সাবেক এমপি বাহার ও তার স্ত্রী-মেয়ের বিরুদ্ধে দুর্নীতির ৩ মামলা

কুমিল্লা-৬ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) আ. ক. ম. বাহাউদ্দিন বাহার, তার স্ত্রী মেহেরুন্নেছা, মেয়ে ও কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র তাহসিন বাহারের বিরুদ্ধে পৃথক তিনটি মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। একইসঙ্গে এমপি বাহারের অপর দুই মেয়ে আয়মান বাহার ও আজিজা বাহারের সম্পদ বিবরণীর নোটিশ জারি করেছে সংস্থাটি।

দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন সোমবার (২০ জানুয়ারি) দুপুরে এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।

আক্তার হোসেন জানান, কুমিল্লা-৬ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) আ. ক. ম. বাহাউদ্দিন বাহার ক্ষমতার অপব্যবহার ও দুর্নীতির মাধ্যমে জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ ৬৭ কোটি ৪৩ লাখ ১৩ হাজার ৮৩৬ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন। এছাড়া তার নিজের নামের ২৯টি ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ ২৫৮ কোটি ৬৮ লাখ ৬৩ হাজার ৯০৫ টাকার অস্বাভাবিক লেনদেন করে হস্তান্তর, স্থানান্তর ও রূপান্তর করেন। যা দুদক আইন, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ও মানিলন্ডারিং আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এ কারণে তার বিরুদ্ধে দুদকের উপ-পরিচালক রেজাউল করিম বাদী হয়ে ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়, ঢাকা-১ এ মামলাটি দায়ের করেন।

অপরদিকে, কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও এমপি বাহারের মেয়ে তাহসীন বাহার তিন কোটি চার লাখ ৫০ হাজার ৭৭০ টাকা মূল্যের সম্পদের মালিকানা অসাদু উপায়ে অর্জন করেছেন। এছাড়া ১৬টি ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে ৪২ কোটি ৫৮ লাখ ৭৩ হাজার ১৯৩ টাকা অস্বাভাবিক ও সন্দেহজনক লেনদেনের মাধ্যমে হস্তান্তর, স্থানান্তর ও রূপান্তর করেন তিনি। যা দুদক আইন, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ও মানিলন্ডারিং আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এ কারণে তার বিরুদ্ধে দুদকের সহকারী পরিচালক মো. ফেরদৌস রহমান বাদী হয়ে সমন্বিত জেলা কার্যালয়, ঢাকা-১ এ আরেকটি মামলা দায়ের করেন।

অপরদিকে, মেহেরুন্নেছা একজন গৃহিনী হওয়া সত্ত্বেও তার স্বামী সাবেক এমপি বাহারের অবৈধ সম্পদকে বৈধ করার অপপ্রয়াসে নিজেকে ব্যবসায়ী হিসাবে আয়কর নথিতে প্রদর্শিত করেন। এতে স্বামীর অবৈধ উপায়ে অর্জিত অর্থ দিয়ে নিজ নামে দুই কোটি ৩৭ লাখ ৪৯ হাজার ৪৭ টাকা মূল্যের জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ নিজ দখলে রাখেন। অবৈধ সম্পদ গোপনে একে অপরকে সহায়তা করার অভিযোগে মেহেরুন্নেছাকে প্রধান আসামি ও দ্বিতীয় আসামি হিসেবে এমপি বাহারকে এজাহারভুক্ত করে তৃতীয় মামলাটি দায়ের করেন দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ শাহ জালাল।

এছাড়া এমপি বাহারের মেয়ে আয়মান বাহার ও আজিজা বাহারের জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পদ সঠিকভাবে নিরূপনের জন্য তাদের দুজনকে পৃথক পৃথক সম্পদ বিবরণী নোটিশ জারি করা হয়েছে।