারুজ্জামানের আদালত তার পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

হাজী সেলিমের আইনজীবী শ্রী প্রাণনাথ ওকালতনামায় আসামির সই নিতে আদালতের অনুমতি চান। আদালত অনুমতি দিলে  আইনজীবী যান হাজী সেলিমের কাছে। তবে তিনি সই করতে পারেন না বলে জানান। পরে তার টিপ সই নিয়ে আদালতে তার পক্ষে ওকালতনামা দাখিল করেন প্রাণনাথ।

রাষ্ট্রপক্ষে পরিদর্শক মো. আসাদুজ্জামান ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুরের প্রার্থণা করেন। বিএনপিপন্থি আইনজীবী ওমর ফারুক ফারুকীও ১০ দিনের রিমান্ডের প্রার্থণা করেন।

হাজী সেলিমের পক্ষে প্রাণনাথ রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন শুনানিতে বলেন, এটা হত্যা মামলা। জমি দখল, মার্কেট দখলের সঙ্গে এ মামলার সম্পর্ক নেই। এসময় বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা চিৎকার করে বলেন, সম্পর্ক আছে। এরপর প্রাণনাথ বলেন, এজাহারে সুস্পষ্ট বলা আছে—  লালবাগের ডিসির (পুলিশের) নেতৃত্বে হত্যাকাণ্ড চালানো হয়েছে। রিমান্ডে নিলে ডিসিকে নিতে হবে। তাকে কেন। এরপর আইনজীবীরা চিৎকার করেন। পরে আদালত তার ৫ দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।

গত ১ সেপ্টেম্বর দিবাগত মধ্যরাতে রাজধানীর বংশাল থানা এলাকা থেকে হাজী সেলিমকে আটক করা হয়েছে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গত ১৮ জুলাই লালবাগের আজিমপুর সরকারি আবাসিক এলাকায় আইডিয়াল কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র খালিদ হাসান সাইফুল্লাহ গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। এ ঘটনায় তার বাবা কামরুল হাসান ১৯ আগস্ট লালবাগ থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৫২ জনকে আসামি করা হয়।

এর আগে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের মামলায় ২০০৮ সালে ১৩ বছরের সাজা হয় হাজী সেলিমের। পরবর্তী সময়ে ২০২২ সালে এই সাজা কমিয়ে ১০ বছর করে হাইকোর্ট।