কোথায় যাচ্ছেন, কেন যাচ্ছেন জানেন না নিজেই!

জরুরি ওষুধ সরবরাহ লেখা স্টিকার লাগিয়ে উত্তরার দিকে যাচ্ছিলেন আলামিন। মিরপুর ১ নাম্বার পুলিশি জেরার মুখে পড়েন তিনি। এ সময় কোথায় যাচ্ছেন, কী কাজে যাচ্ছেন তা পুলিশের কাছে যথাযথ বলতে পারেননি। একেক সময় একেক ধরনের কথা বলছিলেন। ছিল না বাইরে বের হওয়ার জন্য তার কাছে মুভমেন্ট পাস কিংবা পরিচয় দেওয়া ওষুধ কোম্পানির কোনও ডকুমেন্ট। পরে মামলা করা হয়।

মিরপুর জোনের ট্রাফিক সার্জেন্ট কামরুজ্জামান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, প্রাইভেটকারে একাধিক ব্যক্তি কোনও কারণ ছাড়া যদি বের হয়ে থাকেন সে বিষয়টি আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করছি। মোটরসাইকেল পরিবারের সদস্য ছাড়া যেগুলো ভাড়ায় চলছে সেগুলো যদি চেকপোস্টে প্রতীয়মান হয় তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

শাহ আলী থানার পরিদর্শক (অপারেশন) জাহেদুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, জরুরি যেসব সার্ভিস রয়েছে সেসব যানবাহন কিংবা কর্তব্যরত লোকজনকে বাধা দেওয়া হচ্ছে না। আজ মোটামুটি গাড়ির চাপ রয়েছে। যারা অযথা বের হচ্ছেন বলে পুলিশের কাছে মনে হচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হচ্ছে।

কাঁচামাল ব্যবসায়ী অর্পণ যাচ্ছিলেন তার সহকর্মীকে নিয়ে রাজধানীর মৌলভীবাজার আড়তে। গাবতলি চেকপোস্টে পুলিশি জেরার মুখে পড়েন তারা। পুলিশকে জানান, আলু কিনেছেন তারা। ‌আলুগুলো পচা কিনা তা দেখতে যাচ্ছেন। তাদের সঙ্গে ছিল না কোনও মুভমেন্ট পাস। পুলিশি জেরায় শুরু হয় নানান যুক্তি। এ সময় তাদের ১ হাজার টাকার মামলা দেওয়া হয়।

শহিদুল ইসলাম আমিন বাজার এলাকার বাসিন্দা। তিনি তার এক কর্মচারীকে নিয়ে যাচ্ছিলেন গাবতলিতে। তার কাছে ছিল না মোটরসাইকেল-এর কাগজপত্র। ছিল না ড্রাইভিং লাইসেন্সও। কাগজপত্র না থাকায় মোটরসাইকেলটি ডাম্পিংয়ের দেওয়া হয়।

এছাড়া আনোয়ার হোসেন নামে এক ব্যক্তি চেকপোস্টে এসে জরুরি সেবা পরিচয় দিলেও তিনি যাচ্ছিলেন অন্য আরেকজনকে নামিয়ে দিতে। এ বিষয়টি পুলিশের কাছে যুক্তিযুক্ত না হয় তাকে আবার ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

দারুস সালাম জোনের ট্রাফিক সার্জেন্ট প্রিয়ংকর রায় বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, যারা জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বের হচ্ছে না তাদের আবার ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া যৌক্তিক কারণ আমাদের কাছে মনে না হলে আমরা মামলা দিচ্ছি। জরুরি সেবায় নিয়োজিত প্রতিষ্ঠান, যানবাহন কিংবা ব্যক্তিদের বাধা দেওয়া হচ্ছে না। তারা তাদের পরিচয়পত্র দেখিয়ে যেকোনও চেকপোস্ট থেকেই গন্তব্যে যেতে পারছেন।

মিরপুর জোনের ট্রাফিক সার্জেন্ট মামুন-অর-রশিদ বাংলা ট্রিবিউন কে বলেন, মানুষ যদি সচেতন না হয় তাহলে করো না সংক্রমণ ঝুঁকি এড়ানো সম্ভব নয়। যারা অপ্রয়োজনে ঘোরাফেরা করছেন বাইরে বের হচ্ছেন তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

মোহাম্মদপুর জোনের ট্রাফিক সার্জেন্ট মোখলেছুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, মামলা কিংবা জরিমানা করে জনগণকে সচেতন করা সম্ভব নয়। যদি না জনগণ কিংবা ব্যক্তি নিজে থেকে সচেতন না হন। আমরা সারাদিন গরমের মধ্যে রোদে থেকে জনগণের সেবায় নিয়োজিত রয়েছে। অপ্রয়োজনে সংক্রমণের ঝুঁকির কারণ না হতে নগরবাসীর প্রতি আহ্বান জানান তিনি।