করদাতা কোম্পানির আয়কর নথি গায়েব করে ১৪৬ কোটি ৫৭ লাখ ৪৬ হাজার ৫৫৩ টাকার সরকারের রাজস্ব ক্ষতির প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বুধবার (৯ জুলাই) দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে ঢাকার কর অঞ্চল-৫ এর সার্কেল-৯০ এ পরিচালিত অভিযানে এই সত্যতা পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির সহকারী পরিচালক ও জনসংযোগ কর্মকর্তা তানজির আহমেদ।
দুদকের এই কর্মকর্তা জানান, করদাতা কোম্পানির আয়কর নথি গায়েব করে ১৪৬ কোটি ৫৭ লাখ ৪৬ হাজার ৫৫৩ টাকার সরকারের রাজস্ব ক্ষতির অভিযোগে ঢাকার কর অঞ্চল-৫, সার্কেল-৯০ (কোম্পানী) এ একটি এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযানকালে সংশ্লিষ্ট কর সার্কেলের রেকর্ডপত্র পর্যালোচনায় দেখা যায়, ২০২২-২০২৩ করবর্ষের মাসিক কর নির্ধারণ রেজিস্ট্রার (রেজিস্ট্রার-০৪) এর পৃষ্ঠা নং ৩ এর ৪৪ ও ৪৫ নং ক্রমিকে টিআইএন নং- ৩৪************২০ ধারী প্রতিষ্ঠানের যথাক্রমে ২০২০-২০২১ ও ২০২১-২০২২ করবর্ষের দুটি মামলা রয়েছে। মামলা দুটির বিপরীতে তৎকালীন উপকর কমিশনারের মাধ্যমে নিরুপণ করা আয়ের বিপরীতে করদাবির পরিমাণ যথাক্রমে ৭২ কোটি ৯৬ লাখ ৬ হাজার ৮৬২ টাকা ও ৭৩ কোটি ৬১ লাখ ৩০ হাজার ৯৯০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। পরবর্তীতে এই মামলা দুটি জাতীয় রাজস্ব বোর্ড অডিটের জন্য নির্বাচিত করে। তৎকালীন বদলি হয়ে আসা নতুন দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নথিতে রক্ষিত করনির্ধারণী আদেশ মোতাবেক কর মামলা দুটিতে করদাবির পরিমাণ নির্ধারণ করা হয় যথাক্রমে ০ (শূন্য) টাকা ও ১,২৯৯/- টাকা। তবে অভিযানকালে ১৪৬ কোটি ৫৭ লাখ ৪৬ হাজার ৫৫৩ টাকা কম কর নির্ধারণকারী কর্মকর্তার কর নির্ধারণী আদেশের সংশ্লিষ্ট মূল ফাইলগুলো খুঁজে পাওয়া যায়নি। যা উদ্দেশ্যমূলকভাবে গায়েব করা হয়েছে মর্মে দুদক কর্মকর্তারা মনে করেন। অভিযানের সময় পাওয়া এই ব্যাপক অনিয়মের তথ্য উপাত্তের আলোকে কমিশনের পরবর্তী সিদ্ধান্তের জন্য পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।
দুদক কর্মকর্তা তানজির আহমেদ আরও জানান, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের অসাধু কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঘুষের বিনিময়ে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কর মওকুফ করে সরকারের রাজস্ব ক্ষতিসাধন এবং জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করার অভিযোগে আরেকটি অভিযান চালানো হয়েছে। সেই অভিযানে অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ের লক্ষ্যে দুদকের এনফোর্সমেন্ট টিম রাজধানীর মোহাম্মদপুরের সাব-রেজিস্ট্রারের অফিসকে দলিল যাচাইয়ের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। পরবর্তীতে মোহাম্মদপুর ভূমি অফিস থেকে সংশ্লিষ্ট রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করা হয়। এরপর অবৈধ সম্পদ অর্জন সংক্রান্ত অভিযোগ যাচাইয়ের জন্য সংশ্লিষ্ট এলাকা পরিদর্শন করে দুদক টিম। অভিযানকালে সংগৃহীত রেকর্ডপত্র পূর্ণাঙ্গরূপে পর্যালোচনাপূর্বক এনফোর্সমেন্ট টিম কমিশন বরাবর বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিল করবে।