ডলুছড়ায় সামাজিক বনায়ন প্রকল্প না নেওয়ার আহ্বান বিশিষ্ট নাগরিকদের

কুলাউড়া উপজেলার ডলুছড়া খাসিয়া পুঞ্জির খাসিয়াসহ ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মানবাধিকার লংঘন যেন না হয় এবং প্রাকৃতিক বন ধ্বংস করে সামাজিক বনায়নের প্রকল্প গ্রহণ না করার আহ্বান জানিয়ে দেশের ১৩ জন বিশিষ্ট নাগরিক চিঠি দিয়েছেন। সিলেট বিভাগীয় কমিশনার (অতিরিক্ত সচিব) মো. খলিলুর রহমানের কাছে দেওয়া চিঠির মাধ্যমে তারা এই আহ্বান জানিয়েছেন।

রবিবার (৩ অক্টোবর) বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

১৩ জনের মধ্যে আছেন বাপা’র সভাপতি সুলতানা কামাল, নিজেরা করি’র সমন্বয়কারী খুশী কবির, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত, প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি মেসবাহ কামাল, বেলার নির্বাহী পরিচালক সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, এএলআরডি’র নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা, জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের সাবেক সদস্য শারমীন মুরশিদ, বাপা’র সাধারণ সম্পাদক শরীফ জামিল, বাংলাদেশ খ্রিষ্টান অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নির্মল রোজারিও, বাংলাদেশ আাদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং, আদিবাসী পরিবেশ রক্ষা আন্দোলনের আঞ্চলিক সমন্বয়ক ফাদার যোসেফ গমেজ এবং বাপা সিলেটের আব্দুল করিম কিম।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আগামীকাল রবিবার (৪ অক্টোবর) মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, বনবিভাগ ও সামাজিক বনায়নের তথাকথিত উপকারভোগীসহ ডলুছড়া খাসিয়া পুঞ্জির ভূমিতে গিয়ে জোরপূর্বক গাছের চারা রোপন করবেন মর্মে একটি সংবাদ জানা যায়। এজন্য দেশের ১৩ জন বিশিষ্ট পরিবেশবিদ, মানবাধিকারকর্মী, আইনবিদ, আদিবাসী নেতা ও সামাজিক নেতারা এ সংক্রান্ত একটি চিঠি আজ রবিবার (৩ অক্টোবর) দুপুরে একটি প্রতিনিধিদলের মাধ্যমে সিলেট বিভাগীয় কমিশনারের কাছে পাঠায়। চিঠিতে মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলার ডলুছড়া খাসিয়া পুঞ্জির খাসিয়াসহ অন্য ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠীর ওপর কোনও ধরনের মানবাধিকার লংঘন যেন না হয় এবং প্রাকৃতিক বন ধ্বংস করে যেন সামাজিক বনায়নের প্রকল্প গ্রহণ না করা হয় সে জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।

চিঠিতে তারা জানায়, খাসিয়ারা যুগ যুগ ধরে তাদের প্রথাগত ও ঐতিহ্যগত ভূমিতে বসবাস করে আসছেন। বন বিভাগ সামাজিক বনায়নের নীতিমালা উপেক্ষা করে খাসিয়াদের সাথে কোনও আলোচনা না করে উপকারভোগীদের এক তরফাভাবে তালিকা করেছে। এতে খাসিয়াদের সাথে উপকারভোগীদের মধ্যে সমস্যা ও জটিলতা তৈরি হচ্ছে। ইতোমধ্যে কিছু দুষ্কৃতিকারী খাসিয়াদের পানজুম ধ্বংস করেছে এবং আক্রমণ করেছে। এসব সমস্যা সমাধানের জন্য খাসিয়াদের নেতারা বন ও পরিবেশ মন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতও করেছেন। তাছাড়া এই ভূমি নিয়ে মৌলভীবাজার আদালতে নিষেধাজ্ঞা বহাল আছে। ডলুছড়া, বেলকুমা ও এর আশেপাশের অন্য পুঞ্জির নিরীহ খাসিয়াদের ওপর আক্রমনের ঘটনায় আমরা উদ্বেগ প্রকাশ করছি।

এ অবস্থায় বিশিষ্ট নাগরিকরা অনতিবিলম্বে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসনকে ডলুছড়া ও বেলকুমার খাসিয়া সম্প্রদায়ের পাশে থেকে তাদের জীবন ও পরিবেশের সুরক্ষা দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।