দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুসন্ধান চলমান থাকায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) সাবেক প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশিদের শ্বশুর মো. সোলায়মানের নামে রাজধানীর উত্তরা আবাসিক এলাকায় থাকা ৮ দশমিক ৬০ কাঠা জমি ও জমিতে অবস্থিত ইমারত জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এছাড়াও তার নামে থাকা পাঁচটি ব্যাংক হিসাবের ৫৯ লাখ ৬২ হাজার ৯০৩ টাকা অবরুদ্ধের আদেশ দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৫ মে) ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন (গালিব) দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন। দুর্নীতি দমন কমিশনের উপপরিচালক মুহাম্মদ জয়নাল আবেদীন এ জব্দ ও অবরুদ্ধের আবেদন করেন।
এছাড়াও দুদকের মামলা চলমান থাকায় ডিবি হারুনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী শাহরিয়ারের দুই ব্যাংক হিসাবে থাকা ২ লাখ ৯৮ হাজার ৭২১ টাকা অবরুদ্ধের আদেশ দেন একই আদালত।
হারুনের শ্বশুর সোলায়মানের সম্পদ জব্দের আবেদনে বলা হয়, মোহাম্মদ হারুন অর রশিদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে নিজ নামে, স্ত্রী শিরিন আক্তার, নিকট আত্মীয় ও ঘনিষ্ঠদের নামে দেশে-বিদেশে শত শত কোটি টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ করা হয়েছে। তার ঘনিষ্ঠদের অন্যতম তার শ্বশুর মো. সোলায়মান। তিনি হারুন অর রশিদের সহযোগী হিসেবে কাজ করেছেন এবং তার নামে-বেনামে, দেশে-বিদেশে অনেক সম্পদ রয়েছে যা হারুন অর রশিদের বেনামী সম্পদ হতে পারে। অনুসন্ধানকালে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যাচ্ছে যে, তার নামীয় স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি হস্তান্তরের চেষ্টা চলছে, যা করতে পারলে অত্র অনুসন্ধানের ধারাবাহিকতায় মামলা রুজু, আদালতে চার্জশিট দাখিল, আদালত কর্তৃক বিচার শেষে সাজার অংশ হিসেবে অপরাধলব্ধ আয় থেকে অর্জিত সম্পত্তি সরকারের অনুকূলে বাজেয়াপ্তকরণসহ সব উদ্দেশ্যই ব্যর্থ হবে। তাই, উল্লিখিত এসব স্থাবর সম্পত্তিসমূহ জব্দ ও অস্থাবর সম্পত্তিসমূহ অবরুদ্ধ করা একান্ত প্রয়োজন।
শাহরিয়ারের আবেদনে বলা হয়, তদন্তকালে দেখা যায় যে, আসামি এ বি এম শাহারিয়ার ১২ কোটি ৯৬ লাখ ৮৭ হাজার ৬০৪ টাকা মূল্যের জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনপূর্বক ভোগ দখলে রাখার এবং আসামি মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিবি প্রধানের পদে থেকে ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে আসামি শাহরিয়ারের অপরাধে প্রত্যক্ষ সহায়তা করায় মামলা রুজু করা হয়েছে। তদন্তকালে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যাচ্ছে যে আসামি তার মালিকানাধীন ও স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি হস্তান্তরের চেষ্টা করছেন, যা করতে পারলে অত্র মামলা বিজ্ঞ আদালত কর্তৃক বিচার শেষে সাজার অংশ হিসেবে অপরাধলব্ধ আয় থেকে অর্জিত সম্পত্তি সরকারের অনুকূলে বাজেয়াপ্তকরণসহ সব উদ্দেশ্যই ব্যর্থ হবে। তাই, অত্র মামলা তদন্ত সম্পন্ন করে বিজ্ঞ আদালতে চার্জশিট দাখিলের পর বিজ্ঞ আদালত কর্তৃক বিচার শেষে সরকারের অনুকূলে সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের সুবিধার্থে তথা সুষ্ঠু তদন্ত ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার স্বার্থে নিম্নেবর্ণিত ব্যাংক হিসাবগুলো অবরুদ্ধ করা একান্ত প্রয়োজন।