রাজধানীর বস্তিতে বসবাস করছে ৪৪ শতাংশের বেশি মানুষ : ইকবাল হাবিব

বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য বিশিষ্ট নগর ও পরিবেশবিদ স্থপতি ইকবাল হাবিব বলেছেন, ‌‘সবচেয়ে বেশি বঞ্চনার শিকার এই শহরের অধিকাংশ মানুষ। রাজধানীর বস্তিতে ৪৪ শতাংশের বেশি মানুষ বসবাস করে।’

রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) সংশোধিত ডিটেইলড এরিয়া প্ল্যান (ড্যাপ) নিয়ে এডিটরস গিল্ড বাংলাদেশের আয়োজনে ‘ড্যাপ বিতর্ক’ শীর্ষক গোলটেবিলে তিনি এ কথা জানান। শনিবার (১ অক্টোবর) রাজধানীর বনানীর ঢাকা গ্যালারিতে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকটি সরাসরি সম্প্রচার করছে বেসরকারি টেলিভিশন একাত্তর টেলিভিশন।

ইকবাল হাবিব বলেন, ‘এই শহরের অধিকাংশ মানুষ আবাসনের সমাধান ছাড়াই বসবাস করছে। রাজধানীর বস্তিতে বসবাস করে ৪৪ শতাংশের বেশি মানুষ। তারা প্রতি বর্গফুটে ভাড়া দেয় ৪৪ থেকে ৪৮ টাকা। আর ধনী মানুষ ধানমন্ডিতে ভাড়া দেয় ২৮ টাকার মতো। গুলশান ও বনানীতে ৩০ থেকে ৩২ টাকা। এই অসমতার সমাধান ড্যাপে থাকতে হবে। দরিদ্র মানুষের আবাসন না হলে এটি (ড্যাপ) কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।

তবে ড্যাপের পক্ষ থেকে অনুষ্ঠানে জানানো হয়েছে, ২০ শতাংশ মানুষ বস্তিতে বসবাস করে।

ড্যাপের তথ্য তুলে ধরে ইকবাল হাবিব বলেন, ‘সেন্ট্রাল ঢাকায় একতলা ভবন ৬৮ শতাংশ। ২ থেকে ৫ তলা ২৫ শতাংশ। আর ৬ তলার ওপরে আছে ৮ শতাংশের কাছাকাছি। রাজউক বলছে, ৮২ শতাংশ ভবন অননুমোদিত। পুরোপুরি নিয়ম-শৃঙ্খলার মধ্যে রয়েছে ৫ শতাংশ বাড়ি। প্রতিবছর বিল্ডিং হয় ৯৫ হাজার। এর মধ্যে ৪ হাজার ১৭৬টির অনুমোদন হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘কিছুদিন আগে রাজউকের চেয়ারম্যান বললেন, ৮ ফুট, ১০ ফুট রাস্তার কাছে উঁচু উঁচু ভবন হচ্ছে। কিন্তু ইমারত নির্মাণ বিধিমালা অনুযায়ী ২০ ফুট রাস্তা ছাড়া ৬ তলার বেশি বাড়ি বানানো যাবে না। ২০ ফুটের কম হলে দুই থেকে চার তলার ওপর বানানো যাবে না।’

তিনি রাজউককে উদ্দেশ করে বলেন, ‘উনারা (রাজউক) ৫ শতাংশ অনুমোদন দিচ্ছেন আর ৯৫ শতাংশ হতে দিচ্ছেন। এই সংস্থা যদি আমাকে শেখায় ধ্বংস হয়ে গেছে ঢাকা শহর, সবাইকে আমরা দোতলা ও চারতলার মধ্যে রেখে দেব। অন্যায় করলেন আপনি। সেটা ছাড়ের জন্য ক্ষমা-টমা কিছু চান। ব্রিটিশদের মতো সব শোষণ করে এখন বলছেন আমি দান করতে পারবো না।’ গুলশান-বানানীর সঙ্গে অনুন্নত এলাকার বৈষম্য তুলে ধরেন ইকবাল হাবিব।

এডিটরস গিল্ডের সভাপতি মোজাম্মেল বাবুর সঞ্চালনায় বৈঠকে অংশ নেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম।

আলোচক হিসেবে আরও যুক্ত ছিলেন রাজউকের নগর পরিকল্পনাবিদ ও ড্যাপ প্রকল্পের পরিচালক মো. আশরাফুল ইসলাম, স্থপতি গোলাম নাসির, স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন, নগরবিদ আদিলুর রহমান খান, স্থপতি ইকবাল হাবিব, জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মনজুর আহমেদ, বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী রিজওয়ানা হাসান এবং আবাসন ব্যবসায়ীদের সংগঠন রিহ্যাবের সহসভাপতি সোহেল রানা।