লাল-সবুজে সেজেছে নগরী 

রাত পোহালেই বাঙালি জাতির সবচেয়ে গৌরবোজ্জ্বল দিন; মহান বিজয় দিবস। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর এসেছিল কাঙ্ক্ষিত বিজয়। জন্ম হয়েছিল বাংলাদেশ নামক এক স্বাধীন রাষ্ট্রের। সোমবার সারা দেশে যথাযথ ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে উদযাপিত হবে বাংলাদেশের ৫৩তম বিজয় দিবস। এই বিজয় দিবসকে কেন্দ্র করে প্রতিবারের মতো এবারও লাল-সবুজ আলোকসজ্জায় সেজে উঠেছে রাজধানী ঢাকা। রাজধানীতে অবস্থিত গুরুত্বপূর্ণ সরকারি-বেসরকারি ভবন ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সেজেছে লাল-সবুজ আলোকবাতিতে। 

জাতীয় সংসদে আলোকসজ্জা (ছবি: সাজ্জাদ হোসেন)

রবিবার (১৫ ডিসেম্বর) রাজধানীর বাণিজ্যিক এলাকা মতিঝিল, গুলিস্তান, পল্টন, শাহবাগ, হাইকোর্ট, কাওরান বাজার, জাতীয় সংসদ ভবন, বিজয় সরণি, খামারবাড়ি, আগারগাঁও ও মিরপুর এলাকা ঘুরে দেখা যায় লাল-সবুজকে মূল রেখে নীল, হলুদ, সাদা, বেগুনিসহ বিভিন্ন রঙের বাতি দিয়ে সাজানো হয়েছে গুরুত্বপূর্ণ ভবনগুলো।

Bijoy Dibos SSJ (1)

জাতীয় সংসদ ভবন এলাকায় দেখা যায়, বিজয়ের সাজ দেখতে সব বয়সী দর্শনার্থীদের ভিড়। অনেকেই মোবাইল ফোনে ছবি তুলে রাখছেন আলোকসজ্জার। আবার অনেক তরুণ-তরুণী আড্ডা দিচ্ছেন নিজেদের মতো। অনেক বাবা-মা তাদের সন্তানকে নিয়ে এসেছেন বিজয়ের সাজ দেখাতে। 

ছবি: সাজ্জাদ হোসেন

এমনই এক দম্পতি রাশেদ ও সামিয়া মোহাম্মদপুর থেকে এসেছিলেন তাদের সন্তান রাইসাকে নিয়ে বেড়াতে। এসময় রাশেদ বলেন, আমার মেয়ে ক্লাস সিক্সে পড়ে। ওকে নিয়ে এসেছি বিজয় দিবসের সাজ দেখাতে। ওকে দেখালাম, একটু ঘুরলাম। বিজয় দিবসের ছোট ছোট গল্প করলাম আমরা।

ছবি: সাজ্জাদ হোসেন

জুনায়েদ আহমদ কাজ শেষে এসেছিলেন বন্ধুর সঙ্গে দেখা করতে। এসময় তিনি ফেরার সময় তার ছেলের জন্য পতাকা কিনে নিয়ে যাচ্ছিলেন। তার সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, বহুদিন পর মনে হচ্ছে আমরা একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধকে ফিল করতে পারছি। এতদিন দিবসটাকে দলীয়করণ করে রাখা হয়েছিল। এবার আমরা প্রকৃত বিজয়ের স্বাদ পাবো। এরজন্যই আমাদের গৌরবের প্রতীক হিসেবে দেশের পতাকা আমার সন্তানের জন্য নিয়ে যাচ্ছি।

Bijoy Dibos SSJ (3)

সংসদ ভবনের সামনে আগামীকাল আয়োজিত হবে উন্মুক্ত কনসার্ট। যাতে দেশের খ্যাতনামা কণ্ঠশিল্পীসহ জনপ্রিয় সব ব্যান্ডদল পারফর্ম করবে। এই আয়োজন নিয়ে কথা হয় বেশ কিছু তরুণ-তরুণীদের সঙ্গে। তারা বলেন, কনসার্ট সবসময়ই আমাদের উপভোগ করার মতো অনুষ্ঠান। কনসার্ট হলে আমরা সেখানে সময় সুযোগ থাকলে যাওয়ার চেষ্টা করি। এতদিন জয় বাংলা কনসার্ট হতো, সেখানেও আমরা যেতাম। আগামীকাল এখানেও আসবো আশা করি। 

16 Dec Photo Saz (11)

এসময় পতাকা বিক্রেতা রাকিব বলেন, আমি ঘুরে ঘুরে এই এলাকায় (সংসদ ভবন এলাকা) পতাকা বিক্রি করি। বিজয় দিবসের সময় আসলে ভালো বিক্রি হয়। আজকেও আমার বিক্রি হয়েছে মোটামুটি। আশা করি কালকে আরও ভালো বিক্রি হবে। কালকে এখানে কনসার্ট হবে, সে সময় আরও ভালো বিক্রি হবে। কালকে মাথায় বাঁধার পতাকা নিয়ে আসবো। 

16 Dec Photo Saz (10)

সাজেদ নামের এক দর্শনার্থী বলেন, আমি প্রতি বছরই বিজয় দিবসের আগের রাতে ঘুরতে বের হই বন্ধুদের নিয়ে। এই সাজসজ্জা আমার খুব ভালো লাগে। ভেতর থেকে সত্যিই একরকম ভালো লাগা কাজ করে। এই দেশ আমাদের, নোংরা-ময়লা যাই হোক তাও এই দেশটা আমাদের। আমি সত্যিই এই দেশকে ভালোবাসি।