ঢাকার টিকা খেয়েছেন অন্য জেলার মানুষও

‘ভাই, টিকা খেয়েছেন? কলেরার টিকা। খেলে কোনও সমস্যা হবে না। এই! ওনার নাম লেখো। আজকেই শেষ করতে হবে।’

এভাবেই হাঁকডাক দিয়ে কমলাপুর রেল স্টেশন সংলগ্ন ফুটওভার ব্রিজে ভ্রাম্যমাণ তিনটি বুথের মাধ্যমে পথচারীদের খাওয়ানো হচ্ছে কলেরার টিকা। ওই পথচারীদের অনেকেই বাইরে থেকে রাজধানীতে এসেছিলেন যার যার কাজে।

স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, এ বছরে ঢাকায় কলেরার রোগী বেড়ে যাওয়ায় সরকার কলেরা প্রবণ এলাকা যাত্রাবাড়ী, সবুজবাগ, মিরপুর, মোহাম্মদপুর ও দক্ষিণখান এলাকার মানুষকে টিকা খাওয়ানো শুরু করেছে ২৬ জুন থেকে। আজ শনিবার (২ জুলাই) এ কার্যক্রম শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।

পাঁচটি এলাকার ৩০ লাখ মানুষকে এ টিকার আওতায় আনতে কার্যক্রমটি নেওয়া হয়েছিল বলে জানান আইসিডিডিআরবির টিকাদান প্রকল্পের জ্যেষ্ঠ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. আশরাফ।

একটি বুথে কিছুক্ষণ থেকে দেখা গেছে, শুধু একটি হলুদ কার্ডে নাম ও বয়স লিখেই খাইয়ে দেওয়া হচ্ছে টিকা। এলাকা জিজ্ঞেস না করেই লিখে দেওয়া হচ্ছে সবুজবাগ এবং গণহারে ওয়ার্ড লেখা হচ্ছে ৬।

জানা গেছে, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ৬ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর দুটি বুথ ও বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির ঢাকা সিটি কার্যালয় বসিয়েছে আরেকটি বুথ।

রেড ক্রিসেন্টের বুথে টিকা দেওয়া হয় মো. জলিলকে (৪৩)। তার এলাকার জায়গায় লেখা হয় সবুজবাগ। জিজ্ঞেস করলে জলিল জানান, তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে এসেছেন।

টিকাদানকারী স্বেচ্ছাসেবক নিজেকে জে এ মুন্না পরিচয় দিয়ে বলেন, ‘এটা যে কেউ খেতে পারবে। কোনও সমস্যা নেই।’

এলাকার জায়গায় সবুজবাগ লেখার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এ জায়গা থেকে টিকা নেওয়া হচ্ছে বলে এ নাম লেখা হচ্ছে।’

স্বেচ্ছাসেবকরা বলেন, এই কার্ড দেখিয়ে অন্য কোথাও থেকে ১৪ দিন পর দ্বিতীয় ডোজ খেয়ে নেবেন। ১ থেকে শুরু করে যেকোনও বয়সীরা এটা খেতে পারবে।

কেন বাইরের মানুষকে খাওয়ানো হচ্ছে প্রশ্নে এক স্বেচ্ছাসেবক বলেন, ‘আজকেই টিকার শেষ দিন। অনেক টিকা বেঁচে গেছে। দামি টিকা নষ্ট হয়ে যাবে। আমাদেরও টার্গেট আছে। তাই সবাইকেই খাওয়াচ্ছি।’

এভাবে বাইরের মানুষকে টিকা খাওয়ালে সরকারে লক্ষ্য পূরণ হবে কিনা জানতে চাইলে ডা. আশরাফ বলেন, ‘আমরা সারাদেশেই এ টিকা খাওয়াবো। আপাতত ঢাকায় ৩০ লাখ মানুষকে খাওয়াবো। বাইরের কেউ খেলেও সমস্যা নাই।’