দুপুর ২টায় বর্জ্য অপসারণ শুরু করবে দুই সিটি

দুপুর দুইটা থেকে কোরবানি পশুর বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রম শুরু করবে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন। উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম তার সংস্থার আওতাধীন অস্থায়ী কোরবানি পশুর হাট বাটারা (সাঈদ নগর) থেকে এ কার্যক্রম শুরু করবেন। অপরদিকে দক্ষিণ সিটির মেয়র আনুষ্ঠানিকভাবে এ কার্যক্রম শুরু না করলেও একই সময় থেকে তার কর্মীরা মাঠে নামবেন। এবছর দুই সিটি করপোরেশন সাড়ে ২১ হাজার কর্মী বর্জ্য অপসারণ কাজে নিযুক্ত থাকবে। সংস্থাটি সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেছেন, এবছর ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে অন্তর্ভুক্ত নতুন এলাকাসহ ৫৪ ওয়ার্ডে দুই লক্ষাধিক পশু কোরবানি হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যা গত বছরের তুলনায় কিছুটা কম। কোরবানির পশু জবাই করার জন্য করপোরেশনের পক্ষ থেকে এ বছর ৩০৭টি স্থানে পশু কোরবানির স্থান নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। রাস্তার ওপর কিংবা ড্রেনের পাশে কোরবানি না দিতে নগরবাসীর প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন ডিএনসিসি মেয়র। কোরবানির জন্য ২৫০ জন ইমাম ও ২৫০ জন মাংস প্রস্তুতকারীকে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম তদারকি ও বর্জ্য অপসারণ কাজের স্বার্থে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ওয়ার্ডভিত্তিক দায়িত্ব প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বর্জ্য অপসারণ কাজে ডিএনসিসির নিজস্ব দুই হাজার ৬৬৭ জন এবং অন্যান্য বেসরকারি ব্যবস্থাপনাসহ ১১ হাজার ৫০৮ জন পরিচ্ছন্নতাকর্মী কোরবানির বর্জ্য অপসারণে নিয়োজিত থাকবে। এ ছাড়া নিজস্ব বর্জ্যবাহী ট্রাক, ভারী যন্ত্রপাতি, ওয়াটার বাউজারের পাশাপাশি আউটসোর্সিং হতে অতিরিক্ত গাড়ি নিয়োজিত করা হবে। বর্জ্য পরিবহনে প্রয়োজনীয় যান-যন্ত্রপাতি নিয়োজিত করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে ঈদের পূর্বের দিন থেকে ঈদের পরবর্তী ২ দিন নিরবচ্ছিন্নভাবে বর্জ্য অপসারণের জন্য বর্জ্যবাহী ড্রাম্প ট্রাক, খোলা ট্রাক,ভারী যান-যন্ত্রপাতি, পানির গাড়ি, বেসরকারি এবং ভাড়ায় পিকআপ ভ্যানসহ ৪৯৩টি গাড়ি নিয়োজিত থাকবে।

অপরদিকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন জানিয়েছে, কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণ তদারকিতে ১০টি টিম গঠন করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ডিএসসিসি। পাশাপাশি একটি কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষও স্থাপন করা হয়েছে। বুধবার দুপুর ২টা হতে ২৪ জুলাই দুপুর ২টা পর্যন্ত দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওতাধীন এলাকা ও পশুর হাটগুলোর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সরেজমিন মাঠ পর্যায়ে তদারকির জন্য গঠিত টিমগুলো কাজ করবে। আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তাদের নেতৃত্বে করপোরেশনের বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তা কর্মচারীদের সমন্বয়ে এই টিমগুলো গঠন করা হয়েছে।

এ ছাড়াও করপোরেশনের শীতলক্ষ্যা হলে কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রম সচিত্র তদারকির জন্য একটি কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষে স্থাপন করা হয়েছে। করপোরেশনের আওতাধীন যে কোন নাগরিক তার নিজ এলাকায় সৃষ্ট বর্জ্য সম্পর্কিত তথ্যাদি প্রেরণ বা পশুর বর্জ্য অপসারণ সম্পর্কিত সুরাহার জন্য কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ০১৭০৯৯০০৮৮৮ নম্বরে ফোন করে জানাতে পারবেন। কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষে করপোরেশনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ তিন শিফটে ১৮ জুলাই দুপুর ২টা হতে ২৪ জুলাই দুপুর ২টা পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করবেন। নিয়ন্ত্রণ কক্ষের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মাঠ পর্যায়ে চলমান বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রম তদারকি করবেন।

পাশাপাশি ৯০টি খোলা ট্রাক, ৫৩টি কম্পেক্টর, ১২টি পানির পানির গাড়ি, ১০২টি ডাম্প ট্রাক, ১৪টি পে-লোডার, ৮১টি কন্টেইনার ক্যারিয়ার, ৯টি টায়ার ডোজার, ২টি ট্রেলার, ৯টি স্কিড লোডারসহ প্রায় পৌনে ৪০০ যান-যন্ত্রপাতি মাঠ পর্যায়ে বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রমে নিযুক্ত থাকবে।  

এ ছাড়াও নিয়মিত পাঁচ হাজার কর্মীর পাশাপাশি অতিরিক্ত আরও চার হাজার ৯৯০ জন কর্মী কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণে নিযুক্ত থাকবে। পাশাপাশি ঈদ উপলক্ষে ইতোমধ্যে প্রতি কাউন্সিলরকে ১ হাজার করে এবং আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তাদেরকে ১ হাজার ৫০০টি পরিবেশবান্ধব থলে প্রদান করা হয়েছে। এসব থলে যারা কোরবানি করবেন তাদের মাঝে বিতরণ করা হবে। কোরবানির পশুর বর্জ্য সেসব থলের মধ্যে ভরে তা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে করপোরেশনের নির্ধারিত ব্যক্তিবর্গের কাছে হস্তান্তর করবেন। পরিবেশ সুরক্ষা ও দূষণমুক্ত রাখতে ৩০ টন ব্লিচিং পাউডার ও এক হাজার ৮০০ লিটার তরল জীবাণুনাশক ছিটানো হবে।