নির্ধারিত স্থান নেই দক্ষিণে, রাস্তায় কোরবানি!

প্রতিবছর রাজধানী ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় পশু জবাই দেওয়ার জন্য নির্ধারিত স্থান চিহ্নিত করে অস্থায়ী শেড তৈরি করে দেওয়া হলেও এবছর তা করা হয়নি। কাউন্সিলরদের আপত্তির কারণেই এ কার্যক্রম থেকে বেরিয়ে এসেছে দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। অপরদিকে উত্তর সিটি করপোরেশনের নির্ধারিত ৩০৭টি স্থানের অধিকাংশেই কোরবানি দিতে দেখা গেছে।  

বুধবার (২১ জুলাই) নগরীর বিভিন্ন স্থান ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

সকালে সেগুন বাগিচা এলাকায় দেখা গেছে, করপোরেশনের নির্ধারিত স্থান না পেয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা নিজেদের উদ্যোগে অস্থায়ী শেড তৈরি করেছেন। তবে তাতেও কোরবানি না দিয়ে সেটা গোয়াল ঘর হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। আর পশু জবাই দেওয়া হয়েছে রাস্তায়। এতে পুরো রাস্তা রক্তে বিবর্ণ হয়ে পড়েছে। রাস্তাগুলো দিয়ে চলাচলে অসুবিধা হচ্ছে। এ ছাড়া কোরবানি পশুর বর্জ্য নির্ধারিত স্থানে না ফেলে করপোরেশনের ড্রেনে ফেলতে দেখা গেছে।

জানতে চাইলে স্থানীয় কোরবানিদাতা হাজী ইলিয়াস হোসেন বলেন, প্রতিবছর সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে পশু জবাই দেওয়ার জন্য নির্ধারিত স্থান করে দেওয়া হয়। কিন্তু এবছর করা হয়নি। আমরা নিজেরাই নিজেদের উদ্যোগ পশু জবাই দেওয়ার স্থান নির্ধারণ করেছি।

কিন্তু নির্ধারিত স্থানে না দিয়ে রাস্তায় দেওয়া হলো কেন- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আসলে এত বেশি কোরবানিদাতা তাতে নির্ধারিত স্থানটি পশুতে ভরে গেছে। গত দুই-তিন দিন ধরে সেখানে গরুকে বেঁধে রাখা হয়েছে। সেখানে গরুর গোবর আর মলমূত্রে ভরে গেছে। যে কারণে রাস্তায় কোরবানি দিতে বাধ্য হয়েছি। সিটি করপোরেশন প্রতিটি এলাকায় যদি পানি ছিটানোর ব্যবস্থা রাখতো তাহলে রক্তগুলো ধুয়ে আমরা ড্রেনে দিয়ে দিতে পারতাম।

একই চিত্র দেখা গেছে ফকিরাপুলের কালবার্ড রোডে। ওই এলাকায়ও রাস্তায় কোরবানি দেওয়া হয়েছে। কোরবানি পশুর রক্তে পুরো সড়ক লাল হয়ে পড়ছে। রক্ত অপসারণে স্থানীয়দের কোনও উদ্যোগ দেখা যায়নি। সিটি করপোরেশনেরও কোনও কর্মীকে রাস্তায় দেখা যায়নি। তবে করপোরেশন জানিয়েছে দুপুর ২টার পর তারা রাস্তায় পরিচ্ছন্নতা কর্মী নামাবেন।

এ বিষয়ে দক্ষিণ সিটির জনসংযোগ কর্মকর্তা আবু নাছের বলেন, গত দুই বছর ধরে কোথাও কোনও নির্ধারিত স্থান করে দেওয়া হচ্ছে না। কারণ স্থানগুলোতে মানুষ যায় না। এতে অর্থের অপচয় হয়। বোর্ড সভায় কাউন্সিলররাও আপত্তি জানিয়েছেন। তাদের আপত্তির কারণে এবছরও আমরা কোনও নির্ধারিত স্থান করে দিইনি। তবে দুপুরের পর আমাদের প্রায় ১০ হাজার পরিচ্ছন্নতাকর্মী মাঠে নামবেন। তখন একযোগে সব ময়লা অপসারণ শুরু হবে।