জবির মাঠে মার্কেট বানাবে ডিএসসিসি!

পুরান ঢাকার গেন্ডারিয়ার ধূপখোলা মাঠে মার্কেট ও পার্ক নির্মাণের পরিকল্পনা নিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। ইতোমধ্যে মাঠের চার কর্নারে খুঁটি বসানো হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে না জানিয়ে মাঠের মধ্যে মার্কেট নির্মাণের এমন পরিকল্পনা নজরে আসায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বিষয়টি নিয়ে আন্দোলনও শুরু করেছেন শিক্ষার্থীরা।

মাঠ ও পার্ক সংক্রান্ত ডিএসসিসি’র একটি পুরনো প্রতিবেদনে বলা হয়েছে- মাঠটি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মালিকানাধীন। এটি তিন ভাগে বিভক্ত। একটি অংশ স্থানীয় খেলার মাঠ। দ্বিতীয়টি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় মাঠ এবং অপরটি ইস্টার্ন ক্লাব মাঠ। ঢাকা মৌজায় অবস্থিত মাঠটির আয়তন ৬ দশমিক ৯৩ একর। এর চারপাশে পাকা মার্কেট রয়েছে। মার্কেটটি সিটি করপোরেশনের রাজস্ব বিভাগ থেকে পরিচালিত হচ্ছে।

দক্ষিণ সিটির এমন সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে গত বৃহস্পতিবার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রতিবাদ জানিয়ে ডিএসসিসি মেয়রের কাছে একটি চিঠি পাঠায়। এ ছাড়া মার্কেট নির্মাণের পরিকল্পনার বিরুদ্ধে রবিবার (২০ জুন) শিক্ষার্থীরা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন।

জবির মাঠএসময় শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘ধূপখোলা আমাদের মাঠ। আমরা এখানেই খেলবো। খেলার মাঠ দখল করে বাণিজ্যিক মার্কেট নির্মাণ চলবে না। এরকম সিদ্ধান্ত শিক্ষার্থীরা রুখে দেবে। ডিএসসিসি আমাদের মাঠ দখল করে যে পিলার দিয়েছে তা অনতিবিলম্বে সরাতে হবে।’

মানববন্ধন শেষে উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন শিক্ষার্থীরা।

এ ব্যাপারে ডিএসসিসির প্রকল্প পরিচালক (পিডি) আবুল হাশেম জানান, ‘ধূপখোলার মাঠগুলোর মালিক সিটি করপোরেশন। মাঠের চারপাশের দোকানগুলোকে একটি প্লাটফর্মে নিয়ে আসা হবে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবহৃত অংশ ও সিটি করপোরেশনের অংশে থাকা পুরাতন ভবন ভেঙে ছয়তলা ভবন নির্মাণ করে সেখানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা দোকানগুলোকে বরাদ্দ দেওয়া হবে। পাশাপাশি পুরো খেলার মাঠটি সংস্কার করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি অংশ ব্যবহার করার জন্য দেওয়া হবে।’

এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইমদাদুল হক বলেন, ‘আমরা মেয়রের সঙ্গে আলোচনা করে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করবো।’

জবির মাঠের গেটজগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মো. মোস্তফা কামাল বলেন, ‘গত বুধবার মাঠ পরিদর্শন করে সিটি করপোরেশনের সঙ্গে কথা বলেছি। আমরা ডিএসসিসি মেয়রের সঙ্গে এ নিয়ে বসবো। সেই সুযোগ না হলে চিঠির মাধ্যমে অভিযোগ জানাবো।’

উল্লেখ্য, ১৯৮৪ সালে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ ধূপখোলার তিনটি মাঠের একটি তৎকালীন জগন্নাথ কলেজকে খেলার মাঠ হিসেবে ব্যবহার করার মৌখিক অনুমতি দিয়েছিলেন। এরপর থেকে এটি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঠ হিসেবে পরিচিত। এই মাঠেই রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদের উপস্থিতিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়েছিল।