দাম বেড়েছে রসুন ডিম ও ব্রয়লার মুরগির

আমদানি করা নতুন রসুনের দাম কেজিতে বেড়েছে ৩০ টাকা। রাজধানীতে ব্যবসায়ীরা গত সপ্তাহে ১৩০ টাকা কেজির রসুন এই সপ্তাহে বিক্রি করছেন ১৬০ টাকা দরে। ডিমের হালিতে দাম বেড়েছে তিন থেকে চার টাকা। ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে বেড়েছে ৩০ টাকা। ক্রেতারা বলছেন, পবিত্র রমজান মাস যত ঘনিয়ে আসছে, জিনিসপত্রের দাম ততই বাড়ছে।

শুক্রবার (৩ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেল, বাজারে এখন প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ১৮৫ টাকা দরে। গত সপ্তাহে এই মুরগির দাম ছিল ১৫০ থেকে ১৫৫ টাকা কেজি। আর সোনালি মুরগির দাম প্রতি কেজি ৩০০ থেকে ৩২০ টাকা পর্যন্ত।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, কাঁচামালের দাম বেড়ে যাওয়ায় মুরগির খাবারের দামও বেড়েছে। ফলে মুরগির দামও বেড়ে গেছে।

জানা গেছে, গত বছরের আগস্টের পর থেকে দফায় দফায় ফিডের দাম বাড়ার কারণে অনেক খামারি খামার বন্ধ করে দিয়েছেন। এতে মুরগির সংকট দেখা দেওয়ায় ব্রয়লারসহ সব ধরনের মুরগির দাম বেড়ে গেছে।

এদিকে ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকা, যা আগে ছিল ১২৫ টাকা।

সরকারি বিপণন সংস্থা টিসিবির তথ্য অনুযায়ী, গত এক সপ্তাহে ডিমের দাম হালিতে বেড়েছে তিন শতাংশের বেশি। টিসিবির হিসাবে, গত সপ্তাহে ফার্মের ডিম ৪৫ টাকা হালি বিক্রি হলেও এই সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ৪৭ টাকা হালি। কারওয়ান বাজার, মালিবাগ ও রামপুরা বাজার ঘুরেও ফার্মের ডিমের বাড়তি দামের তথ্য পাওয়া গেছে।

কারওয়ান বাজারের বিক্রেতারা জানান, সরবরাহের সংকট না থাকলেও আড়তে ডিমের দাম বাড়ছে। কোথাও কোথাও ডিম ৫০ টাকা হালি বিক্রি হতে দেখা গেছে। এ ছাড়া বাজারভেদে হাঁসের ডিমের হালি বিক্রি হচ্ছে ৭৫ থেকে ৮০ টাকা।

এদিকে ব্যবসায়ীরা আমদানি করা শুকনা মরিচ বিক্রি করছেন ৬৫০ টাকা কেজি দরে। তারা বলছেন, আগে যে শুকনো মরিচ প্রতি কেজি বিক্রি হতো ১০০ থেকে ১৫০ টাকায়, তা এখন ৬০০ টাকা ছাড়িয়েছে। আমদানি কমে যাওয়ার পাশাপাশি উৎপাদন সংকটে পণ্যটির রেকর্ড পরিমাণ দাম বেড়েছে। আসন্ন রমজানের আগে সরবরাহ না বাড়লে দাম আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা ব্যবসায়ীদের।

চিনির বাজার এখনও উত্তপ্ত রয়েছে। প্রতি কেজি চিনি ১২০ টাকা। টিসিবি বলছে, গত এক বছরে দেশে আদার দাম মানভেদে ৫০ থেকে ১১০ শতাংশ, রসুনের দাম ৪৫ থেকে ১২৭ শতাংশ এবং শুকনো মরিচের দাম ৭৫ থেকে ১৫২ শতাংশ হয়েছিল।

বাজারভেদে সরু মিনিকেট চাল ৬৮ থেকে ৭৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। মাঝারি মানের বিআর২৮ বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৬২ টাকা। ভালো মানের নাজিরশাইল চালের কেজি ৭৫ থেকে ৮৫ টাকা। আর মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৪ থেকে ৫৫ টাকা কেজি।

অস্বস্তি আছে শীতের সবজিতেও। প্রায় প্রতিটি পণ্য বিক্রি হচ্ছে আগের থেকে ৮ থেকে ১০ টাকা বেশিতে। কারণ হিসেবে ব্যবসায়ীরা সরবরাহ ঘাটতির কথা বললেও বাস্তবে তেমনটি দেখা যায়নি। এক কেজি বেগুন ৮০ টাকা। লম্বা বেগুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়। মুলার কেজি এখনও ৩৫ টাকা। ফুলকপি ও বাঁধাকপি বিক্রি হচ্ছে প্রতি পিস ৪০ থেকে ৫০ টাকায়। এ ছাড়া করলার কেজি ৬০ থেকে ৭০, শসা ৫০ থেকে ৬০, টমেটো ৩০ থেকে ৫০, চিচিঙ্গা ৬০ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।

মাছের বাজারও চড়া। শুক্রবার বাজারে বোয়াল মাছ বিক্রি হচ্ছে ৫৫০ থেকে ৬৫০ টাকা কেজি। এ ছাড়া কাতল মাছ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়, তেলাপিয়া ২২০ টাকায়, পাবদা ৪৫০ টাকা, মলা ৩৬০ টাকা, শোল ৭০০ টাকা, শিং মাছ ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা, পাঙাশ ১৮০ টাকা, কই ২৬০ টাকা, টেংরা ছোট ৫০০ এবং বড় ৬৫০ টাকা, রুই ২৬০ থেকে ২৮০ টাকা, চিংড়ি ৬০০ এবং গলদা চিংড়ি ৭০০ টাকা।