গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যার নিরপেক্ষ তদন্ত নিশ্চিতের দাবি আসকের

আন্তর্জাতিক নির্যাতনবিরোধী দিবস উপলক্ষে সব ধরনের নির্যাতনের বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেছে মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)। সংস্থাটি বলেছে, বিচারবহির্ভূত হত্যা, গুম, বেআইনি আটক, হেফাজতে মৃত্যু, নারী ও শিশু নির্যাতনসহ সব ধরনের অমানবিক ও অবমাননাকর আচরণ বন্ধে রাষ্ট্রকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।

বুধবার (২৫ জুন) এক সংবাদ বিবৃতিতে আসকের সিনিয়র সমন্বয়কারী আবু আহমেদ ফয়জুল কবির এ আহ্বান জানান।

আসকের বিবৃতিতে বলা হয়, ১৯৯৮ সালে বাংলাদেশ জাতিসংঘের ‘নির্যাতন ও অন্যান্য নিষ্ঠুর, অমানবিক ও অবমাননাকর আচরণ বা দণ্ডের বিরুদ্ধে কনভেনশন (সিএটি)’ অনুস্বাক্ষর করলেও বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে এখনও চরম ঘাটতি রয়ে গেছে। বিচারবহির্ভূত হত্যা, গুম ও হেফাজতে নির্যাতনের মতো গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় বিচারিক প্রক্রিয়ার অনুপস্থিতি উদ্বেগজনক। ২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাসেই গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যানুযায়ী অন্তত ১৫টি বিচারবহির্ভূত মৃত্যুর অভিযোগ এসেছে, যার অধিকাংশেরই কোনও নিরপেক্ষ তদন্ত হয়নি।

আসক মনে করে, এমন বাস্তবতায় ‘নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইন, ২০১৩’-এর সঠিক ও কার্যকর প্রয়োগ নিশ্চিত করা জরুরি। পাশাপাশি নির্যাতনের প্রতিটি অভিযোগের ক্ষেত্রে স্বাধীন, স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ তদন্ত পরিচালনার দাবি জানানো হয় বিবৃতিতে। 

তদন্ত শেষে সংশ্লিষ্ট দায়ীদের আইনের আওতায় এনে বিচার নিশ্চিত করার পাশাপাশি ভুক্তভোগী পরিবারগুলোকে ক্ষতিপূরণ ও আইনি সহায়তা প্রদানের আহ্বান জানায় সংগঠনটি।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকাণ্ডে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে একটি স্বাধীন পর্যবেক্ষণ ও মনিটরিং ব্যবস্থাও গড়ে তুলতে হবে।

আসক আন্তর্জাতিক নির্যাতনবিরোধী দিবসে সব নির্যাতনের শিকার মানুষের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে বলেছে, মানবিক রাষ্ট্র গড়ে তুলতে হলে মানবাধিকারের প্রতি অঙ্গীকার থাকতে হবে দৃঢ় ও আপোষহীন। বাংলাদেশের যেসব আন্তর্জাতিক চুক্তিতে সই রয়েছে, তার বাস্তবায়নে রাষ্ট্রকে রাজনৈতিক সদিচ্ছার প্রমাণ রাখতে হবে। যাতে প্রতিটি নাগরিকের নিরাপত্তা ও মর্যাদা সংরক্ষিত থাকে।