জিয়া ১৩ আগস্ট রেকি করতে এসেছিলেন: মেয়র তাপস

বাবা শেখ ফজলুল হক মণির সঙ্গে সাক্ষাতের ছলে ১৯৭৫ সালের ১৩ আগস্ট জিয়াউর রহমান হত্যাকাণ্ডের রেকি করতে বাসায় এসেছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের  মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।

বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) সন্ধ্যায় জহির রায়হান সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে গেন্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে ‘জাতীয় শোক দিবস-২০২২’ উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান আলোচকের বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

মেয়র শেখ তাপস বলেন, ‘১৯৭৫ সালের ১৩  আগস্ট খুনি জিয়াউর রহমান আমাদের বাসায় এসেছিলেন। সেদিন দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করে তিনি বাবার সঙ্গে দেখা করে গেছেন। সেদিন আমাদের বাসায় জিয়াউর রহমানের আসার মূল উদ্দেশ্য ছিল— এই হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে আমাদের কাছে কোনও তথ্য আছে কিনা, তা  অনুমান করা। আমরা কোনও কিছু জানি নাকি, বাসার পরিস্থিতি কী, আশপাশের অবস্থা কী? এসব রেকি করার জন্যই সেদিন খুনি জিয়া নিজেই সশরীরে আমাদের বাসায় এসেছিলেন।’

নেপথ্যে থেকে কেবল হত্যাকাণ্ড ঘটানোই নয়, খুনিদের রক্ষা করাও জিয়াউর রহমানের মূল ভূমিকা ছিল উল্লেখ করে তাপস বলেন, ‘জিয়াউর রহমানের মূল কার্যক্রমই ছিল নেপথ্য থেকে এই হত্যাকাণ্ড সামাল দেওয়া এবং সেই খুনিদের বাঁচানো। কেউ যেন সেই খুনিদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা না নিতে পারে এবং তাদের যে মূল উদ্দেশ্য, তা যেন কোনোভাবেই বাধাগ্রস্ত না হয়, সেটা নিশ্চিত করা। সেটাই তিনি সুচারুভাবে সম্পন্ন করেছেন।’

ডিএসসিসি মেয়র বলেন, ’১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডের পর যারা এতে বাধা দিতে চেয়েছিল, প্রতিঘাত করতে চেয়েছিল, প্রতিরোধ গড়ে তুলতে চেয়েছিল— কর্নেল নুরুদ্দীন ও শাফায়াত জামিলকে আটক করে কর্নেল রশিদ সেদিন জিয়াউর রহমানের কাছে নিয়ে গিয়েছিল। খুনের পরবর্তী ঘটনা আরও প্রমাণ করে যে, জিয়াউর রহমান তাদের আস্থার জায়গা ছিল। সাধারণ মানুষের কিংবা সেনাবাহিনীর মধ্যকার যেকোনও ধরনের প্রতিবাদ, প্রতিরোধ এবং প্রতিহত করার যেকোনও প্রচেষ্টা সেদিন জিয়াউর রহমান সামাল দিয়েছিলেন। সুতরাং, এসব তথ্য-উপাত্ত প্রমাণ করে যে, ১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ডে খুনি জিয়া ওতোপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন।’        

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষি মন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর খুনিরা আজও  ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। তাই মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শক্তি জামায়াত-বিএনপির সব ষড়যন্ত্র প্রতিরোধ করতে সবাইকে শপথ নিতে হবে।’

ক্ষমতায় গেলে আওয়ামী লীগের বিচার করার যে বক্তব্য বিএনপি মহাসচিব রাখছেন, তার জবাবে ড. রাজ্জাক বলেন, ‘অপকর্মের জন্য আপনাদের নেতা তারেক জিয়ার বিচার হয়েছে। শেখ হাসিনা এ দেশের মাটিতে বঙ্গবন্ধুর খুনি ও রাজাকারদের বিচার করেছে। তেমনই আপনাদের সব অন্যায়েরও বিচার হবে।’

আগামী নির্বাচনে আসবে না বলে বিএনপির হুঁশিয়ারির জবাবে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘নির্বাচনে অংশ না নিয়ে হরতাল, জ্বালাও পোড়াও আর করতে দেওয়া হবে না। প্রয়োজনে তাদের অপকর্মের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সাহায্য করবেন।’

গেন্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৪৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শহিদ উল্লাহ মিনুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু আহম্মেদ মন্নাফী।