প্রান্তিকদের খামারিদের জন্য সরকারি সহায়তা ও স্বল্প সুদের ঋণ ব্যবস্থা করাসহ ১০ দফা দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ)। সোমবার (৭ জুলাই) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির শফিকুল কবির মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, গত ছয় মাসে অন্তত ১০ হাজার ক্ষুদ্র ও মাঝারি খামার বন্ধ হয়েছে। একটি খামার বন্ধ মানে শুধু মুরগি বা ডিমের উৎপাদন কমে যাওয়া নয়, বরং একটি পরিবার আয় হারাচ্ছে, একজন যুবক বেকার হয়ে যাচ্ছে, একটি সংসার ঋণের নিচে ডুবে যাচ্ছে।
তারা বলেন, বাজার ব্যবস্থায় এখন বৈষম্যের অবস্থা বিরাজ করছে। এখানে দুই ধরনের খামারি রয়েছে; একটি বড় প্রতিষ্ঠানের অধীনে কন্ট্রাক্ট ফার্মিং খামার এবং অন্যটি স্বাধীন, প্রান্তিক খামার। যেখানে কন্ট্রাক্ট ফার্মিং খামার নির্দিষ্ট মূল্যে পণ্য বিক্রি করতে পারে, সেখানে প্রান্তিক খামারিরা প্রতিনিয়ত বাজারের ওঠানামার সঙ্গে লড়াই করেন; কখনও লাভ, কখনও ক্ষতি। এই পরিস্থিতিতে টিকে থাকা একেবারেই কঠিন হয়ে পড়েছে।
বক্তারা বলেন, বাজারের ডিম-মুরগির চাহিদার ১০ থেকে ২০ শতাংশ উৎপাদন করে করপোরেট কোম্পানি এবং তাদের কন্টাক্ট ফর্মিংয়ের মাধ্যমে। কোম্পানি ও কন্টাক্ট ফর্মিংয়ের মাধ্যমে উৎপাদন বন্ধ করুন। প্রান্তিক খামারিদের ৯০ শতাংশ উৎপাদনকে ন্যায্য দাম দিয়ে তাদের উৎপাদনে ধরে রাখুন। তা না হলে এক সময় সস্তার প্রোটিন ডিম ও মুরগি বড়লোকের পণ্য হয়ে যাবে।
বিপিএ’র ১০ দফা দাবি হলো– জাতীয় পোল্ট্রি শুমারি ও ডিজিটাল ডাটাবেজ তৈরি; সব ডিলার খামারি ব্যবসায়ীকে উদ্যোক্তা আইডি কার্ড দেওয়া; নিবন্ধন, ট্রেড লাইসেন্স, প্রশিক্ষণ ও নীতিনির্ধারণী সরকারি মিটিং প্রান্তিক খামারিদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা; প্রান্তিক খামারিদের জন্য সরকারি সব ধরনের নীতিগত সহায়তা ও জামানতবিহীন স্বল্পসুদের ঋণ ব্যবস্থা করা; ফিড, ভ্যাকসিন ও ওষুধের দামে স্বচ্ছতা ও নিয়ন্ত্রণ করা; সরকারিভাবে ফিডমিল ও হ্যাচারি স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া; আধুনিক প্রযুক্তি, প্রশিক্ষণ ও ল্যাব সুবিধা সম্প্রসারণ এবং জেলা-উপজেলায় কোল্ড স্টোরের ব্যবস্থা করা; স্মার্ট বাজার ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ন্যায্য মূল্য ও বাজার সংযোগ নিশ্চিত করা; নিরাপদ ও পরিবেশবান্ধব পদ্ধতিতে ডিম-মুরগি উৎপাদন ও বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে বিদেশে রফতানির ব্যবস্থা করা; বাজার ধসসহ বিভিন্ন সংকটকালীন প্রতিকূলতায় সময় প্রান্তিক খামারিদের জন্য প্রণোদনা ও ভর্তুকি ব্যবস্থা করা এবং সুষ্ঠু কন্ট্রাক্ট ফার্মিং নীতিমালা প্রণয়ন ও জাতীয় পোল্ট্রি উন্নয়ন ডেভলপমেন্ট বোর্ড গঠন করা।
সংগঠনের সভাপতি সুমন হাওলাদারের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে ছিলেন– সহ-সভাপতি বাপ্পি কুমার দে, সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খন্দকার, সাংগঠনিক সম্পাদক ইকবাল হোসেন, দফতর সম্পাদক মেজবাউল হক মারুফিসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার প্রান্তিক খামারিরা।