‘অধ্যাদেশ সম্পূর্ণ প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত কাজে ফিরবো না’

‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ এর খসড়া সম্পূর্ণটা প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত সচিবালয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কাজে ফিরবেন না বলে ঘোষণা দিয়েছেন বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের সভাপতি বাদিউল কবীর।

রবিবার (২৫ মে) সচিবালয়ের প্রধান গেট আটকে বিক্ষোভ করার সময় তিনি এ ঘোষণা দেন।

বাদিউল কবীর বলেন, এই অধ্যাদেশের মাধ্যমে যে অপপ্রয়াস নেওয়া হচ্ছে, আমরা তাদের এই অপপ্রয়াস রুখে দেবো ইনশাআল্লাহ। এটি নিবর্তনমূলক আইন। সব ফটক আটকে সচিবালয় অচল করে দেওয়ার হুমকিও দেন কর্মচারী নেতারা। তারা বলেন, আমরা এ বিষয়ে অনেক উপদেষ্টা ও সচিবের সঙ্গে কথা বলেছি। কিন্তু, কেউ আমাদের আশ্বস্ত করতে পারেননি। আমরা বাধ্য হয়ে আন্দোলনের নেমেছি।

এ সময় বাদিউল কবীর বলেন, এই অধ্যাদেশ সম্পূর্ণ প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত আমরা কাজে ফিরবো না। আমরা সচিবালয়ের বাদামতলায় (৬ নম্বর ভবনের সামনে চত্বর) অবস্থান করবো।

জানা গেছে, ২০১৮ সালের সরকারি চাকরি আইন সংশোধনে অধ্যাদেশের খসড়া নিয়ে ক্ষুব্ধ সব পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। কারণ অধ্যাদেশের খসড়ায় শৃঙ্খলা বিঘ্নিত, কর্তব্য সম্পাদনে বাধা, ছুটি ছাড়া কর্মে অনুপস্থিত, কর্তব্য পালন না করার জন্য উসকানির জন্য আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে চাকরিচ্যুতির বিধান যুক্ত করা হয়েছে। গত ২২ মে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে ‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তবে এ বিষয়টি পর্যালোচনার জন্য চার জন উপদেষ্টাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। শনিবার (২৪ মে) সচিবালয়ে বিক্ষোভ করেন বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

আজ রবিবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে সচিবালয়ের ৬ নম্বর ভবনের সামনে বাদামতলায় কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সমবেত হতে থাকেন। ১০টা নাগাদ বিপুলসংখ্যক কর্মকর্তা-কর্মচারীতে পূর্ণ হয়ে যায় সচিবালয়ের এ চত্বর। ১০টার কিছু পর বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের একাংশের সভাপতি নূরুল ইসলাম ও মহাসচিব মুজাহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মিছিল শুরু হয়।

এরপর সেখানে যোগ দেন সভাপতি বাদিউল কবীর ও মহাসচিব নিজাম উদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বাধীন সংযুক্ত পরিষদের অপর অংশ। আন্তঃমন্ত্রণালয় কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশনসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অন্যান্য সংগঠন যোগ দেয় মিছিলে।

মিছিলে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ‘সচিবালয়ের কর্মচারী, এক হও লড়াই করো’, ‘অবৈধ কালো আইন, মানি না মানবো না’, ‘আমাদের দাবি আমাদের দাবি, মানতে হবে মানতে হবে’- ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।

৬ নম্বর ভবনের সামনে থেকে মিছিল শুরু হয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সামনে দিয়ে নতুন ভবন, ক্লিনিক ভবনের সামনে দিয়ে ১১ নম্বর ভবনের সামনে আসে। সেখানে কিছুক্ষণ অবস্থানের পর তারা মিছিল নিয়ে সচিবালয় এলাকা প্রদক্ষিণ করেন। এরপর তারা বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মিছিল নিয়ে ৪ নম্বর ভবনে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খানের সঙ্গে তার দফতরে দেখা করতে যান। তবে তিনি তখন দফতরে ছিলেন না। পরে মিছিল নিয়ে তারা সচিবালয়ের এক নম্বর ফটক বা প্রধান ফটকের কাছে গিয়ে বসে পড়েন। সেখানে সংযুক্ত পরিষদ ও আন্তঃমন্ত্রণালয় কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা বক্তব্য দেন।