চিম্বুক পাহাড়ে হোটেল নির্মাণের প্রতিবাদে ম্রোদের সংহতি সমাবেশ

বান্দরবানের চিম্বুক পাহাড়ে পাঁচ তারকা হোটেল ও বিনোদন পার্ক নির্মাণের প্রতিবাদে সংহতি সমাবেশ করেছে ‘চিম্বুক পাহাড় ম্রো ভূমি রক্ষা আন্দোলন’।  মঙ্গলবার (২ মার্চ) সকালে রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, সম্প্রতি চিম্বুকের নাইতং পাহাড়ে ম্রো অধ্যুষিত অঞ্চলে একটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান পাঁচ তারকা হোটেল ও বিনোদন পার্ক নির্মাণের কাজ শুরু করেছে। তাদের শঙ্কা প্রকল্পটি বাস্তবায়নের কারণে চিম্বুক ও নাইতং পাহাড়ে শতাব্দীকাল যাবৎ জুম চাষ করে আসা ম্রো জনগোষ্ঠী তাদের বসতভিটা, শ্মশান, পানির উৎস ইত্যাদি থেকে উচ্ছেদ হবে। এমনকি এর কারণে ছয়টি গ্রামের বাসিন্দারা সরাসরি এবং ১১৬টি পাড়ার আনুমানিক ১০ হাজার বাসিন্দা বিভিন্নভাবে স্থায়ী ক্ষতির সম্মুখীন হবে।

সমাবেশ থেকে পাঁচ দফা দাবি জানানো হয়। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে— ম্রো জনগোষ্ঠীর জীবন-জীবিকা, সংস্কৃতি ও নিরাপত্তার দাবির প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়ে ম্রো অধ্যুষিত এলাকায় কোনও রকম বিনোদন পার্ক নির্মাণ প্রকল্প বাতিল, পরিবেশ ও প্রতিবেশের প্রতি হুমকি সৃষ্টিকারী পর্যটনসহ উন্নয়নের নামে অবাধ ও পূর্বাবহিত সম্মতি ব্যতিরেকে অন্যান্য সব প্রশাসনিক ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড অবিলম্বে বন্ধ,আন্দোলনরত জনগোষ্ঠীকে ভয়-ভীতি প্রদর্শন, নানা ধরনের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ খতিয়ে দেখা ও যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

ম্রোদের সঙ্গে যা করা হচ্ছে এটি অন্যায় উল্লেখ করে সংহতি সমাবেশে বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং বলেন,‘ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ১৪টি ভাষা এরইমধ্যে হারিয়ে গেছে। এভাবে চলতে থাকলে আগামীতে আরও খারাপ পরিস্থিতি হবে।’

বান্দরবানে আলাদা করে ইকো রিসোর্ট করার প্রয়োজন নেই, পুরো বান্দরবানই ইকো রিসোর্ট উল্লেখ করে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘বাংলাদেশের বনে যদি এভাবে রিসোর্ট হতে থাকে, তাহলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য আমরা কোনও প্রাকৃতিক বৈচিত্র্য রেখে যেতে পারবো না।’

সমাবেশে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী শাহীন আনাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক রুবায়েত ফেরদৌস, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা ফজলে হোসেন বাদশা, অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এএলআরডি), বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট), বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি),আদিবাসী যুব ফোরামসহ আরও অনেক সংগঠন সংহতি জানায়।