ছয় মাসের মধ্যে দখল ও দূষণমুক্ত হবে বালু নদী

রাজধানী ঢাকা শহরের উত্তর-পূর্ব এলাকা দিয়ে প্রবাহিত বালু নদীকে আগামী ছয় মাসের মধ্যে সম্পূর্ণ দখলমুক্ত ও দূষণমুক্ত করার পরিকল্পনা সাজানো হয়েছে। জাতীয় নদী কমিশন গঠিত কমিটি এই লক্ষ্যে কাজ শুরু করেছে। একইসঙ্গে শুরু হয়েছে উচ্ছেদ কার্যক্রম। অবৈধ দখলে থাকা দেশের বিভিন্ন নদী সম্পূর্ণ দখল ও দূষণমুক্ত করে নাব্যতা ফিরিয়ে আনার মডেল হিসেবে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে বালু নদীকে বেছে নেওয়া হয়েছে। নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় ও জাতীয় নদী কমিশন সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।

বালু নদীকে দখলমুক্ত ও দূষণমুক্ত করার পরিকল্পনা অনুযায়ী জাতীয় নদী কমিশনের সার্বক্ষণিক সদস্য কামরুন নাহান আহমেদকে প্রধান করে গত ১০ অক্টোবর ২১ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। নদী কমিশনের উপ-পরিচালক (পরিবীক্ষণ, ঢাকা বিভাগ) এই কমিটির সদস্য সচিবের দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়া সদস্য হিসেবে আছে নৌ-পরিবহন, পানি সম্পদ, স্থানীয় সরকার ও ভূমি মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি, ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদফতর, রাজউক, বিআইডব্লিউটিএ, পানি উন্নয়ন বোর্ড, ঢাকা উত্তর, দক্ষিণ, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুর সিটি করপোরেশন ও নৌ-পুলিশের প্রতিনিধি এবং ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুরের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের প্রতিনিধি। 

কমিটির সভাপতি কামরুন নাহার আহমেদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছি। কিছু প্রতিবেদন আমাদের হাতে এসেছে। গত ২৭ অক্টোবর আমরা বৈঠক করেছি। বিআইডব্লিউটিএ এ নিয়ে আগেই কাজ করছে। আমরা শিগগিরই বালু নদী এলাকা সরেজমিনে পরিদর্শনে যাবো। আমরা এই নদী দখলমুক্ত করতে মডেল হিসেবে নিয়েছি। আমরা এটি বাস্তবায়ন করবো। নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই এই নদী দখলমুক্ত দেখা যাবে।’

বালু নদীকে সম্পূর্ণভাবে দখল ও দূষণমুক্ত করা এবং নাব্যতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে গঠিত কমিটি একমাসের মধ্যে মহাপরিকল্পনা তৈরির পর সেই অনুযায়ী কার্যক্রম তদারকি এবং ছয় মাসের মধ্যে কার্যক্রম শেষ করে নদী কমিশনের চেয়ারম্যানকে জানাবে।

জানা গেছে, গত বছরের ডিসেম্বরে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে এ সংক্রান্ত একটি সুপারিশ আসে। কমিটির সভাপতি মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম বীরউত্তম নিজেই প্রস্তাবটি তোলেন। বৈঠকে ওই সুপারিশে বলা হয়, ‘আগামী চার থেকে ছয় মাসের লক্ষ্য নিয়ে দখল হয়ে যাওয়া নদীর মধ্য থেকে অন্তত একটি নদীর অবৈধ স্থাপনা সম্পূর্ণরূপে উচ্ছেদ ও সেটি দখলমুক্ত করে পুরনো অবস্থায় ফিরিয়ে এনে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে।’

জানা গেছে, বর্তমানে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের আওতায় বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, শীতলক্ষ্যা ও বালু নদী দখলমুক্ত, পিলার স্থাপন এবং ওয়াকওয়ে নির্মাণের একটি প্রকল্প চলমান আছে। এছাড়া ঢাকার চারপাশের নদী ও চট্টগ্রামের কর্ণফুলী দখলমুক্ত করতে ২০ বছর মেয়াদী একটি মহাপরিকল্পনা চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।