‘শ্রমিক কল্যাণের টাকা কোথায় যায় তা নেতারাই জানেন’

পরিবহন থেকে শ্রমিক কল্যাণের নামে আদায় করা অর্থ শ্রমিকদের জন্য তেমন একটা ব্যয় হয় না- এমনই অভিযোগ করেছেন গণপরিবহন শ্রমিকরা। তাদের দাবি, লকডাউনে তারা কর্মহীন হলেও মালিক ও শ্রমিক সংগঠনগুলো থেকে তারা তেমন একটা সহযোগিতা পাননি। তবে নামমাত্র কয়েকটি ত্রাণ বিতরণ কর্মসূচি হলেও তা খুবই অপ্রতুল।

এদিকে লকডাউনে পরিবহন চালুর দাবিতে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের সব বাস টার্মিনালে অবস্থান ধর্মঘট পালন করছে পরিবহন শ্রমিকরা। আন্তঃজেলা বাস চলাচলের অনুমতি দেওয়ার দাবিতে এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন তারা।

শুক্রবার (১৪ মে) সকাল ১০টার দিকে বগুড়া, নওগাঁ ও রাজশাহী রুটে চলাচলকারী একতা পরিবহনের শ্রমিক মো. মামুন বলেন, এই সেক্টরে জোর যার মুল্লুক তার। এই যে দেখেন টার্মিনালে আজ এক নেতা চার পাতিল বিরিয়ানি রান্না করেছে। তার মধ্যে এক পাতিল উধাও হয়ে গেছে। সেগুলো বড় বড় নেতারা খাবে। আর আমরা চেয়ে থাকবো। অনেক কিছু জানতেও পারবো না। সব কিছুই কিন্তু এমন।

তিনি আরও বলেন, শ্রমিকদের কল্যাণের জন্য টাকা নেওয়া হয়, মাঝে মধ্যে দুই চারজন পায়। এটা তো দেখানোর জন্য করা হয়। আর আমরা সাধারণ শ্রমিকরা কাজও বেশি করি, কষ্টও বেশি পাই।

ক্ষোভ প্রকাশ করে সামছুল ইসলাম নামে অপর এক শ্রমিক বলেন, আজ ধর্মঘট ডাকা হয়েছে। সব শ্রমিকরাই যেতে বাধ্য। কিন্তু দেখবেন কেউই নেতাদের বিরুদ্ধে কথা বলবে না। কারণ কথা বললে, তাদের পদ থাকবে না। শ্রমিক কল্যাণের টাকা কোথায় যায় সেই বিষয়টি শ্রমিক নেতারাই বলতে পারবেন।

তিনি আরও বলেন, আজ সব সেক্টরের লোকজন সরকার থেকে প্রণোদনা পাচ্ছে। করোনাকালে সব চেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত আমরা শ্রমিকরা। কিন্তু আমরা সরকার থেকে একটা টাকাও পাইনি। তাহলে কাদের জন্য এই সহযোগিতা? তবে এটাও সত্য শ্রমিক সংগঠনগুলো যে টাকা উঠায় তা দিয়ে সারাদেশের হাজার হাজার শ্রমিকের চাহিদা মেটানো সম্ভব নয়।

জানতে চাইলে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্যাহ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, বর্তমানে গেট পাশের নামে কোনও চাঁদা আদায় করা হচ্ছে না। এজন্য আমরা সব শ্রমিক সংগঠন ও কোম্পানিগুলোকে কঠোরভাবে নির্দেশনা দিয়েছি। যারা এটা আদায় করবেন তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তিনি আরও বলেন, শ্রমিক ও মালিক সংগঠনগুলো শ্রমিকদের পক্ষে রয়েছে। তারা এ পর্যন্ত চার থেকে পাঁচবার ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করেছে। কিন্তু যে পরিমাণ করা হচ্ছে তা ৫০ লাখ শ্রমিকের জন্য খুবই অপ্রতুল।

তিনি আরও বলেন, আমরা এ জন্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে দূরপাল্লার গণপরিবহন চালুর দাবি জানাচ্ছি। শ্রমিকদের জন্য ১০ টাকা মূল্যের ওএমএসের চাউল চাচ্ছি।

তবে এই অভিযোগের বিষয়ে শ্রমিক ফেডারেশনের কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।