২০৫০ সাল নাগাদ ১ কোটি ৯০ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুতির আশঙ্কা

জলবায়ু পরিবর্তনজনিত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া না হলে ২০৫০ সাল নাগাদ জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ধীরগতিসম্পন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঘটনায় ১ কোটি ৯০ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুতির আশঙ্কায় রয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৮ মে) রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে অনুষ্ঠিত এক কর্মশালায় এ মন্তব্য করেন বাস্তুচ্যুতি ব্যবস্থাপনা জাতীয় কৌশলপত্র বাস্তবায় বিষয়ক ওয়ার্কিং গ্রুপের সদস্য সচিব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এবং রামরুর ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী পরিচালক ড. তাসনিম সিদ্দিকী। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে বাস্তুচ্যুতি ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ সরকার প্রনীত জাতীয় কৌশলপত্র ২০২১, কৌশলপত্রটি বাস্তবায়নের জন্য জাতীয় কর্মপরিকল্পনা ২০২২-২০৪২ পরিচিতিকরণ এবং ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরাম কান্ট্রিগুলো যাতে নিজ নিজ দেশের জন্য অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুতি ব্যবস্থাপনা বিষয়ক কৌশলপত্র তৈরি করতে পারে এ সংক্রান্ত একটি টেম্পলেটের (যা বাংলাদেশ তৈরি করছে) ওপর আলোচনা ও মতামত গ্রহণ শীর্ষক কর্মশালাটি অনুষ্ঠিত হয়।

উল্লেখ্য, ২০২১ সালে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘ জলবায়ু সম্মেলন কপ ২৬ ক্লাইমেট ভালনারেবল কান্ট্রিস ফোরামের সেশনে বাংলাদেশ এই কৌশলপত্রটি উপস্থাপন করে। তৎকালীন সিভিএফ’র সেক্রেটারি জেনারেল বাংলাদেশকে একটি স্ট্যান্ডার্ড টেমপ্লেট তৈরি করে দেওয়ার অনুরোধ করেন; যাতে করে ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরাম কান্ট্রিগুলো নিজ নিজ দেশের জন্য অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুতি ব্যবস্থাপনা বিষয়ক কৌশলপত্র তৈরি করতে পারে। এই টেমপ্লেটটি জাতিসংঘের আগামী জলবায়ু সম্মেলনের সিভিএফ কান্ট্রিস সেশনে উপস্থাপনের জন্য কর্মশালায় সবাই মত প্রকাশ করেন।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, এই কর্মশালার মাধ্যমে একটি চমৎকার ফাইনাল ডকুমেন্ট হবে, যেখানে আমাদের গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অনেক রেসপন্সিবিলিটি থাকবে।

তিনি বলেন, দরিদ্র মানুষ যারা বিভিন্ন সময় বাস্তচ্যুত হয়েছে এবং ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদের পুনর্বাসন এবং কল্যাণে কাজ করা আমাদের একটা নৈতিক দায়িত্ব। মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আমাদের উপদেষ্টা ও আমরা একমত আছি, এ বিষয়ে আমাদের দায়িত্বটুকু সক্রিয়ভাবে পালন করবো।

তিনি বলেন, আমরা দেখেছি নদীভাঙনের ফলে ক্ষতিগ্রস্তদের কোনও ঘর নেই, কোনও টয়লেট সিস্টেম নেই, নিরাপদ পানি পান করার সুযোগ নেই। তাদের জন্য ঘর নির্মাণ করে একটা বাসস্থান তৈরি করা গেলে তারা উপকৃত হবেন। এ বিষয়ে দৃষ্টি দেওয়ার সময় এসেছে। এছাড়া নদীভাঙনের ফলে যেসব দরিদ্র মানুষ শহরে আসছে, তাদের সুস্পষ্ট সুনির্দিষ্ট বাসাবাড়ি নেই। তাদের জন্য আবাসনের কিছু প্রজেক্ট গৃহায়ন ও গণপূত মন্ত্রণালয় নেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে।

কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন– দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কে এম আব্দুল ওয়াদুদসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও অধিদফতরের যুগ্মসচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তা এবং জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে কার্যরত বিভিন্ন সিভিল সোসাইটি (সিএসও) প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা।