আরব আমিরাতে অনুষ্ঠিত এসএসসি পরীক্ষাতেও ২০১৮ সালের প্রশ্ন!

আরব আমিরাতে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা (ছবি সংগৃহীত)জাতীয় শিক্ষাবোর্ডের অধীনে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুটি বাংলাদেশ স্কুলেও শুরু হওয়া এসএসসি পরীক্ষার প্রথমদিনে ২০১৮ সালের প্রশ্নপত্র সরবরাহ করার অভিযোগ উঠেছে। পরে বিষয়টি নজরে আনা হলে পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট পর প্রশ্নপত্র পাল্টে এবারের প্রশ্ন দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন পরীক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা।

এবার বাংলাদেশ দূতাবাস আবুধাবি ও দুবাই বাংলাদেশ কনস্যুলেটের তত্ত্বাবধানে পরীক্ষায় আমিরাতের রাজধানীস্থ শেখ খলিফা বিন জায়েদ বাংলাদেশ ইসলামিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজে ৩৯জন ও রাস আল খাইমা বাংলাদেশ ইংলিশ স্কুল অ্যান্ড কলেজে ২৭ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন।

পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকরা অভিযোগ করেন, ২০১৮ সালের এসএসসির প্রশ্নপত্র দিয়েই প্রথম ৩০ মিনিট পরীক্ষা দিতে হয়েছে শিক্ষার্থীদের। পরীক্ষা শেষে বিষয়টি জানা জানি হলে বাধে হট্টগোল।

পরীক্ষার্থীরা জানান, শুরুতে ২০১৮ সালের পুরাতন প্রশ্নপত্র দেওয়া হয়, ৩০ মিনিট পরীক্ষার সময় অতিবাহিত হলে প্রশ্ন পরিবর্তন করে পরীক্ষার্থীদের হাতে দেওয়া হয় ২০১৯ সালের নতুন প্রশ্নপত্র। অথচ অধ্যক্ষ ছাড়াও প্রথম দিনের পরীক্ষায় কেন্দ্র পরিদর্শক ছিলেন উপ-অধ্যক্ষ আবদুর রহিম ও মোখলেছুর রহমান, শিক্ষক আবদুল গণি ছিদ্দিকি ও মুহাম্মদ জাকির।

মারাত্মক এ ভুলের বিষয়টি স্বীকার করেছেন প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক মীর আনিসুল হাসান নিজেই। তিনি জানান, ‌‘পূর্বে কাগজের প্যাকেটে প্রশ্ন আসতো, এবার এলো ফয়েল প্যাকেটে করে। যে কারণে ভাইস প্রিন্সিপাল মোখলেছুর রহমান বুঝতে পারেননি। তিনি কাগজের প্যাকেটটি খুলে ২০১৮ সালের প্রশ্ন দিয়ে দেন। পরে বিষয়টি বুঝতে পেরে তারা পরিবর্তন করে ২০১৯ সালের প্রশ্ন দেন শিক্ষার্থীদের।’

কেন প্রশ্নপত্র না দেখে পরীক্ষার্থীদের দেওয়া হলো এমন প্রশ্নের জবাবে মীর আনিসুল হাসান বলেন, ‘প্রশ্নগুলো আমাদের দেখার দরকার ছিল, কিন্তু ভুল হয়ে গেছে।’

অন্যদিকে, প্রথম দিনের পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ভুল ছাড়াও পরীক্ষার্থীর হিসাবে ছিল গড়মিল এমনকি স্বজনপ্রীতিরও অভিযোগ উঠেছে। অধ্যক্ষের দেওয়া তথ্যে ৪২ জন পরীক্ষার্থীর কথা জানানো হলেও কেন্দ্রে দেখা মিলে ৩৯ জন পরীক্ষার্থীর। এছাড়া পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকরা অভিযোগ করেন, প্রশ্নপত্র ভুলের ঘটনায় পরীক্ষার্থীর ৩০ মিনিট সময় নষ্ট হলেও দূতাবাসের এক কর্মকর্তার ছেলে থেকে উত্তরপত্র নেওয়া হয় নির্ধারিত সময়ের ৩০ মিনিট পরে। কিন্তু বাকি শিক্ষার্থীদের কোনও বাড়তি সময় দেওয়া হয়নি।

এসময় দূতাবাসের পক্ষ থেকে কেন্দ্র পরিদর্শনে আসা রাজনৈতিক কাউন্সিলর শহিদুজ্জামান ফারুকী বলেন, প্রথমে বিষয়টি আমি শুনিনি পরে জানতে পেরে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্কুল কমিটির জিপি সদস্য, আমিরাত বাংলাদেশ সমিতির সভাপতি প্রকৌশলী মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, রাষ্ট্রদূত ইতোমধ্যে স্কুলের অধ্যক্ষ ও কমিটির সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন এবং ঘটনার পূর্ণ বিবরণ লিখিত আকারে রাষ্ট্রদূতের কাছে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।

রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ ইরানের সঙ্গে সাংবাদিকরা যোগাযোগ করলে তিনি সবকিছু জেনে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন।