গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) অনুযায়ী সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নির্বাচন কমিশনে চিঠি দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। একইসঙ্গে শেখ হাসিনার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগটিও অনুসন্ধান শুরু করেছে দুদক। বৃহস্পতিবার (২২ মে) দুদকের উপ-পরিচালক ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আকতারুল ইসলাম এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা নমব জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনে দাখিল করা হলফনামায় সম্পদের ঘোষণায় অসত্য তথ্য দেন। এ জন্য ‘গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২ এর আওতায় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনে চিঠি দিয়েছে দুদক। ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনা দুর্নীতি দমন কমিশনে সম্পদ বিবরণী দাখিল করেন। ওই সম্পদ বিবরণী যাচাইকালে ২০০৮ সালের ১৯ নভেম্বর নির্বাচন কমিশনে তার দাখিল করা হলফনামা পর্যালোচনা করা হয়।
পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনে হলফনামার মাধ্যমে দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে শেখ হাসিনা নিজ নামে অর্জিত কৃষি জমির পরিমাণ ৬ দশমিক ৫০ একর উল্লেখ করেন। এর মধ্যে ক্রয় করা জমির অর্জনকালীন আর্থিক মূল্য দেখানো হয় ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। কিন্তু সমসাময়িক সময়ে দুর্নীতি দমন কমিশনে দাখিল করা সম্পদ বিবরণী যাচাইকালে পাওয়া তথ্যানুযায়ী শেখ হাসিনার নিজ নামে অর্জিত ২৮ দশমিক ৪১১ একর জমির তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে তার ক্রয় করা জমির মূল্য ৩৩ লাখ ৬৬ হাজার ১০ টাকা। সে অনুযায়ী তিনি হলফনামায় ২১ দশমিক ৯১ একর জমির তথ্য গোপন করেন এবং ক্রয় করা জমির মূল্য ৩১ লাখ ৯১ হাজার ১০ টাকা কম দেখানোর মাধ্যমে হলফনামায় অসত্য তথ্য দেন।
এছাড়াও শেখ হাসিনা মাগুরা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য প্রফেসর ডা. মোহাম্মদ সিরাজুল আকবরের সংসদ সদস্য পদের শুল্কমুক্ত কোটা ব্যবহার করে বেনামে ২ লাখ ৩০ হাজার ইউরো মূল্যে (গাড়ি আমদানির এলসির বিপরীতে ব্যাংক থেকে পরিশোধিত মোটে ১ কোটি ৯৩ লাখ ২০ হাজার টাকা) একটি মার্সিডিজ বেঞ্জ গাড়ি আমদানি করেন। সেখানে নিজ আবাসিক ঠিকানা সুধা সদন, বাড়ি নম্বর-৫৪, রোড নম্বর-৫, ধানমন্ডি, আবাসিক এলাকা, ঢাকার ঠিকানা ব্যবহার করেন। গাড়িটি রেজিস্টেশন করেন এবং নিজে ব্যবহার করেন। প্রফেসর ডা. মোহাম্মদ সিরাজুল আকবরের আয়কর নথি কিংবা নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনে দাখিল করা তার হলফনামায় আলোচ্য গাড়িটির বিষয়ে কোনও তথ্য উল্লেখ নেই এবং তিনি কখনও তা ব্যবহারও করেননি বলে জানা গেছে।
এ অবস্থায় দুদক বর্ণিত তথ্যেরর আলোকে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ‘গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২’ এর আওতায় হলফনামায় অসত্য তথ্য দেওয়ার বিষয়ে আইনানুগ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ারে অনুরোধ করছে।