আসন্ন ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে সিগারেটে কার্যকর করারোপের ধারা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে উন্নয়ন সমন্বয়।
সোমবার (৫ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে 'সিগারেটে কার্যকর করারোপের প্রস্তাবনা' বিষয়ক প্রাক-বাজেট সংবাদ সম্মেলনে এই আহ্বান জানানো হয়।
উন্নয়ন সমন্বয় জানায়, চলতি অর্থবছরের বাজেটে সিগারেটে কার্যকর করারোপ বিষয়ে তামাকবিরোধী নাগরিক সংগঠনগুলোর প্রস্তাবনা প্রতিফলন দেখা না গেলেও, অর্থবছরের মাঝামাঝি এসে বিভিন্ন স্তরের সিগারেটের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ৮ থেকে ২০ শতাংশ বাড়ানো হয়েছিল এবং সকল স্তরের সিগারেটের ওপর একই বর্ধিত হারে (৬৭ শতাংশ হারে) সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা হয়েছিল। দেরিতে হলেও নাগরিক সংগঠনের প্রস্তাবগুলো করনীতিতে প্রতিফলিত করায়- এক দিকে জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় ইতিবাচক অগ্রগতি হয়েছে, অন্যদিকে সরকারের বাড়তি রাজস্ব পাওয়ার সম্ভাবনাও তৈরি হয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটেও সিগারেটে কার্যকর করারোপের এই ধারা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানানো হয়।
বক্তব্যে সংস্থার গবেষণা পরিচালক আব্দুল্লাহ নাদভী বলেন, নাগরিক সংগঠনগুলোর প্রস্তাবনা অনুসারে সিগারেটের দাম বাড়ানো গেলে সিগারেটের ওপর বিদ্যমান সম্পূরক শুল্ক হার (৬৭ শতাংশ) অপরিবর্তিত রেখেই আগামী অর্থবছরে চলতি অর্থবছরের চেয়ে ৪০ শতাংশ বেশি রাজস্ব আহরণ করা সম্ভব। এছাড়া বর্তমানে যে চার স্তরের সিগারেট বাজারে বিক্রি করা হচ্ছে, তার মধ্যে তুলনামূলক সস্তা নিম্ন ও মধ্যম স্তরের সিগারেটকে একটি একীভূত স্তরে নিয়ে এসে- ওই নতুন স্তরের একেকটি সিগারেটের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ৯ টাকা করা গেলে কিশোর-তরুণদের সিগারেট ব্যবহার নিরুৎসাহিত করা সম্ভব।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. শাফিউন নাহিন শিমুল বলেন, সিগারেটের দাম বাড়ানোর ক্ষেত্রে রাজস্ব আহরণের চেয়ে জনস্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টিকেই বেশি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা দরকার। তামাকপণ্য বিক্রি থেকে যে রাজস্ব আসে, তা তামাকজনিত স্বাস্থ্য ব্যয়ের মাত্র ৭৫ শতাংশ। তাছাড়া কার্যকর করারোপের মাধ্যমে সিগারেট বিক্রি থেকে সরকারের রাজস্ব আয় ১১ থেকে ২৮ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানো সম্ভব।
বিআইআইএসএসের গবেষণা পরিচালক অর্থনীতিবিদ ড. মাহফুজ কবির বলেন, মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সিগারেটের দাম না বাড়ানোয় বিগত অর্থবছরগুলোতে সিগারেট বিক্রির পরিমাণ ক্রমান্বয়ে বেড়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন হেলথ রিপোর্টাস ফোরামের সভাপতি এম এম রাশেদ রাব্বি এবং বিআইডিএসের গবেষণা সহযোগী হোমায়রা আহমেদ।