বিদেশে থাকা হাছান মাহমুদ ও তার স্ত্রীর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বিদেশে পালিয়ে যাওয়া সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ হাছান মাহমুদ এবং তার স্ত্রী নূরান ফাতেমার দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত।

ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন গালিব দুদকের পৃথক দুটি আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার (২৩ জুন) এ আদেশ দেন।

দুদকের সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ) মো. তানজির আহমেদ এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

দুদকের সহকারী পরিচালক আল-আমিন তাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে পৃথক দুটি আবেদন করেন।

হাছান মাহমুদের বিরুদ্ধে আবেদনে বলা হয়, হাছান মাহমুদ বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়, তথ্য মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মন্ত্রী হিসেবে এবং সংসদ সদস্যের (এমপি’র) দায়িত্ব পালনকালে পাবলিক সার্ভেন্ট হিসেবে ক্ষমতার অপব্যবহার, অসৎ উদ্দেশ্যে অসাধু উপায়ে অর্জিত জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে সঙ্গতিবিহীন এক কোটি ১১ লাখ ৫৫ হাজার ৩১৮ টাকার সম্পদের মালিকানা অর্জন করে ভোগদখলে রেখেছেন। এটি অপরাধমূলক অসদাচরণ। তিনি তার নিজ, যৌথ ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের নামে ৯টি ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে ৩৯ কোটি ৭৬ লাখ ৩৭ হাজার ৫৬৭ টাকা সন্দেহজনক লেনদেন করেছেন। এই অর্থ হস্তান্তর, রূপান্তর, স্থানান্তরের মাধ্যমে মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে গত ৬ এপ্রিল দুদক মামলা করে। মামলার তদন্তকাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত এবং সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তার বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞার আদেশ প্রদান করা একান্ত জরুরি।

নূরান ফাতেমার বিরুদ্ধে দুদকের আবেদনে বলা হয়, নূরান ফাতেমা জ্ঞাত আয়ের উৎসবহির্ভূত ৫ কোটি ৫২ লাখ ৭৮ হাজান ১৯০ টাকা মূল্যের জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের মালিকানা অর্জন ও ভোগদখলে রাখেন। তিনি নিজ, যৌথ এবং তার প্রতিষ্ঠানের নামে বিভিন্ন ব্যাংকে পরিচালিত মোট ৫৬টি হিসাবে সর্বমোট ৬৮৩ কোটি ১৫ লাখ ৩৭ হাজার ৫৫৪ টাকা অস্বাভাবিক লেনদেন করেন। এই অর্থ রূপান্তর, স্থানান্তর ও হস্তান্তর প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে মানি লন্ডারিংয়ের সম্পৃক্ত ধারায় তিনি শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।

অপরদিকে স্বামী মোহাম্মদ হাছান মাহমুদ বিষয়ে আবেদনে বলা হয়, সাবেক বন ও পরিবেশমন্ত্রী, তথ্যমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং সংসদ সদস্য থাকার সময় পাবলিক সার্জেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে অসৎ উদ্দেশ্যে ক্ষমতার অপব্যবহার করে তার স্ত্রী নূরান ফাতেমাকে আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ ৫ কোটি ৫২ লাখ ৭৬ হাজার ৯০ টাকার সম্পদ অর্জন করতে সহায়তা করেন। নূরান ফাতেমা নিজ, যৌথ এবং তার প্রতিষ্ঠানের নামে বিভিন্ন ব্যাংকে পরিচালিত মোট ৫৬টি হিসাবে মানি লন্ডারিংয়ে সম্পৃক্ত অপরাধ, দুর্নীতি ও ঘুষের মাধ্যমে প্রাপ্ত অর্থ বা সম্পত্তির অবৈধ উৎস গোপন ও আড়াল করার উদ্দেশ্যে (রূপান্তর, স্থানান্তর ও হস্তান্তর করে) সর্বমোট ৬৮৩ কোটি ১৫ লাখ ৩৭ হাজার ৫৫৪ টাকার অস্বাভাবিক লেনদেন করেন। এটি দুদক আইনে অপরাধ। গত ৬ এপ্রিল দুদক তার বিরুদ্ধে মামলা করে। মামলার তদন্তকাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাদের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞার আদেশ প্রদান করা একান্ত জরুরি।