শুরুর আগেই ভরে যাচ্ছে হাট

এখনও সিটি করপোরেশনের অনুমতি পায়নি রাজধানীর অস্থায়ী কোরবানির পশুর হাটগুলো। তারপরও হাটের প্রতিটি স্থান ভরে গেছে কোরবানির জন্য নিয়ে আসা পশুতে। ঈদের দিনসহ পাঁচদিন পশু বিক্রির অনুমতি দেওয়া হবে। সেই হিসাবে আগামীকাল (১৭ জুলাই) থেকে শুরু হওয়ার কথা বেচাকেনা। কিন্তু তার আগেই লোকজনে সরব হাটগুলো।

পরিবেশ দেখে ব্যাপারিরা খুশি হলেও শঙ্কিত নগরবাসী। মহামারিতে হাটগুলোতে আদৌ স্বাস্থ্যবিধি মানা হবে কি-না তা নিয়ে উদ্বিগ্ন তারা। নগরীর বেশকটি অস্থায়ী পশুর হাট ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

সকালে শাহজাহানপুর রেলওয়ে কলোনির মাঠে দেখা গেছে হাটের প্রতিটি খুঁটির সঙ্গে গরু বাঁধা। ব্যাপারিরা তাদের পশুর পরিচর্যা করছেন। সে তুলনায় অবশ্য ক্রেতা ছিল না। দুয়েকজন ছিল পশুর দেখাশোনায়।

সকালে তীব্র রোদ থাকায় অনেককে ছাউনি বানিয়ে পশুকে ছায়ায় রাখার চেষ্টা করতে দেখা গেছে। হাটের বিভিন্ন স্থানে স্বাস্থ্যবিধি লেখা ব্যানার ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। মাঝে মধ্যে মাইকিংও করা হচ্ছে।

সাত বছরের ছেলেকে নিয়ে কলোনির মাঠে হাঁটতে এসেছিলেন মাইমুনা আক্তারা। তিনি বলেন, ‘আজ বাচ্চাকে গরু দেখাতে এসেছি। পছন্দও করে যাবো। কয়েকটি পছন্দ হয়েছে। পরে পরিবারের বাকিরা এসে দেখে কিনবো।’

ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু উপজেলার বাহাদুর গ্রামের ব্যাপারি আওশাদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘১৬টি গরু নিয়ে এসেছে। আজ মাঠে ঢুকিয়েছি। এখন মানুষ শুধু দাম জিজ্ঞাস করে ছবি তুলে চলে যায়। কেউ কিনছে না। আগামীকাল থেকে বেচাবিক্রির অনুমতি আছে। আজ যাতে কেউ বিক্রি করা না করে, সেটাও বলে গেছে ইজারাদার।’

তিনি আরও বলেন, ১৬টি গরুর মধ্যে ১০টি গরু তিনি কিনে এনেছেন। ‘গতবছরের তুলনায় এবছর প্রতিটি গরুতে ১০-১৫ হাজার টাকা বেশি দিয়ে কিনতে হয়েছে। যে কারণে এবার দাম একটু বেশি পড়বে।’

মহামারির মধ্যে পশু নিয়ে বেশ চিন্তিত আওশাদ। বললেন, ‘করোনা তো অনেক ক্ষতি করেছে। ব্যবসা-বাণিজ্যও বন্ধ। এবার কোরবানি দাতার সংখ্যাও কমতে পারে। তাই প্রকৃত দাম পাই কিনা সন্দেহ রয়েছে।’

পাবনার ব্যবসায়ী আরাফাত মিয়া বলেন, ‘সবে মাত্র গরু এনেছি। হাটের প্রতিটি বাঁশে গরু আছে। সে তুলনায় মানুষ নেই। মানুষ কিনবে শেষের দু’দিন। এখন শুধু দেখবে আর ছবি তুলবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি ১২টি গরু এনেছি। সব নিজের খামারের। সবচেয়ে বড়টার দাম তিন লাখ টাকা। আড়াই লাখ হলে ছেড়ে দেবো। তবে ৮০ হাজারের নিচে কোনও গরু নেই আমার।’

একই চিত্র ঢাকা উত্তর সিটির সাঈদনগর পশুর হাটের। পুরো হাট পশুতে ভরা। কিছু গরু বিক্রি হতেও দেখা গেছে এখানে। তবে ক্রেতার চাপ কম। তাই স্বাস্থ্যবিধি কিছুটা মানতে দেখা গেছে এই হাটে। প্রবেশপথে স্বেচ্চাসেবকরা ব্যস্ত ছিলেন মানুষকে সচেতন করতে।

জানতে চাইলে ঢাকা উত্তর সিটির প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা মো. মোজাম্মেল হক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আজ বেচা-বিক্রির অনুমতি নেই। ১৭ তারিখ থেকে শুরু হবে। স্বাস্থ্যবিধির বিষয়ে আমরা কঠোর অবস্থানে আছি। সবাইকে তা মেনে চলার জন্য সতর্ক করা হয়েছে।’

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা রাসেল সাবরিন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ডিএসসিসিতে এ বছর একটি স্থায়ীসহ ১১টি অস্থায়ী পশুর হাট বসবে। ৪৬টি শর্ত আছে। এগুলো মেনে হাট চালাতে হবে। এ ছাড়া হাটগুলোতে আমাদের ভ্রাম্যামাণ আদালতও থাকবেন। তারা নিয়মিত মনিটরিং করবেন।’