হল ও ক্যাম্পাস খুলে দেওয়ার দাবিতে সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের সমাবেশ

স্বাস্থ্যবিধি মেনে অবিলম্বে হল ও ক্যাম্পাস খুলে দেওয়ার দাবিতে সমাবেশ করেছে সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। 

শুক্রবার (১১ জুন) বিকাল সাড়ে চারটায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মুক্তি ও গণতন্ত্র তোরণের সামনে 'সাত কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীবৃন্দ'র ব্যানারে এ সমাবেশ করা হয়। 

সমাবেশ সঞ্চালন করেন বাংলা কলেজের শিক্ষার্থী রিয়াদ হোসেন ও ইডেন কলেজের শিক্ষার্থী শাহিনুর সুমি এবং সভাপতিত্ব করেন ইডেন কলেজের শিক্ষার্থী সায়মা আফরোজ।

সমাবেশে সংহতি জানিয়ে অভিভাবক ইসহাক সরকার বলেন, 'আমি খুব শঙ্কিত হই যখন দেখি আমার বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া মেয়ে সারাদিন মোবাইলের দিকে তাকিয়ে থাকে, তার খাওয়া-দাওয়ার কোনও ঠিক নেই। আমি অবাক হই যখন দেখি আমার ক্লাস এইটপড়ুয়া মেয়ে ফেইসবুকে স্ট্যাটাস দেয়, ''আর ভালো লাগছে না, প্রয়োজনে জেলখানায় বন্দী হতে চাই।'' আমি প্রতিদিন বেরিয়ে লকডাউন খুঁজি, পত্র পত্রিকায় খুঁজি, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে খুঁজি। আমি শঙ্কিত এই ভেবে যে, কোনদিন শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ডের পরিবর্তে শাসনই জাতির মেরুদণ্ড ঘোষণা করা হয়। সরকার আন্দোলনের ভয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিচ্ছে না।'

প্রকৌশলী এনামুল হক বলেন, 'শিক্ষার্থীদেরকে বোঝানো হয়েছে পড়ালেখা করার দরকার নেই ছাত্রলীগ করলেই চাকরি পাবে। তার বাস্তবায়ন দেখেছি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগের মধ্য দিয়ে।'

সভাপতির বক্তব্যে সায়মা আফরোজ বলেন, ' মহামারীর কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণার ১৫ মাস পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত কর্তৃপক্ষ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার কোনো পরিকল্পনা গ্রহণ করতে পারে নাই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় একাডেমিক কাউন্সিলে হল না খুলে সশরীরে পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সশরীরে পরীক্ষা নেয়ার আগে শিক্ষার্থীদের সময় দিতে হবে। ক্লাস না নিয়ে, সময় না দিয়ে পরীক্ষা আপনারা নিতে পারেন না। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কোনো সার্টিফিকেট বিক্রির কারখানা না।’

এ সময় তিনি আরও বলেন, ' আগামী ১৪ তারিখ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য ও সাত কলেজের শিক্ষকদের বসার কথা আছে। আমরা ওই দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করব। আমাদের প্রস্তুতি নেয়ার জন্য কমপক্ষে তিন মাস সময় দিতে হবে। আমরা এখানে পরীক্ষার রুটিন ঘোষণা করার জন্য আন্দোলন করছি না। আমরা বলতে চাই, স্বাস্থ্যবিধি মেনে অবিলম্বে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দিতে হোক৷ভ্যাকসিনের অজুহাত আমাদের দেখাবেন না। ১৪ জুন শিক্ষার্থীবান্ধব সিদ্ধান্ত না নিলে আমরা পুরো ঢাকা শহর অচল করে দিতে বাধ্য হব। আপনারা যদি মনে করেন 'জাতির মেরুদণ্ড' রক্ষা করতে হবে, তাহলে আপনার শিক্ষার্থীবান্ধব পরিকল্পনা গ্রহণ করবেন।'

সমাবেশে প্রস্তাবিত বাজেটে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের ওপর আরোপিত ১৫% কর বাতিলেরও দাবি জানান তারা।

এসময় সংহতি জানিয়ে সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন লেখক মাহমুদুল হক আরিফ, ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী ইসমাইল সম্রাট, শিক্ষানবিশ আইনজীবী সাজিদ রহমানসহ আরো অনেকে।