করোনায় মৃত প্রতি লাশ দাফনে সিটি করপোরেশনের খরচ ১৮ হাজার টাকা

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করা ৪২৪ জনের লাশ দাফনে ৭৬ লাখ ৩২ হাজার টাকা খরচ করেছে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন (উত্তর ও দক্ষিণ)। এসব লাশের গোসল, দাফন ও কাফনের জন্য আল মারকাজুল ইসলাম, রশিদ ফাউন্ডেশন, কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন এবং রহমতে আলম সমাজ সেবা সংস্থাকে প্রথম দুই মাস এই অর্থ প্রণোদনা দেওয়া হয়। এ হিসেবে প্রতিটি লাশের পেছনে সংস্থা ‍দুটির খরচ হয়েছে ১৮ হাজার টাকা।

এ ছাড়া আরও ৬১ জনের জন্য ৯ হাজার টাকা করে ৫ লাখ ৪৯ হাজার টাকা পরিশোধ করে দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। এর বাইরে আরও ৯৩৭টি লাশ দাফনে ১৩ লাখ ৬৮ হাজার ২০ টাকা ব্যয় করেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন। দুই সিটি করপোরেশন সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন সূত্র জানিয়েছে, মহামারির শুরু দিকে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে কেউ মৃত্যুবরণ করলে তার লাশ গোসল ও দাফনে আত্মীয়-স্বজনদের অনীহা দেখা যায়। প্রথম দুই মাস এই আতঙ্ক বিরাজ করে। তখন আল মারকাজুল ইসলাম, রশিদ ফাউন্ডেশন, কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন এবং রহমতে আলম সমাজ সেবাসহ কয়েকটি সামাজিক সংগঠন লাশ দাফনে এগিয়ে আসে।

তারা মৃত ব্যক্তির লাশ গ্রহণ করে গোসলসহ যাবতীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে দাফনের ব্যবস্থা করতো। এজন্য প্রতিটি লাশ বাবদ ১৮ হাজার টাকা করে পরিশোধ করে দুই সিটি করপোরেশন। এই অর্থের অর্ধেক দক্ষিণ ও বাকি অর্ধেক উত্তর সিটি করপোরেশন বহন করে।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করলে যখন ছেলে তার বাবার লাশ ধরতো না, শেষ বিদায় জানাতেও যেতো না মানুষ তখন এই সংগঠনগুলো এগিয়ে আসে। তারা প্রতিটি লাশ গোসলের আগে বিশেষ জীবাণুনাশক দিয়ে স্প্রেসহ পুরো আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতো। এজন্য আমাদের সমাজসেবা ও বস্তি উন্নয়ন বিভাগ থেকে প্রতিটি লাশের জন্য ১৮ হাজার টাকা করে পরিশোধ করি। এর মধ্যে অর্ধেক অর্থ বহন করে দক্ষিণ সিটি করপোরেশন।

জানতে চাইলে ডিএসসিসির উপ-সমাজকল্যাণ ও সাংস্কৃতিক কর্মকর্তা মো. লুৎফর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, করোনার প্রথম ঢেউয়ে গত বছরের ২৯ মার্চ থেকে ৩১ মে পর্যন্ত আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া ৪৮৫ জনের লাশ গোসল, দাফন ও কাফনের জন্য ৪৩ লাখ ৬৫ হাজার টাকা ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনকে পরিশোধ করেছি। তারাই লাশ দাফনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে অর্থ পরিশোধ করতো। এখন মানুষের মাঝে আগের মতো সেই আতঙ্কও নেই। সচেতনভাবে মানুষ লাশ দাফন করে। সেজন্য এখন আর লাশ দাফনে অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয় না।