তিন লেন সড়কের দুই লেনেই পার্কিং!

রাজধানীর কাটাবন থেকে সার্ক ফোয়ারা পর্যন্ত সড়কটির দুই পাশে তিনটি করে ছয়টি লেন। পরিবাগ মসজিদ থেকে বাংলামোটর লিংকরোড পর্যন্ত দুই পাশে দুটি করে চারটি লেন। কিন্তু দুটি সড়কের মাত্র একটি লেন দিয়েই যানবাহন চলতে পারে কোনোমতে। কখনও সেটাও আটকে যায়। স্থানয়ীরা বলছেন, রিকশাসহ বিভিন্ন পণ্যবাহী ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান অবৈধভাবে পার্কিং করে থাকে এ লেনে। দিনের বেলায় ওরা মালামালও ওঠা-নামা করায় বলে এমনটা ঘটছে। যে কারণে সড়ক দুটোতে যানবাহন পার হতে লেগে যায় এক দেড়-ঘণ্টা।

কর্মব্যস্ত দিনে সড়ক দুটোতে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, যেখানে-সেখানে পার্কিং আর উল্টোপথে রিকশা চলাচলের কারণে ভয়াবহ যানজট। এ সময় আটকে থাকা গাড়িগুলোর মোড় পার হতে লেগেছে দেড় ঘণ্টার মতো।

রবিবার সকালে কাটাবন থেকে রিকশা নিয়ে কাওরানবাজার সার্ক ফোয়ারায় আসেন বেসরকরি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ইসমাইল হোসেন। তিনি বলেন, একদিকে ছোট রাস্তা, অন্যদিকে অর্ধেকের বেশিজুড়ে পার্কিং। রিকশা দাঁড়িয়ে থাকে যেখানে-সেখানে।

240861948_844069909644366_7017340746178415817_nআশপাশের বিভিন্ন দোকানের মালামাল লোড-আনলোড করতে গিয়ে ট্রাক বা কাভার্ড ভ্যানগুলোও নিজেদের মতো পার্কিং করে রাখে।

রাসেল রহমান নামের এক পথচারী বলেন, বাংলামোটর লিংকরোড থেকে কাঁঠালবাগান আসতে রিকশায় উঠলাম। কিছু দূর যেতে না যেতেই বাধ্য হয়ে নেমে হাঁটা শুরু করি।

পরিবাগ মসজিদ থেকে বাংলামোটর লিংকরোড সড়কটির অবস্থাও একই। এখানে রিকশা ও কাভার্ড ভ্যান পার্কিং করা থাকে সবসময়ই। নামমাত্র ফুটপাত থাকলেও তা টাইলস ব্যবসায়ীদের দখলে। রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকে মালামাল লোড-আনলোডের ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান। দিনের পুরো সময়ই সড়কটিতে যানজট লেগে থাকে।

জানতে চাইলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের অঞ্চল ১-এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মেরীনা নাজনীন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এদের কেউ আইন বা নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা করে না। আমি ভ্যানচালক, দোকানিসহ এলাকার অনেককে বলেছি এভাবে পার্কিং করা যাবে না। কেউ কথা রাখে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘যেহেতু মাত্র লকডাউন শেষ হলো, আমরা নিয়মিত অভিযান আবারও শুরু করবো।  ট্রেড লাইসেন্স দেওয়ার সময় শর্ত দিয়ে দেবো। এখন জরিমানা আদায়ে আমাদের কিছুটা নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। কারণ লকডাউনে তারা কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ কাজে পুলিশের সহযোগিতাও পাই না। তারা নিয়মিত টহল দিলে যত্রতত্র যানবাহন রাখা সম্ভব হতো না।’

240881713_375068210779915_6864038957625915483_nএদিকে বাংলামোটর থেকে মগবাজার রোডের দুই পাশেই সড়কে পার্কিং করে বিভিন্ন ধরনের গাড়ি মেরামতের দোকান গড়ে উঠেছে। এসব সড়কে পার্কিং করেই ব্যক্তিগত গাড়ি ও মোটরসাইকেল মেরামত করা হচ্ছে। ফ্লাইওভার ব্যবহারের সুবিধার কারণে সড়কটিতে যানবাহনের চাপ থাকে। যে কারণে যানজট এখানকারও নিত্যসঙ্গী।

রমনা ট্রাফিক বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার জয়দেব চৌধুরী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘মগবাজার থেকে বাংলামোটর পর্যন্ত প্রতিনিয়ত রেকারিং করি। ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা মগবাজার মোড় এবং বাংলামোটর মোড়ে থাকে। তারা আশপাশে নজর রাখে। মোবাইল টিমের মাধ্যমে অভিযানও চলে।’

মগবাজার বাংলামোটর এলাকায় গাড়ি রাস্তায় রেখে মেরামত করা হয়। এ বিষয়ে কী ধরনের কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ব্যবসা পরিচালনার জন্য সিটি করপোরেশন লাইসেন্স দেয়। এবিষয়ে সিটি করপোরেশনকে এগিয়ে আসতে হবে। আমরা শুধু আইনানুগ ব্যবস্থা নিয়ে থাকি।’