নাসিমের মৃত্যুতে জাসদ সভাপতি-সা. সম্পাদকের শোক

মোহাম্মদ নাসিম (ছবি- সংগৃহীত)সাবেক মন্ত্রী, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও ১৪ দলের সমন্বয়ক মোহাম্মদ নাসিমের ইন্তেকালে জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু এবং সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার শোক প্রকাশ করেছেন। শনিবার (১৩ জুন) গণমাধ্যমে পাঠানো এক শোক বার্তায় তারা এ শোক প্রকাশ করেন।

শোক বার্তায় তারা বলেন, 'সামরিক শাসনবিরোধী গণতান্ত্রিক আন্দোলন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার আন্দোলনসহ প্রগতিশীল আন্দোলনে মোহাম্মদ নাসিমের অগ্রণী ভূমিকা রয়েছে। সন্ত্রাসী এরশাদ শিকদারকে গ্রেফতার-বিচার-শাস্তি, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের আত্মসমর্পণে বাধ্য করা, মোবাইল ফোনের একচেটিয়া ব্যবসায়কে উন্মুক্ত ও প্রতিযোগিতামূলক করে দেওয়ায় তার পদক্ষেপ চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।'

তারা আরও বলেন, 'মোহাম্মদ নাসিম গণতান্ত্রিক প্রগতিশীল শক্তির বৃহত্তর রাজনৈতিক ঐক্য গড়ে তোলা ও রক্ষার জন্য সর্বদা আন্তরিক ও সচেষ্ট ছিলেন। তার মৃত্যু ঐক্যবদ্ধ গণতান্ত্রিক আন্দোলনে অপরিসীম শূন্যতা সৃষ্টি করবে।'

উল্লেখ্য, খাদ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ নাসিম এমপি শনিবার (১৩ জুন) বেলা ১১টা ১০ মিনিটে রাজধানীর শ্যামলী বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায়  ইন্তেকাল করেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭২ বছর দুই মাস ১১দিন।

গত ১ জুন নিউমোনিয়াজনিত সমস্যা নিয়ে বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে ভর্তি করা হয় নাসিমকে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় করোনাভাইরাসের পরীক্ষা করা হলে ফল পজিটিভ আসে। তবে সম্প্রতি নাসিমের পরপর তিনটি করোনা টেস্টের ফল নেগেটিভ আসে। হাসপাতালটিতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ৫ জুন ভোরে তার স্ট্রোক হয়। সেদিনই ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নিউরো সার্জারি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. রাজিউল হকের নেতৃত্বে অস্ত্রোপচার হয়। এর আগেও তার একবার স্ট্রোক হয়েছিল। সব মিলিয়ে তার অবস্থা খুব সংকটাপন্ন ছিল।

রাজনৈতিক কারণে বহুবার কারাবরণকারী বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ মোহাম্মদ নাসিম সিরাজগঞ্জ-১ আসন হতে মোট ছয় বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে সফলতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন।

তার পিতা জাতীয় চার নেতার অন্যতম শহীদ ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী ১৯৭১ সালে মেহেরপুর জেলার বৈদ্যনাথতলায় গঠিত সরকারে অর্থ, শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর ২৩ আগস্ট তাঁকে ও অপর তিন জাতীয় নেতাকে গ্রেফতার  করা হয়। কারাগারে আটক অবস্থায় ৩ নভেম্বর ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলীকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।