পরিবেশ-জীববৈচিত্র্য সুরক্ষায় ডিসিদের প্রতি আহ্বান

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী বলেছেন, দেশের পরিবেশ, প্রতিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় জেলা প্রশাসকদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। জেলাগুলো চলমান ব্যাপক উন্নয়নমূলক কার্যক্রমের মাধ্যমে যাতে দেশের পরিবেশ ও সীমিত প্রাকৃতিক সম্পদের অবক্ষয় না ঘটে, সে বিষয়ে জেলা প্রশাসকদের সার্বিক সহযোগিতা প্রদানের আহ্বান জানানো হয়েছে। 

মঙ্গলবার (৫ মার্চ) জেলা প্রশাসকদের সম্মেলনে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অধিবেশন শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে পরিবেশমন্ত্রী এসব কথা বলেন। এ সময় মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ, পরিবেশ অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. আবদুল হামিদ এবং বন অধিদফতরের প্রধান বন সংরক্ষক আমীর হোসাইন চৌধুরীসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

পরিবেশমন্ত্রী বলেন, জলমহাল ও জলাভূমি ভরাটের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসকদেরকে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে। পাহাড়-টিলা সংরক্ষণ ও পাহাড়ের ঢাল এবং পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণভাবে ঘরবাড়ি নির্মাণ বন্ধ করতে হবে।

মন্ত্রী বলেন, পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি সৃষ্টিকারী সব অবৈধ ইটভাটা বন্ধ করার পাশাপাশি ইতোমধ্যে বন্ধকৃত ইটভাটাগুলো যেন কোনোভাবেই পুনরায় চালু করতে না পারে— তার ব্যবস্থা করতে হবে। সরকারি কাজে শতভাগ ব্লক ইট ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং শিল্প-কারখানায় ইটিপি চালু রাখতে জেলা প্রশাসকদের মনিটরিং করার অনুরোধ জানানো হয়েছে।

সাবের চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক গ্রিন ফাইন্যান্সিং এর আওতায় ১০০০ কোটি টাকা তফসিলি ব্যাংকের মাধ্যমে উদ্যোক্তাদের মধ্যে পরিবেশবান্ধব টেকনোলজি ব্যবহারের জন্য ৫ শতাংশ হারে ঋণ প্রদান করছে। এক্ষেত্রে জেলা ঋণ কমিটি এবং জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির মাধ্যমে ইটভাটা মালিকদের বিষয়টি অবহিত করা ও ঋণ প্রদানের মাধ্যমে ব্লক ইট উৎপাদনে উৎসাহিত করতে হবে।

মন্ত্রী বলেন, বায়ুদূষণ রোধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে রাস্তা নির্মাণ, কনস্ট্রাকশন সামগ্রী, ইটভাটা, বর্জ্য ইত্যাদির মাধ্যমে বায়ুদূষণ রোধে জেলাভিত্তিক কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করতে হবে। লেড এসিড ব্যাটারি পুনঃপ্রক্রিয়াকরণ কার্যক্রম বন্ধে জেলা প্রশাসন কার্যকর ভূমিকা গ্রহণ করতে পারেন।

তিনি বলেন, প্লাস্টিকের দূষণ রোধ ও সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক বন্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। পরিবেশ, প্রতিবেশ, বন ও জীববৈচিত্র্য রক্ষা ও দূষণ রোধে ইনোভেটিভ আইডিয়া গ্রহণ ও বাস্তবায়নে জেলা প্রশাসকরা পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারেন। নিষিদ্ধ পলিথিন শপিং ব্যাগের ব্যবহার বন্ধে জেলা প্রশাসকরা কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেন। মাঠ পর্যায়ের সব সরকারি অফিসে সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধে উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারেন।

সাবের চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্টের চলমান ২৪৮টি প্রকল্প মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসকরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারেন।