ড্রয়ারবন্দি আসমার লাশে ছিল অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন

আসমা বেগমলন্ডনে খুন হওয়া তিন সন্তানের জননী বাংলাদেশি গৃহবধূ আসমা বেগমের শরীরে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। গত ১১ জানুয়ারি নিজ ঘরে খুন হন তিনি। খুনের অভিযোগ ওঠেছে আসমার স্বামীর বিরুদ্ধে। লাশ উদ্ধারের পর দুই দফা পোস্টমর্টেম শেষে মঙ্গলবার আসমা বেগমের (৩১) মরদেহ স্বজনদের হাতে হস্তান্তর করে পুলিশ।  বুধবার লন্ডনে তার জানাজা ও দাফন  অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার বাদ জোহর ইস্ট লন্ডন মসজিদে জানাজা শেষে গার্ডেন অব পিসে তাকে দাফন করা হয়।

আসমা বেগমের বোনের ছেলে বুধবার লন্ডন সময় রাতে বাংলা ট্রিবিউনের সঙ্গে আলাপকালে নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, তিনি খালা ও খালুর (আসমা ও তার স্বামী) সঙ্গে একই ফ্ল্যাটে থাকতেন। গত ১১ ফেব্রুয়ারি কাজ থেকে ফিরে খালাকে খুঁজে পাননি তিনি। পরে খালার ( নিহত আসমা বেগমের) বেডরুমের ওয়্যাড্রোবের নিচে খালার পা ঝুলতে দেখেন। তখন তিনি অ্যাম্বুলেন্স ও পুলিশে খবর দেন।

তিনি জানান, তার খালার মরদেহে, দাঁতের মাড়িসহ বিভিন্ন স্থানে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। আসমার স্বামী জালাল উদ্দীনের এটি দ্বিতীয় বিয়ে। আগের স্ত্রীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হয়ে যাওয়ার পর পর জালাল আসমাকে দেশ থেকে বিয়ে করে লন্ডনে নিয়ে আসেন।

নিহত আসমা বেগমের স্বজনরা অভিযোগ করেন, জালাল পেশাদার জুয়াড়ি ছিলেন। জুয়ার অর্থ জোগাতে সন্তানদের চাইল্ড বেনিফিটের টাকাও তিনি কেড়ে নিতেন স্ত্রীর কাছ থেকে। আসমা বিভিন্ন সময় স্বামীকে জুয়ার নেশা থেকে ফেরাতে বহু চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। তবে ঘটনার দিন ঠিক কী নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিরোধের সূত্রপাত হয় তা জানা যায়নি। তবে স্বজনরা জানিয়েছেন, ওই দিন (১১ জানুয়ারি) বেলা ২টা থেকে ৪টা পর্যন্ত আসমা ও তার স্বামী জালাল ঘরে ছিলেন।

এদিকে আদালত সূত্র জানায়, স্ত্রীকে খুনের দায়ে একমাত্র আসামি হিসেবে চার্জ গঠন করা হয়েছে জালালের বিরুদ্ধে। আসমার তিন সন্তানকে রাখা হয়েছে তাদের মামার জিম্মায়।

পপলারের সিটি আইসলেন্ড ওয়ের একটি কাউন্সিল ফ্ল্যাটে স্বামী-সন্তানদের নিয়ে বসবাস করতেন আসমা। তার বড় ছেলের বয়স দশ বছর। আর দুই জমজ শিশু কন্যা কেবল নার্সারিতে ভর্তি হয়েছে। আসমার গ্রামের বাড়ি সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার আটঘর গ্রামে।

উল্লেখ্য, গত ১১ জানুয়ারি বিকালে  এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। খুনের দায়ে গত ১২ জানুয়ারি জালাল উদ্দীনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ঘটনার পর থেকে পুলিশ ফ্ল্যাটটি থেকে বিভিন্ন আলামতও জব্দ করে।

আরও পড়ুন- লন্ড‌নে বাংলাদেশি গৃহবধূ হত্যায় অভিযুক্ত স্বামী, জিজ্ঞাসাবাদ শেষে কারাগারে প্রেরণ