কলাবাগান থানার ওসিসহ দুই এসআই প্রত্যাহার

কোটি টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগে রাজধানীর কলাবাগান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোক্তারুজ্জামান এবং দুই উপ-পরিদর্শক (এসআই) বেলাল ও মান্নানকে সাময়িকভাবে প্রত্যাহার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।

ডিএমপি মিডিয়া ও পাবলিক রিলেশন বিভাগের প্রধান মুহাম্মদ তালেবুর রহমান এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, এ ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কলাবাগান থানার ওসির বিরুদ্ধে সন্ত্রাসীদের সহায়তায় চাঁদাবাজি, ভাঙচুর, লুটপাট এবং অর্থ আদায়ের অভিযোগ আনেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও ফিকামলি তত্ত্বের প্রবর্তক ড. আব্দুল ওয়াদুদ। ডিএমপি কমিশনার বরাবর লিখিত অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, গত ২৯ এপ্রিল রাত আনুমানিক ১টা ৩০ মিনিটে কলাবাগান থানার এসআই বেলালের নেতৃত্বে পুলিশ ও সন্ত্রাসীরা তার বাসায় জোরপূর্বক প্রবেশ করে।

অভিযোগে ড. ওয়াদুদ জানান, এসআই বেলাল ও মান্নান তাকে থানায় না নেওয়ার শর্তে ১ কোটি টাকা দাবি করেন। পরে দেন-দরবারের পর ২ লাখ টাকা দিলে তাকে কিছু সময়ের জন্য ছেড়ে দেওয়া হয়। বাকি টাকা দেওয়ার শর্তে ডিবি পরিচয় দেওয়া তিন জন সিভিল পোশাকধারী তার বাসায় পাহারায় রেখে যান। তবে পুলিশি অভিযানের সময় কোনও মামলার কাগজপত্র দেখানো হয়নি।

ড. ওয়াদুদ আরও জানান, তার বাসায় থাকা বিদেশি দুর্লভ পাখি, ম্যাকাও, কাকাতুয়া, রেইনবো লরি ইত্যাদি লুট করে নিয়ে যাওয়া হয়। সরকারি অনুমোদন নিয়ে পরিচালিত মিনি চিড়িয়াখানার একটি গর্ভবতী হরিণ পুলিশের অভিযানের আতঙ্কে ছোটাছুটির সময় মারা যায়।

পুলিশ সদস্যরা কম্পিউটারের পিসি, ল্যাপটপ ও সিসি ক্যামেরার হার্ডডিস্কও নিয়ে যায়। অভিযানের সময় কলাবাগান থানার ওসি বাইরে দাঁড়িয়ে ঘটনাটি পর্যবেক্ষণ করেন বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।

ঘটনার পর থেকে অজ্ঞাত লোকজন বাসার আশপাশে ঘোরাফেরা করছে এবং চাঁদা না দিলে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছে বলে জানান ড. ওয়াদুদ। তিনি বর্তমানে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন এবং বাসায় ফিরতে পারছেন না।

ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ে ইতোমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে ডিএমপি। তদন্ত চলাকালীন সময়ে কলাবাগান থানার ওসি মোক্তারুজ্জামান, এসআই বেলাল এবং এসআই মান্নানকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান ডিএমপি মুখপাত্র।