চন্দ্রিমায় তিল ধারণের ঠাঁই নেই

রাজধানীবাসীর ঈদ উদযাপনের অন্যতম অনুষঙ্গ বিনোদন কেন্দ্রগুলো এবার দর্শনার্থীদের জন্য বন্ধ। করোনা মহামারির বিস্তার রোধে কর্তৃপক্ষ অনেক আগে থেকেই এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। তবে পরিবার-পরিজনের সঙ্গে বাসায় ঈদের আনন্দ পালনের আহ্বান জানানো হলেও অসংখ্য মানুষের ভিড় জমেছে চন্দ্রিমা উদ্যানে। এমনকি বন্ধ চিড়িয়াখানায় গিয়ে ঢোকার জন্য ভিড় করে দাঁড়িয়ে থেকে ‍ঢুকতে না পেরে ফিরে এসেছে হাজারো মানুষ।

মানুষ আর মানুষরাজধানীর চন্দ্রিমা উদ্যানে ঈদের বিকালে গিয়ে দেখা যায়, কেবল মানুষ আর মানুষ। শিশু থেকে বৃদ্ধ কেউই বাদ যাননি। কমবেশি সবার সঙ্গে মাস্ক থাকলেও সেটির ব্যবহার নেই। সপরিবারে বন্ধুরা মিলে বড় গ্রুপ করে ঘুরতে এসেছে অনেকেই। লেকের দুই পাড়ে, মাঠের মধ্যে, ব্রিজের ওপরে মানুষের ভিড়।

এদিকে, দুপুর থেকে রাজধানীর চিড়িয়াখানার সামনে জড়ো হতে থাকে মানুষ। বরাবরের মতো ঈদের দিন বেড়াতে আসার অভ্যাস থেকে তারা হাজির হয়েছেন সেখানে; কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে চিড়িয়াখানা বন্ধ ঘোষণা থাকায় তাদের নিরাশ হয়ে ফিরতে হয়েছে।

.পাঁচ বছরের শিশুকে নিয়ে মিরপুর ১৪ নম্বর থেকে এসেছেন শরিফুল। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘করোনায় শিশুরা এক বছরেরও বেশি সময় বের হয় না কোথাও। ঈদের দিন ঢাকা ফাঁকা শুনে এখানে এসেছিলাম। কিন্তু শুনলাম বন্ধ।’ পাশ থেকে আরেকটি গ্রুপের কয়েকজন একসঙ্গে বলতে থাকেন, ‘চিড়িয়াখানা বিশাল এলাকা, এখানে তো শপিং মলের মতো বদ্ধ পরিবেশ না। তাহলে কেন বন্ধ রাখা হবে।’ তাদের কয়েকজনকে ভেতরে যেতে দেওয়ার জন্য মিনতি করতেও দেখা যায়।

এদিকে, চন্দ্রিমায় দুপুরের পর থেকে বাড়তে থাকে ভিড়। মূলত বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্রে গিয়ে প্রবেশ করতে না পেরে এখানে এসেছেন অনেকে। মোহাম্মদপুর থেকে আসা মরিয়ম বলেন, ‘সকাল থেকে কিছু আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে দুপুরে খেয়ে আমরা সবাই ঘুরতে বেরিয়েছিলাম। কোথাও তেমন কোনও জায়গা না পেয়ে এখানে এসেছি। সন্ধ্যার মধ্যেই ফিরে যাবো।’

মহামারি করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাওয়ায় গত ২৯ মার্চ সব ধরনের জনসমাগম সীমিত করা হয়। উচ্চ সংক্রমণ আছে এমন এলাকায় সব ধরনের জনসমাগম নিষিদ্ধ করে ১৮ দফা নির্দেশনা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। করোনাভাইরাসের বিদ্যমান পরিস্থিতিতে রাজধানীর মিরপুরে জাতীয় চিড়িয়াখানা ও রংপুর চিড়িয়াখানা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। এজন্য গত ২ এপ্রিল থেকে চিড়িয়াখানাটি বন্ধ করে দেওয়া হয়।

ছবি: নাসিরুল ইসলাম