‘গুম করে চোখ উঠিয়ে ফেলার’ ঘটনায় ট্রাইব্যুনালে ছাত্রদল নেতার অভিযোগ

গুম করে কুমিল্লা ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা ছাত্রদল নেতার চোখ উঠিয়ে ফেলার অভিযোগে কুমিল্লার সাবেক এমপি এমএ জাহেরসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

সোমবার (১৬ জুন) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বরাবর অভিযোগ দায়ের করেন কুমিল্লা মহানগরের ৩ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি গোলাম কিবরিয়া। এ সময় তার দুই ভাই ইয়াসিন আরাফাত ও মো. নেয়ামত রহমান উপস্থিত ছিলেন।

কুমিল্লা ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার মল্লিকার দিঘী গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল হাকিম ও সালেখা বেগমের ছেলে গোলাম কিবরিয়া (২৭) বর্তমানে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজতত্ত্ব বিভাগে অধ্যয়ন করছেন।

ট্রাইব্যুনালে যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে তারা হলেন– কুমিল্লা-৫ (বুড়িচং-ব্রাহ্মণপাড়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এমএ জাহের, ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আবু তৈয়ব অপি, ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার যুবলীগ নেতা আবু সাঈদ বাপ্পি, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মো. এমরান হোসেন, মো. পাবেল, মো. মোখলেছ, মো. রুবেল, আব্দুল জব্বার, মিরাজুল হক রিমন, অপহরণে ব্যবহৃত গাড়িচালক মো. শওকত, ব্রাহ্মণপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি এস এম বদিউজ্জামান, ব্রাহ্মাণপাড়ার থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সুমন কুমার আদিত্ত, আওয়ামী লীগ নেতা আবুল কালাম আজাদ, মেহেদী হাসান খাঁন, মঞ্জুরুল বারী নয়নসহ অজ্ঞাত আরও ২০-২৫ জন।

আবেদনে বলা হয়, ২০১৬ সালের ২০ আগস্ট রাতে ঢাকা থেকে ট্রেনে কুমিল্লা স্টেশনে নেমে নিজ বাসা কালিয়াজুরি যাওয়ার উদ্দেশে রিকশায় রওয়ার হন গোলাম কিবরিয়া। পথে রাত সোয়া ১টায় এমপি জাহেরের নেতৃত্বে ২০-২৫ আগ্নেয়াস্ত্রের মুখে রিকশার গতিরোধ করে। গোলাম কিবরিয়াকে অপহরণ করে জাহেরের মাইক্রোবাসে উঠিয়ে নেওয়া হয়। এরপর অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে রড দিয়ে শরীর ও মাথায় এলোপাতারি নির্যাতন করা হয়। এক পযায়ে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আবু তৈয়ব অপি ছুরি দিয়ে গোলাম কিবরিয়ার চোখ দুটি উঠিয়ে ফেলেন। তার আগে বৈদ্যুতিক শক দেওয়া হয় গোলাম কিবরিয়াকে। চোখ উপড়ে ফেলার পর তার চিৎকার শুনে লোকজন এগিয়ে এলে আসামিরা চলে যান। এর কিছুক্ষণ পর পুলিশ তাকে ওই অবস্থায় আটক দেখিয়ে ব্রাহ্মণপাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। পরে সেখান থেকে তাকে ঢাকার জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে রেফার করা হয়। এরপর সেখান থেকে মিথ্যা মামলায় কোর্টে চালান দেওয়া হয় গোলাম কিবরিয়াকে।

পরবর্তী সময়ে গোলাম কিবরিয়ার মায়ের কাছ থেকে ‍আসামিদের যোগসাজসে খালি স্ট্যাম্প ও সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে রাখে পুলিশ। যেন পরে তারা মামলা দায়ের করতে না পারে। আসামিদের অত্যাচার ও আইনশৃযঙ্খলা বাহিনীর নিযাতনের ভয়ে চেষ্টা করেও মামলা দায়ের করতে পারেনি বলেও অভিযোগে উল্লেখ করেন গোলাম কিবরিয়া।